ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিএসে মেধা তালিকা থেকে কোটা পূরণ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিসিএসে মেধা তালিকা থেকে কোটা পূরণ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পঁয়ত্রিশ ও ছত্রিশতম বিসিএসে প্রার্থী না পাওয়ায় কোটার শূন্য পদে মেধা তালিকায় থাকা সাধারণ প্রার্থীদের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এ জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপন করা দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাশাপাশি সরকারী কর্মচারীদের কল্যাণ সুবিধা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে ‘বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) আইন, ২০১৭’-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া একুশে পদক প্রদান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার উপযুক্তদের একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও সকল পদক প্রদানের ক্ষেত্রে উপযুক্তদের প্রদানেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, গ্রামীণ পর্যায়ে আরও যারা বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, তাদের খুঁজে বের করতে হবে। এর মধ্যেও যোগ্য ব্যক্তি পাওয়া গেলে তাদের পদক প্রদান করতে হবে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এক আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনি এই কথা বলেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য কিন্তু ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত নয় প্রার্থীদের মধ্যে দেখা গেল নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদ পূরণের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ সংক্রান্ত শর্ত শিথিল না করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্কেল এ্যাডজুটেন্টের ৩০২টি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডওয়াইফের (ধাত্রী) ৬০০টি পদ পূরণ করা যাচ্ছে না। এ জন্য মন্ত্রিসভা একবারের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ শর্ত শিথিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ পদগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থী না পাওয়ায় ৩৫তম বিসিএসে উত্তীর্ণদের মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। তিনি বলেন, ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় বিভিন্ন ক্যাডারে মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটার অপূরণকৃত সংরক্ষিত পদ ৩৬তম বিসিএসের সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের শূন্য পদের সঙ্গে যোগ করে তা পূরণ করা হবে। এছাড়া প্রাধিকার কোটার অপূরণকৃত পদ সংরক্ষণের বিধান ৩৬তম বিসিএসের জন্য এককালীন শিথিল করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সিদ্ধান্ত আছে সরকারী চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে পদ খালি রাখতে হবে। কিন্তু পিএসসি বলেছে, ৩৬তম বিসিএসের ২ হাজার ১৮০টি শূন্য পদের মধ্যে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের জন্য ১ হাজার ৬৩৮টি পদ আছে। এ পদগুলোর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার ৪৯১টি, ১০ শতাংশ মহিলা কোটার ১৬৪টি, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটার ৮২টি পদসহ মোট ৭৩৭টি পদের অধিকাংশই খালি থাকবে। পদগুলো পূরণ সম্ভব হবে না। নিয়ম অনুযায়ী তা সংরক্ষণ করতে হবে। এ পদগুলো মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থান করা প্রার্থীদের মাধ্যমে পূরণের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। শফিউল আলম বলেন, ৩৫তম বিসিএসের কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের অপূরণকৃত ৩৩৮টি পদ ৩৬তম বিসিএসের ২ হাজার ১৮০টি পদের সঙ্গে যোগ করে তা ৩৬তম বিসিএসের মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। তিনি বলেন, প্রাধিকার কোটার অপূরণকৃত পদ সংরক্ষণের বিধান শুধু ৩৬তম বিসিএসের জন্যই শিথিল করা হয়েছে। কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) আইন ॥ মন্ত্রিসভা সরকারী কর্মচারীদের কল্যাণ সুবিধা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) আইন, ২০১৭-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। খসড়া আইনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখানে আর্থিক ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। কল্যাণ বোর্ড থেকে এখন চাকরিজীবীদের জটিল ও দুরারোগ্য ব্যধির চিকিৎসার জন্য অনুদান দেয়া হয় ১ লাখ টাকা। নতুন আইনে এটি ২ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কল্যাণ তহবিলের মাসিক চাঁদা এ পর্যন্ত দেয়া হতো মূল বেতনের এক শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। এখন সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। যৌথ বীমার মাসিক সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম ছিল ৭০ টাকা সেটা ১০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শফিউল আলম বলেন, প্রস্তাবিত আইনে মাসিক কল্যাণ ভাতা ১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা, সাধারণ চিকিৎসা অনুদান সর্বোচ্চ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪০ হাজার টাকা, দাফনের জন্য ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা, যৌথ বীমার এককালীন অনুদান ১ লাখ টাকা থেকে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে। এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক যে সকল অংশ পরিবর্তন আনা দরকার, আইনে সেখানে পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আইন অনুমোদন ॥ মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আইন, ২০১৬-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৮৪ সালের সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশটি হুবহু বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। মূলত, ইংরেজী ও বাংলা আইনের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
×