ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

রণজিৎ দাসের চিত্র প্রদর্শনী ‘জার্নি এ্যান্ড ইমেজেস’

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৪ মার্চ ২০১৭

রণজিৎ দাসের চিত্র প্রদর্শনী ‘জার্নি এ্যান্ড ইমেজেস’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতিনিয়ত ছুটে চলাই জীবনের ধর্ম। কখনও প্রয়োজনের তাগিদে, কখনও আবার পারিপার্শ্বিকতার কারণে। সেখানে যুক্ত হয় নতুন অভিজ্ঞতা। সামনে আসে নতুন দিগন্ত। রং ও রেখার আশ্রয়ে সে কথাই যেন বলেছে শিল্পীর প্রতিটি ক্যানভাস। জীবনের নানা পর্বের বিচিত্র অভিজ্ঞতার গল্প বোনা হয়েছে চিত্রপটে। সব মিলিয়ে রং-তুলির আঁচড়ে বর্ণিত হয়েছে নতুন পথে হেঁটে দৃশ্যকল্প। এ তো গেল নাগরিক জীবনের আখ্যান। গ্রামের মানুষটি যখন প্রবেশ করে শহরে সেখানে চেনা জগতটি ছাপিয়ে হাজির হয় অচেনা এক ভুবন। কাদা-মাটির গন্ধমাখা মানুষটিকে ধাবিত হতে নতুন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে। সেই পরিস্থিতি সহজাতভাবে ঠেলে দেয় পরিবর্তনের পথে। সেই বদলে যাওয়াটাও আরেক জার্নি। পরিস্থিতির কারণে পরিবর্তিত মানবজীবনের এমন নানা পর্ব উঠে এসেছে শিল্পী রণজিৎ দাসের চিত্রপটে। সেসব ছবি উত্তরার গ্যালারি কায়ায় চলছে এই চিত্রকর্মের প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘জার্নি এ্যান্ড ইমেজেস’। অজস্র পরিবর্তনের মাঝে ফেলে আসা গ্রামীণ জীবন বা ছেলেবেলার টুকরো টুকরো স্মৃতিগুলো রয়ে যায় অমলিন। আর সেসব কথাই যেন বারবার মনে করিয়ে দিয়েছে এই শিল্পীর ক্যানভাসগুলো। মমতাময়ী মায়ের মুখ, তরুণীর চুল বাঁধা, দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ, পাখি হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো গ্রাম্য মেয়ে, সন্তানের পাশে দাঁড়িয়ে বেড়ার ফাঁক দিয়ে মায়ের চাঁদ দেখার স্মৃতিÑএমন নানা বিষয় এসে জুড়ে গেছে চিত্রপটে। এসব ছবিতে শিল্পী স্মৃতিকাতর। অকৃত্রিম সেই জীবনের কথাই ফুটে উঠেছে শিল্পীর ক্যানভাসে। শিল্পী রণজিৎ দাস নিভৃতে অনবরত কাজ করে চলেছেন। দেশের গ-ি পেরিয়ে বিদেশেও তার কাজের সুনাম ছড়িয়েছে। সাধারণত তার কাজে ভরাট কম্পোজিশন দেখা যায়। তবে এ প্রদর্শনীর কিছু কিছু ছবিতে বিষয়কে বিস্তৃত করতে ছেড়েছেন অনেকটা স্পেস। প্রদর্শনীর চিত্রকর্ম প্রসঙ্গে শিল্পী বলেন, গ্রামের জীবনকে ছেড়ে এসে আমরা শহুরে নাগরিক। জীবনের এই ভ্রমণ নানা রকম অভিজ্ঞতা দেয়। তা কখনও মধুময় কখনও কঠিন, রূঢ়। শিল্প সৃজনে রণজিৎ দাস এগিয়েছেন নিরীক্ষার পথে। নিজেকে ভেঙেচুরে পা বাড়িয়েছেন নতুনের পানে। সেই সুবাদে সমসাময়িক জীবনের বাস্তব চিত্রের সঙ্গে মানুষের দ্বন্দ্বমুখর অবস্থান উদ্ভাসিত হয়েছে শিল্পীর রচিত শিল্পে। ৪২টি শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। এর মধ্যে রয়েছে ২৭টি পেইন্টিং। সবগুলো এ্যাক্রেলিক মাধ্যমে আঁকা। ড্রইং রয়েছে ১১টি। সেগুলোর মধ্যে দুটি চারকোলে আঁকা। চারটি চিত্রকর্ম চিত্রিত হয়েছে তেলরং মাধ্যমে। কবিতা লেখা এই শিল্পী নিজস্ব কবিতার চরণ ব্যবহার করেছেন কয়েক চিত্রকর্মে। ১১ মার্চ শুরু হওয়া এ প্রদর্শনী চলবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা এগারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ছায়ানটের শিশু-কিশোর কার্যক্রম ‘শিকড়’ ॥ সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করে যাওয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। সেই সুবাদে ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির রয়েছেন বহুমুখী কার্যক্রম। তারই একটি অংশ হচ্ছে শিশু-কিশোর কার্যক্রম ‘শিকড়’। এই কার্যক্রমে অংশ নিতে ইচ্ছুক শিশুদের জন্য আবেদনপত্র ছেড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ৬ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। ধানম-ির ছায়ানট সংষ্কৃতি ভবন থেকে সংগ্রহ করা যাবে এই আবেদনপত্র। আবেদনপত্র পাওয়া যাবে বুধবার ও জাতীয় ছুটি ছাড়া যে কোন দিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। আন্ধারমানিকে জোছনা উৎসব ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা কলাপাড়া থেকে জানান, এখানে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো জোছনা উৎসব। খ্যাতিমান কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অনবদ্য সঙ্গীতের ‘ঘর ছাড়িয়া বাহির হইয়া জোছনা ধরতে যাই’ লাইনটি ছিল জোছনা উৎসবের প্রতিপাদ্য। কলাপাড়ার ট্রাভেলার্স ক্লাব রবিবার রাতে এ উৎসবের আয়োজন করে। দোল পূর্ণিমার এ তিথিকে এ উৎসবের মধ্য দিয়ে স্মরণীয় করে রাখেন আয়োজকরা। কলাপাড়া লঞ্চ ঘাট থেকে নৌযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় জোছনা উৎসবের। ছয় ঘণ্টার নৌযাত্রা আন্ধারমানিক, সোনাতলা নদী অতিক্রম করে আবার আন্ধারমানিকের পুবের অংশ ঘুরে কলাপাড়া শহরে ফিরে আসে। নৌযাত্রার সময় লঞ্চে তৈরি করা মঞ্চে জোছনার গান, পুঁথি পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, কৌতুক পরিবেশিত হয়। কলাপাড়ার উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, চিকিৎসক, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী, সংবাদকর্মী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শতাধিক ব্যক্তিবর্গ এ উৎসবে অংশ নেয়। জোছনা উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান এমপি। এ সময় তিনি বলেন, ‘কলাপাড়া আজ দেশের মধ্যে একটি উন্নত জনপদ। এ জনপদকে ঘিরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা- চলছে। পর্যটনেরও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কুয়াকাটা, গঙ্গামতি, সোনারচর, ফাতরার চরের বন-বনানী, বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি দেশী-বিদেশী পর্যটকদের প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করে। সমাপনী বক্তব্য রাখেন ট্রাভেলার্স ক্লাবের সভাপতি মাঈন উদ্দীন আহমেদ। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টুরিস্ট গাইড বিডির নির্বাহী পরিচালক এস এম মাকসুদুল ইসলাম মাসুম।
×