ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো মামলার কার্যক্রম স্থগিত

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৮ মার্চ ২০১৭

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো মামলার কার্যক্রম স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টর ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। খালেদা জিয়ার করা এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি মোঃ খসরুজ্জামানের বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ প্রদান করেছেন। অন্যদিকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার টাকার উৎস সম্পর্কিত অংশ পুনঃতদন্তের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। আদেশের পর ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, হাইকোর্ট রুল দিয়েছে, আর মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছে। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় মওদুদ আহমেদের বিষয়ে রুলের শুনানি হচ্ছে। সেই শুনানি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ‘তবে আমরা আদালতে বলেছি, দুদকের মামলা শুনানির জন্য এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত রয়েছে। এই আদালতের সেই এখতিয়ার নেই। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও আদালত আমাদের আবেদন শোনেননি। এই যুক্তিতে আমরা আজ আপীল বিভাগে যাব।’ এর আগে গত বছরের ১ ডিসেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ক্ষেত্রে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। খালেদা জিয়াসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে। এ মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠনের শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বরে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক। পরের বছরের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যাতে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। মামলা হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই দুর্নীতির এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট, সেই সঙ্গে দেয়া হয় রুল। প্রায় সাত বছর পর গত বছরের শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। রুলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১৮ জুন খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেন হাইকোর্ট। ওই রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়। সে অনুসারে গত বছরের ৩০ নবেম্বর জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা। খালেদা ও মওদুদ ছাড়া এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মোঃ শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। আসামিদের মধ্যে মিয়া ময়নুল হক, কাশেম শরীফ ও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী পলাতক রয়েছেন। পুনঃতদন্তের আবেদন ॥ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার টাকার উৎস সম্পর্কিত অংশ পুনঃতদন্তের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আবেদন করা হলেও বিষয়টি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী জাকির হোসেন ভূইয়া। তিনি বলেন, আবেদনটি বুধবার শুনানির জন্য বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের আদালতের কার্যতালিকায় আসবে। এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা দায়ের করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন।
×