ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুতের বর্জ্য শোধনাগারটি ১০ বছরেও চালু হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বড়পুকুরিয়া তাপ  বিদ্যুতের বর্জ্য  শোধনাগারটি ১০ বছরেও  চালু হয়নি

শ.আ.ম.হায়দার, পার্বতীপুর থেকে ॥ বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের পর দীর্ঘ ১০ বছরেও বর্জ্য শোধনাগারটি (ইটিপি) চালু করা হয়নি। প্রকল্প সূত্র মতে, পাওয়ার প্লান্টে বিদ্যুত উৎপাদনে প্রথমে পাইপের সাহায্যে গভীর নলকূপের পানি ল্যাবরেটরিতে আনা হয়। তারপর বিশালাকার ফিল্টারে নানা কেমিক্যাল ট্রিটমেন্টের পরিশোধন করে ডিমিনারালাইজড (ডিস্টিলড ওয়াটার) ওয়াটার হিসেবে বয়লারে ব্যবহার করা হয়। এই প্রক্রিয়া করতে গিয়ে পানিমিশ্রিত বর্জ্য বাইরে ফেলে দেয়া হয়। তার আগে বর্জ্য শোধনাগারে নিয়ে আবারও কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করে পানি দূষণমুক্ত করার নিয়ম। এছাড়া তাপ বিদ্যুতের কোল ইয়ার্ডে কয়লা ধোয়া পানি, অসংখ্য যন্ত্রপাতি, মোটর ও টিউবওয়েল-বর্জ্যের পানিসহ বিভিন্ন ময়লা উপাদান একই নিয়মে শোধন করার জন্য কয়েক কোটি টাকায় বর্জ্য শোধনাগারটি নির্মাণ করা হয়। এসব পাশর্^বর্তী নদীতে নিক্ষেপের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে নির্মাণ করা হয়েছে ১.৬ কিলোমিটার ক্যানেল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চীনা প্রকৌশলীরা এই তাপ বিদ্যুত প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করার পর তাদের ২ বছর ওয়ারেন্টি পিরিয়ডে তারা এটি চালু করেনি। তাদের (চীনাদের) কাছ থেকে প্রকল্প হ্যান্ডওভারের জন্য বাংলাদেশী প্রকৌশলীরা দেশের কোটি টাকা ব্যয় করে চীন থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসে। তবে এই বিদ্যুত প্লান্ট হস্তান্তরের ১০ বছরেও বাংলাদেশী প্রকৌশলীরা এটি চালুর ব্যাপারে মাথা ঘামায়নি। এরই মধ্যে অনেকেই প্রমোশন নিয়ে এখান থেকে অন্যত্র চলে গেছে। যে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোক বাকি ছিল তাদের অধিকাংশ অবসরে গেছে। ফলে তখন থেকে বর্জ্য শোধনাগারটি এমনিভাবে পড়ে আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা দায়সারা গোছের উত্তর দেন। পরিবেশের কারণে সরকার সকল কল কারখানার বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ বাধ্যতামূলক করেছে, এ ব্যাপারে এই পাওয়ার প্লান্টের কি অবস্থা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তাপ বিদ্যুতের প্রধান প্রকৌশলী মহব্বত হোসেন বলেন, বর্জ্য শোধনাগার এমনিতে আছে। কারণ, এখানে বর্জ্য প্রডাকশন হয় না। এখানে যে পানি ফেলে দেয়া হয় তা ভাল পানি। এই পানি দিয়ে চাষাবাদ হচ্ছে। তবে আগামী ওভারহোলিংয়ে এটি চালু করা হবে। ভবিষ্যতে বর্জ্য শোধনাগারটিকে মিনারেল হেড করার চিন্তা রয়েছে। বর্জ্য শোধনাগারটি যে তাপ বিদ্যুতের একটি অঙ্গ তা এই নির্বাহী কর্মকর্তা মানতেই নারাজ। তবে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তা যদি হয় তবে কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যানেল ও বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ করা হয়েছে কেন? তাপ বিদ্যুতের পাওয়ার প্লান্টে কর্মরত প্রধান রসায়নবিদ ডক্টর আজাদের (০১৭২৬৬২৭৮৭৭) সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, যেহেতু তাপ বিদ্যুতে গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করা হয়, তাই এই পানি ভাল। ক্ষতিকারক তেমন উপাদান থাকে না। তাছাড়া এখানে আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করে ফিলটারে দূষণমুক্ত ডিমিনারালইজ্ড ওয়াটার বয়লারে দেয়া হয়। তারপর যে পানি ফেলে দেয়া হয় তাতেও পরিবেশ ক্ষতির তেমন উপাদান থাকে না। পরিবেশ অধিদফতর থেকে বহুবার লোক এসে পরীক্ষা করে ক্ষতিকারক কিছু পাননি। সমস্যা থাকলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম।
×