উলিপুরে ২ বছর ধরে ক্লাস চলছে খোলা আকাশের নিচে

রাজুমোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার দুই বছরেও তা নির্মাণ না হওয়ায় তিন শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী খোলা আকাশের নিচেই ক্লাস করছে। কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলে বিদ্যালয়টি হওয়ায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শীত, ঝড়-বৃষ্টি ও প্রখর রোদ মাথায় নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। জানা যায়, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ১৯৮৬ সালে বেগম নুরনাহার রেজিঃ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার চার বছরের মাথায় ’৮৯ সালে ছোট অফিসরুমসহ চার কক্ষবিশিষ্ট বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মাত্র তিনটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষকরা। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটিতে শ্রেণীকক্ষের অভাবে ১ম ও ২য় শ্রেণীর ক্লাস মাঠে খোলা আকাশের নিচে নিতে হতো। ভবনটি নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় দুই বছর আগেই তা ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের লোকজন দুই বছর আগে বিদ্যালয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে তা ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। এরপর সেখানে বিকল্প ভবন নির্মাণে০র প্রস্তাব যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ না হওয়ায় দুর্গম ওই চর এলাকার কোমলমতি শিশুদের শিক্ষাজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ঝড়-বৃষ্টির দিনে এখানে অঘোষিত ছুটি ভোগ করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে পাঁচ শিক্ষকের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সরেজমিন শনিবার দুপুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সাইফুল ইসলাম বলে, আমাদের স্কুলে ঘর না থাকায় আমরা রোদের মধ্যে মাটিতে চটের ওপর বসে ক্লাস করছি। আমাদের স্কুল ভবনের দরকার। একই কথা জানাল চতুর্থ শ্রেণীর সবুজ ও আকলিমা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খ ম রেজাউল করিম জানান, এখানে ভবন না থাকায় পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।