ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সারাদেশে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭

সারাদেশে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট হচ্ছে

শংকর কুমার দে ॥ বিগত ৬ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগ। আলোচ্য সময়ে পুলিশ বিভাগে উন্নত প্রযুক্তির পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ৫টি ইউনিট। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটি)। জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক দমনে ব্যাপক সাফল্য দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছে এই ইউনিট। এ জন্য ঢাকা মহানগরের এই ইউনিটটি সারাদেশে গঠন করার জন্য পুলিশের দাবি। পুলিশ সপ্তাহ ২০১৭-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই দাবি উত্থাপনের পর সিটি ইউনিটটি সারাদেশে গঠন করা হচ্ছে। পুলিশের উচ্চ পর্যায় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সূত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৭ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। সারাদেশের পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা এখন ঢাকায়। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ব্যাস্ততম দিন কাটানোর প্রক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার পুলিশ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক দমনে আরও কঠোর হওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক। আজ শুক্রবার শেষ হয়ে যাবে পাঁচ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা এক লাখ সত্তর হাজারের মতো। পুলিশ বাহিনীতে রয়েছে বর্তমানে ১৮টি ইউনিট। এর মধ্যে ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সালে বিগত ৬ বছরের মধ্যে এ বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে বিশেষায়িত ৫টি ইউনিট। এগুলো হলো- পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ট্যুরিস্ট পুলিশ, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এএপি), শিল্প পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অধীনে কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটি)। জনবল ও যানবাহন সঙ্কটসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও পুলিশের নব গঠিত ইউনিটগুলোর সাফল্য ও সুনাম দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছেছে। পুলিশের পাঁচটি ইউনিটের বাইরে এবারের পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে সিআইডি’র ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার, সাইবার ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে ঢাকায় আসা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে জনবল, যানবাহন সঙ্কটসহ নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও পুলিশ বাহিনীর যে সাফল্য, তাতে তারা গর্বিত। বিগত ৬ বছরে পুলিশ প্রশাসনে যে উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে তার মধ্যে গঠিত ৫টি ইউনিট অন্যতম। বর্তমান সময়ে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক দমনে প্রশংসা কুড়িয়েছে পুলিশ বাহিনী। এ প্রশংসা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এ বাহিনী দ্রুততম সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার ফলে সাফল্য ও প্রশংসা অর্জন করেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ব্রিটিশ শাসনামল থেকে বর্তমান বাংলাদেশের পুলিশ চুরি-ডাকাতি রোধ, ছিনতাই প্রতিরোধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ইত্যাদি সমাজ বিরোধী কর্মকা- প্রতিরোধসহ বিভিন্ন কাজে দায়িত্ব পালন করে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি নারীরাও চাকরি করছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর সংগঠিত করা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী এখন পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুলিশ বাহিনীর মতো আইনশৃঙ্খরা রক্ষা, জনগণের জানমাল ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, অপরাধ প্রতিরোধ ও দমনে প্রধান ভূমিকা পালন করে পুলিশের ট্র্যাডিশনাল চরিত্রে বিরাট পরিবর্তন এনে দিয়েছে। শুধু আইন পালন আর অপরাধ প্রতিরোধ বা দমনই নয় দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যা সম্প্রতি জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক দমনের অর্জিত সাফল্য বিদেশীদের কাছে শুধু প্রশংসনীয়ই নয়, ঈর্ষণীয়ও বটে।
×