ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রসূতির মৃত্যু, ক্লিনিক মালিক পলাতক ॥ বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ১ মার্চ ২০১৭

প্রসূতির মৃত্যু, ক্লিনিক মালিক পলাতক ॥ বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ২৮ ফেব্রুয়ারি ॥ ভুল অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার কেশবপুরে নিহতের স্বজনসহ এলাকার শত শত নারী পুরুষ ক্লিনিক বন্ধ ও ক্লিনিক মালিক কথিত ডাক্তার আব্দুল মান্নানের বিচারের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। কেশবপুর সদর ইউনিয়নের আলতাপোল গ্রামের রাশিদুল ইসলাম লিটন তার স্ত্রী লাকি আক্তারকে (২৪) সিজার করার জন্য গত বুধবার কেশবপুরের প্যারাডাইস ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ওই ক্লিনিকের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বাবু খুলনা থেকে বিশেষজ্ঞ বড় সার্জন এনে সিজার করাবে বলে ১৫ হাজার টাকা চুক্তি করে লাকি আক্তারকে ভর্তি করে। অথচ বুধবার বিকেলে ক্লিনিকের মালিক ভুয়া ডাক্তার আব্দুল মান্নান, ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বাবু ও ক্লিনিকের শ্রমিক মুনছুর আলী মিলে সিজার করে লাকি আক্তারের পুত্র সন্তান বের করে। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার হেদায়েতুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে ক্লিনিকের নার্স তানজিলা ইয়াসমিন জানায়। নিহতের স্বামী জানান, হেলপার মুনছুর অপারেশন করে এবং কথিত ডাক্তার মান্নান ও ডাক্তার হেদায়েতুল ইসলাম দাঁড়িয়ে ছিল। ভুল অপারেশনের সময় তারা তার স্ত্রীর জরায়ু ও পিত্তথলির নাড়ি কেটে ফেলে। সিজারের পর থেকে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে। এক পর্যায়ে রোগীর পেট ফুলে উঠে এবং তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। গভীর রাতে হেলপার মুনছুর এসে রোগীর নাকে নল ঢুকায়। ভোররাতে রোগীর অবস্থা মারাত্মক হলে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে আবারও অপারেশন করে গজ এবং জমাটবাধা রক্ত বের করে ডাক্তাররা বোর্ড করে জানান, রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ। এরপর লাইফ সাপটে ঢাকা এ্যাপলো হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা রোগীর অবস্থা খুব খারাপ মন্তব্য করে ফেরত দেয়। সেখান থেকে আবারও খুলনা গাজী মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাকি আক্তার সোমবার সন্ধ্যায় মারা যায়। অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য বিভাগের ডাইরেক্টর ডাক্তার হেদায়েতুল ইসলাম জানান, অপারেশনের সময় কিছুক্ষণ ছিলাম তবে আমি অপারেশন করিনি। অপারেশন করেছে ক্লিনিক মালিক আব্দুল মান্নান ও মুনছুর। ঘটনার পর থেকে ক্লিনিকের মালিক, ম্যানেজার পালিয়েছে। সোমবার দুপুরে প্যারাডাইস ক্লিনিকে গিয়ে একজন নার্স ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি। এদিকে লাকি আক্তারের লাশ বাড়িতে আনার পর এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে। সোমবার সকালে এলাকার শত শত নারী পুরুষ জড়ো হয়ে কেশবপুর শহরে বিশাল এক বিক্ষোভ মিছিল করে।
×