ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সীমান্তে সীমিত ছাড়পত্র

গরু আমদানিতে অবৈধ পথে ঝুঁকছেন ব্যবসায়ী

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

গরু আমদানিতে অবৈধ পথে ঝুঁকছেন ব্যবসায়ী

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত ঘাট দিয়ে বৈধ পথে গরু আমদানিতে সীমিত ছাড় থাকায় অবৈধ পথে গরু আমদানিতে ঝুঁকছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বৈধ পথের চেয়ে অবৈধ চোরাইপথে গরু আমদানির মাত্রা বেড়েছে। ঝুঁকি ও হয়রানি হলেও গরু ব্যবসায়ীরা চোরাইপথ বেছে নিচ্ছে। চোরাইপথে গরু পার হয়ে আসায় বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬টি ঘাট দিয়ে বৈধভাবে গরু দেশে নিয়ে আসা হয়। এসব ঘাট হলো- হাকিমপুর, ফরিদপুর, চরবাঘডাঙা, বাখরআলী, সাতরশিয়া ও জহুরপুর টেক। এসব ঘাট দিয়ে সীমিত সংখ্যক গরু বৈধভাবে দেশে নিয়ে আসার অনুমতি আছে। এদিকে, রাজশাহীর সীমান্তগুলোর মধ্যে খরচাকা বিওপি, সৌনাইকান্দি বিওপি, মাঝারদিয়াড় বিওপি, খানপুর বিওপি, ১০ নম্বর পদ্মার চর বিওপি ও শাহাপুর বিওপি ঘাট দিয়ে গবাদিপশু আমদানি হচ্ছে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসব ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ভারতীয় গরু আমদানি হলেও তা সীমিত সংখ্যক। ওপারে বিপুল সংখ্যক গরু দীর্ঘদিন ধরে আটকা পড়ে থাকায় চোরাইপথে সেগুলো ঘাট ফাঁকি দিয়ে আমদানি করা হচ্ছে। গরু ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানান, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্ধারিত ঘাট ব্যবহার করে প্রতিদিন মাত্র ৬০০ করে গরু দেশে নিয়ে আসা যায়। এত কম সংখ্যক গরু পার করে ব্যবসায়ীদের কোনভাবেই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। এছাড়াও বৈধভাবে গরু পার করতেও ব্যবসায়ীদের নানান জটিলতা ও হয়রানির মুখে পড়তে হয়। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ওপার থেকে গরু নিয়ে আসার পরে সীমান্ত পার করতে অনেক জটিলতা পোহাতে হয়। প্রতিদিন সীমান্তে ৪ থেকে ৫ হাজার গরু এসে জড়ো হয়ে থাকে। কিন্তু বিজিবি সদস্যরা ঘাটে ৬০০ গরু গ্রহণ করে বাকিগুলো ফেরত পাঠায়। একটি গরু পার করতে ব্যবসায়ীদের সপ্তাহ লেগে যাচ্ছে। এতে ভারত সীমান্তে গরুগুলো রাখতে ব্যবসায়ীরা অনেক টাকা লোকসানের মুখে পড়ছে। এ কারণে অনেকেই গরু পার করতে চোরাইপথ বেছে নিচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক গরু ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন ৬০০ গরু বৈধ পথে প্রবেশ করে। প্রতি গরুতে কাস্টমকে দিতে হয় ৬০০ টাকা ও বিটে দিতে হয় ১৫০ টাকা। সামান্য সংখ্যক গরু বৈধভাবে পার করে প্রতিদিন সাড়ে ৪ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হয়। কিন্তু চোরাইভাবে প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে ৪ থেকে ৫ হাজার গরু পার হচ্ছে। এতে প্রতিদিন ৩০ লাখ থেকে ৩৭ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। রাজশাহী বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সোহেল উদ্দিন পাঠান জানান, তাদের প্রধান কাজ সীমান্ত রক্ষা করা। এরপরে মৌলিক যে কাজ পড়ে তা হচ্ছে চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা। বিজিবি এসব কাজ করার পরে অন্য কাজগুলো করতে পারে। বেশি গরু আমদানির ক্ষেত্রে বিজিবিকে অনেক বাড়তি কাজ করতে হয়। মৌলিক কাজগুলো ফেলে একটি বিওপি দিয়ে ১০০টির বেশি গরু বৈধভারে পার করা সম্ভব হয় না। এজন্য প্রচুর জনবলও প্রয়োজন। ইচ্ছে থাকলেও সামর্থ্যরে বাইরে কাজ করা সম্ভব নয় বলে জানান বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সোহেল উদ্দিন পাঠান।
×