ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আকিল জামান ইনু

চাপ থেকে মুক্তি

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২০ মার্চ ২০১৭

চাপ থেকে মুক্তি

গান আপনার গলার স্বর ভাল কিংবা খারাপ যাই হোক না কেন, গান গাইতে কোন লজ্জা পাবেন না। কারণ গলা খুলে গান গাইলে তা আপনার মানসিক চাপ অনেকাংশে কমে যাবে। হাসুন আপনি যতবার হাসবেন ততবারই আপনার দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। আর এর পাশাপাশি রক্ত প্রবাহও বাড়বে। ফলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ নতুন করে পুষ্টি পাবে। বিভিন্ন গবেষণাতে এ বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে যে, তখন মানসিক চাপও কমে যাবে অনেকাংশে। পোষা প্রাণী থাকলে সঙ্গ নিন পোষা প্রাণীর সঙ্গে থাকলে বা তার সঙ্গে খেলাধুলা করলে মানসিক চাপ অনেকাংশে কমে যায়। আর এ কারণে পোষা কুকুর, বিড়াল কিংবা অন্য কোন প্রাণী আমাদের শুধু আনন্দই দেয় না, তা দেহে হরমোনের মাত্রাতেও পরিবর্তন আনে। আর এতে সেরোটোনিন ও প্রোলেকটিন হরমোন নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। ফলে মানসিক চাপ কমে যায়। গোলমাল থেকে দূরে থাকুন সব সময় আপনি যদি গোলমালপূর্ণ স্থানে থাকেন তাহলে তা স্বাভাবিকভাবেই আপনার মনের চাপ অনেক বাড়িয়ে দেবে। আর এ কারণে আপনার উদ্বেগও বেড়ে যাবে। তাই আপনি যদি মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে চান তাহলে নিরিবিলি স্থান বেছে নিন। এ জন্য কর্মক্ষেত্রে যেমন নীরব স্থানে বসতে হবে তেমন বেডরুমে যেন বাইরের শব্দ না আসে সে জন্য মনোযোগী হতে হবে। বাড়ির কাজ করুন আপনার বাড়ির বিভিন্ন ধরনের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এ কাজগুলো আপনাকে আনন্দ দেবে। আর এ কারণে মানসিক চাপও কমে যাবে। জুস পান করুন জুস পান করলে মানসিক চাপ কমবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি আপনার মানসিক চাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। আর এ মানসিক চাপ কমানোর পেছনে কাজ করবে কর্টিসল হরমোন। হাঁটুন মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম একটি উপায় হলো হাঁটা। প্রকৃতির কাছাকাছি হাঁটলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে। হাঁটাহাঁটি হাড়ের জন্য ভাল। রিসার্চে দেখা গেছে মেনোপজ পরবর্তী মহিলাদের ক্ষেত্রে যারা দৈনিক প্রায় এক মাইলের মতো হাঁটেন বা এর চেয়ে কম দূরত্বে হাঁটতে অভ্যস্ত মহিলাদের চেয়ে তাদের দেহের হাড়ের গঠন অনেক বেশি দৃঢ় ও ঘন হয়। ডিপ্রেশনের লক্ষণগুলোকে উপশম করে হাঁটাহাঁটি। প্রতি দফায় ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচবার এভাবে ১২ সপ্তাহ হাঁটাহাঁটি করলে তা ডিপ্রেশনের লক্ষণ অনেকাংশে কমায়। ডিপ্রেশনের স্ট্যান্ডার্ড লিখিত প্রশ্নাবলী থেকে দেখা গেছে এটা ৪৭% পর্যন্ত কমে। হাঁটাহাঁটির ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ঝুঁকি কমে। মহিলাদের মধ্যে যারা সপ্তাহে সোয়া ঘণ্টা থেকে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত এলোমেলোভাবে হলেও হাঁটাহাঁটি করেন তাদের ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় মহিলাদের চেয়ে ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি ১৮% পর্যন্ত কমে যায়। অন্যান্য গবেষণা থেকে দেখা গেছে, মলাশয়ের ক্যান্সার (কোলন ক্যান্সার) প্রতিরোধেও হাঁটার ভূমিকা রয়েছে। ফিটনেস বাড়ায় হাঁটাহাঁটি। ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে কেবল তিনবার হাঁটাহাঁটি বেশ লক্ষণীয় মাত্রায় হৃৎপি- ও শ্বসনতন্ত্র সংক্রান্ত ফিটনেস বাড়ায়। অল্প পরিমাণে হাঁটাহাঁটিও আপনার ফিটনেস বাড়ায়। যারা খুব অলস ধরনের নারী তাদের জন্য পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্বল্প সময় ( ১০ মিনিট করে ৩ বার) এলোমেলো করে হাঁটাহাঁটি করলেও সেটা তাদের দেহের ফ্যাট কমানোর ক্ষেত্রে সমান উপকার করে যারা দিনে একবার আধাঘণ্টা করে হাঁটেন। শরীরবৃত্তীয় উন্নতি ঘটে হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হাঁটাহাঁটির ফলে ফিটনেস ও শরীরবৃত্তীয় কাজকর্মের উন্নতি ঘটে। বৃদ্ধদের দৈহিক নানা অক্ষমতা প্রতিরোধ করতেও হাঁটার জুড়ি নেই। গভীর শ্বাস মানসিক চাপ কমানোর একটি দারুণ উপায় হলো গভীর করে শ্বাস নেয়া। এটি নিয়মিত করতে পারলে মানসিক চাপ কমাতে ভূমিকা রাখে।
×