ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

থাকবে ওয়াই-ফাই সুবিধা

রাজধানীতে ২০ ডিজিটাল যাত্রী ছাউনি তৈরি করা হবে

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

রাজধানীতে ২০ ডিজিটাল যাত্রী ছাউনি তৈরি করা হবে

মশিউর রহমান খান ॥ রাজধানীতে প্রথমবারের মতো রাস্তার পাশে আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল বাস স্টপেজ কাম যাত্রী ছাউনি তৈরি করা হচ্ছে। যাতায়াতের সুবিধার্থে ও গণপরিবহনকে যত্রতত্র দাঁড় না করিয়ে নির্দিষ্ট স্থান থেকে যাত্রী পরিবহনের জন্য এসব যাত্রী ছাউনি কাম বাস স্টপেজ তৈরি করা হবে। পাশাপাশি বাসের জন্য অপেক্ষা করা যাত্রীরা এসব ছাউনিতে বিশ্রাম নিয়ে অনায়াসেই সময় কাটাতে পারবেন এমন ব্যবস্থাও থাকবে। মূলত এসব ছাউনি হবে নারী ও পথচারী যাত্রীবান্ধব। প্রকল্পটি সঠিক বাস্তবায়নকল্পে ঢাকার ২ সিটি কর্পোরেশন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় স্থানে এসব ছাউনি নির্মাণ করা হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ স্থানে এসব বাস স্টপেজ কাম যাত্রী ছাউনি তৈরি করা হবে। রাজধানীকে ৪টি রুটে ভাগ করে পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে ১০টি করে মোট বিশটি স্থানকে নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে পরবর্তীতে আরও শতাধিক স্থানে এরকম যাত্রী ছাউনি তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারের ক্লিন এয়ার সাসটেইনেবল এনার্জি (কেইস) প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘কেইস’ প্রকল্পের অতিরিক্ত অর্থ থেকে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, উন্নত বিশ্বের ন্যায় প্রতিটি বাস স্টপেজ কাম যাত্রী ছাউনি অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে তৈরি করা হবে। প্রতিটি যাত্রী ছাউনি তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। এসব যাত্রী ছাউনিতে সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকবে। অপেক্ষমাণ যাত্রীদের জন্য থাকবে বিনামূল্যে ওয়াইফাই ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা। এতে এক প্রান্তে মোবাইল ফোন চার্জারের ব্যবস্থা থাকবে। যে কোন যাত্রী ইচ্ছা করলেই তার ব্যবহারিত ফোনটি সেখানে চার্জ দিতে পারবেন। যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য একটি অংশে বসার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া প্রতিটি ছাউনিতে একটি করে পত্রিকার স্টল রাখা হবে। যাত্রীদের অপেক্ষাকালীন প্রয়োজনে ছোট আকারের সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক অনুমোদিত ফাস্টফুড দোকান রাখা হবে। এসব ফাস্টফুড শপে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রাখা হবে। রাস্তায় চলাচলকারী ও ছাউনিতে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সুবিধার্থে বিনামূল্যে সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা থাকবে। এজন্য গ্লাস ও বিশেষ ফিল্টারকৃত পানির জার থাকবে। যে কোন ব্যক্তি এখান থেকে পানি খেয়ে তার পিপাসা মেটাতে পারবেন। কেইস প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এসব যাত্রী ছাউনিতে চলাচলকারী নাগরিকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিশেষ প্রযুক্তি সম্পন্ন লাইটিংয়ের ব্যবস্থা ব্যবস্থা থাকবে। দূর থেকেই যে কোন মানুষ যাতে সহজেই চিহ্নিত করতে পারেন এজন্য আশপাশের বিভিন্ন স্থানে দিক নির্দেশক দেয়া থাকবে। জানা গেছে, সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গেই এসব যাত্রী ছাউনিতে যাত্রীর নিরাপত্তায় বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তা পর্যাপ্ত পরিমাণ আলোর ব্যবস্থা রাখা হবে। কোন নারী যাত্রী যাতে এসব ছাউনিতে বিশ্রাম নিতে পারেন তার জন্য উযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে। এসব যাত্রী ছাউনিতে নির্দিষ্ট সময় পরপর সিটিতে চলাচলকারী বাস কোম্পানির বাস এসে থামবে। এজন্য ছাউনিতে বাসের সময়সূচী ও দূরত্ব উল্লেখ করা থাকবে। এছাড়া নতুন ও পুরাতন যাত্রীদের সুবিধার্থে নির্দিষ্ট দূরত্বের ভাড়াও উল্লেখ করা থাকবে। এজন্য তৈরি করা হবে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড। এর পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের জন্য বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা থাকবে। যা এসব ডিজিটাল ডিসপ্লেতে প্রদর্শিত হবে। সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, এসব ছাউনি নির্মাণের পর দেয়ালে, যে কোন প্রকার ভবনে, খুঁটিতেসহ যে কোন স্থানে যে কেউ সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়া যে কোন পণ্যের কোন প্রকার পোস্টার লাগাতে বা বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবেন না। বাস স্টপেজের এসব ডিজিটাল বোর্ডে নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করে এসব বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবেন। এছাড়া ডিজিটাল বোর্ডে পরবর্তী বাস কতক্ষণ পরে আসবে তা দেখা যাবে ফলে যাত্রীরা স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারবেন।
×