ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশের পরিমাণ কমেছে

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশের পরিমাণ কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে ২০১০ সালের ধসের পর অন্য সবগুলো খাতগুলো ঘুরে দাঁড়ালেও ব্যতিক্রম দেখা গেছে মিউচুয়াল ফান্ড। মাঝেমধ্যে এ খাতিটিতে কিছু সম্ভাবনা তৈরি হলেও কিছুটা দর বেড়েই আবারও কমতে শুরু করেছে। ফলে দীর্ঘ ছয় বছর কেটে গেলেও এ খাতের বিনিয়োগকারীদের গতি ফেরেনি। একদিন কমছে কমছে ফান্ডের ইউনিটের দর। অন্যদিকে ধারাবাহিকভাবে কমছে লভ্যাংশের হার। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে এ খাতের গড় লভ্যাংশ কমে গেছে ৬৭ শতাংেশর বেশি। বিনিয়োগকারীরা যাকে লভ্যাংশে ধস বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রাপ্ত তথ্য মতে ২০১৫ সালে তালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডের গড় লভ্যাংশের হার ছিল ৭৯.১৪ শতাংশ। ২০১৬ সালে তা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়ে নেমে এসেছে ১২ দশমিক ০৪ শতাংশে। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে গড় লভ্যাংশ কমেছে ৬৭.৩৭ শতাংশ। যা লভ্যাংশ হ্রাসের দিক থেকে তালিকাভুক্ত অন্যান্য খাতের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ প্রসঙ্গে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন মিউচুয়াল ফান্ড ঘুরে না দাঁড়ানোর প্রধান কারণ হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ। আর এই অনাগ্রহের কারণ হচ্ছে তারা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট নিয়ে বড় ধরনের লোকসানে রয়েছেন। তিনি বলেন ফান্ডগুলোতে বিনিয়োগ না করার আরেকটি কারণ হচ্ছে ফান্ডগুলোর জবাবদিহিতা না থাকা। ফান্ডগুলো তাদের অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছে নাকি অন্য কোথাও রেখে দিচ্ছে তা আমরা জানি না। ফলে এসব ফান্ডে বিনিয়োগ নিয়ে সব সময় এক ধরনের ধোয়াশা থেকেই যাচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দরকার। একই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসইর এক পরিচালক বলেন- এক বছরের ব্যবধানে লভ্যাংশের হার ৬০ শতাংশের বেশি কমে যেতে পারে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বাজার ভাল নয় এই দোহাই দিয়ে ফান্ডগুলো ইউনিট হোল্ডারদের ঠকিয়েছেন। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০১০ সালের ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগকারীরা। সেই সময় মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনেটের দর সবচেয়ে বেশি কমে যায়। যার রেশ এখনও কাটেনি। ফলে মিউচুয়াল ফান্ড থেকে তারা রিটার্ন পাচ্ছেন না। প্রাপ্ত তথ্য মতে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৮৬ শতাংশ বা ২৭টির ইউনিট দর অবস্থান করছে অভিহিত মূল্যের নিচে। এ রকম মিউচুয়াল ফান্ডগুলো হচ্ছে, এআইবিএল প্রথম ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড, গ্রামীণ ওয়ান স্কিম টু, গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড, ফার্স্ট জনতা ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড, প্রাইম ফাইন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ড, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। এই তালিকায় আরও রয়েছে রিলায়েন্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, সাউথইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফাইন্যান্স একইভাবে আইসিবি দ্বিতীয় এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, আইসিবি তৃতীয় এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, আইসিবি এএমসিএল দ্বিতীয় মিউচুয়াল ফান্ড, আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যান্য ফান্ডের মধ্যে রয়েছে এনএলআই ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, পিএইচপি মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ড। এছাড়া আইসিবি এএমসিএল সোনালি ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, আইএফআইসি ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, আইএফআইএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, এলআর গোবাল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও এনসিসি ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান এই তালিকায় রয়েছে।
×