ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থমন্ত্রীর ‘স্মৃতিময় কর্মজীবন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

প্রকাশিত: ০৭:৫৪, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

অর্থমন্ত্রীর ‘স্মৃতিময় কর্মজীবন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৮৪ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের লেখা ‘স্মৃতিময় কর্মজীবন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় অফিসার্স ক্লাবে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে এ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পেশার মানুষের শুভেচ্ছায় সিক্ত হন অর্থমন্ত্রী। সভার শুরুতে কেক কেটে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের শুরু। এর পর বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ অর্থমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। এর পর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। পরে তারা স্মৃতিচারণ করেন। অর্থমন্ত্রী ছাড়াও অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান, সাবেক সচিব মোকাম্মেল হক, কথা সাহিত্যিক ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান সেলিনা হোসেন, কথা শিল্পী ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বক্তব্য দেন। এ সময় তারা অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত বলেন, আমি নিতান্তই অভিভূত। ৮৩ বছর বয়সে আমি যথেষ্ট শক্ত সামর্থ্য। প্রকাশককে ধন্যবাদ। তিনি ‘সম্পূর্ণ ভুলহীন’ একটি বই প্রকাশ করেছেন। বইয়ে অনেক ভুল থাকতে পারে, সেটা একান্তই আমার, লেখকের; প্রকাশকের কোন ভুল নেই। তিনি বলেন, বাগেরহাটের কাহিনী লিখতে গিয়ে অনেক স্মৃতি ভুলে গিয়েছিলাম। এক্ষেত্রে আমার ছোট ভাই সুজন এ মুয়িজ, যিনি বাগেরহাটে আমার সঙ্গে ছিলেন; তার সহযোগিতা নিয়েছি। আমার স্ত্রীও আমাকে অনেক সমৃদ্ধ করেছেন। ব্রিটেনের রানীর বাংলাদেশ ভ্রমণ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী একটি আবেদন করেন। তিনি বলেন, আমি উন্মুক্তভাবেই একটি আবেদন করতে চাই। ব্রিটেনের রানী ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে সুগন্ধা প্রাঙ্গণে একটি ফটো সেশনে অংশ নিয়েছিলেন। জানামতে, সেখানে দুজন বাঙালি ছিলেন। সে ছবিটি ঢাকার অনেক কাগজেই ছাপা হয়েছিল। সেটি যদি কারও সংগ্রহে থাকে, সেই ছবির একটি কপি আমাকে দিলে আমি খুবই খুশী হব। তিনি বলেন, আমার বই নিয়ে অনেকে মতামত দিয়েছেন। মন্তব্য করেছেন। এগুলো উপাদেয় মন্তব্য বলে আমি মনে করি। অনেকে পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো গ্রহণযোগ্য এবং আমার জন্য সহায়ক। তবে আমি এখানে একটি সতর্কতার নোটিস পেয়েছি, তা হলো আগামী খ-গুলো লেখার ক্ষেত্রে আমাকে আরও সচেতন হতে হবে। তিন ঘণ্টার এই আয়োজনকে ‘সেলিব্রেশন’ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি সারাজীবন মানুষের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করেছি। আজকের এই অনুষ্ঠান তারই প্রতিফলন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের আত্মজীবনীমূলক দ্বিতীয় বই ‘স্মৃতিময় কর্মজীবন’ প্রকাশ করেছে চন্দ্রাবতী একাডেমি। এর আগে গত বছর ‘সোনালি দিনগুলি’ নামে তার আত্মজীবনীমূলক বইয়ের প্রথম খ- বের হয়। বইটিও চন্দ্রাবতী একাডেমিই প্রকাশ করে। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, অর্থমন্ত্রী এমন এক সংস্কৃতিমনা মানুষ তাকে এ অঙ্গনের প্রতিটি অনুষ্ঠানই প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানায়। তিনি উপস্থিত হন। মুহিত ভাই নিজেই বিশাল বইয়ের ভা-ার। তার সঙ্গে কথা বলতেই আমার মনে হচ্ছে আমি যেন ইতিহাস জানতে পারছি। একেক সময় একেকটা বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছি। কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, আমি তার বইটি পড়েছি। এখানে অত্যন্ত সুন্দরভাবে তার জীবনের মধ্যে ইতিহাস তুলে ধরেছেন। তার বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রতিটি ঘটনা বা স্মৃতি এখানে স্থান পেয়েছে। বিশেষ করে ১৯৫৭ সালের পর থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি ঘটনা উঠে এসেছে। আমি মুহিত ভাইকে অর্থমন্ত্রীর উর্ধে একজন লেখক হিসেবে মূল্যায়ন করব। তিনি লেখনির মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে আলোকিত করেছেন। আমি মনে করি বইটির মাধ্যমে ইতিহাসের একটি অংশ সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এ সময় তিনি সবাইকে তার বইটি পড়ার আহ্বান জানান। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বইটি পড়ে আমি নিজেই উপকৃত হয়েছি। যেখানে মুহিত ভাইয়ের পারিবারিক জীবনের বিভিন্ন স্মৃতি অন্যরকম ভাবে তুলে ধরেছেন। যা পাড়ে পাঠকরা মজা পাবেন। অর্থমন্ত্রী বইটিতে নিজের কোন রাগ-ক্ষোভ না রেখেই বইটি লিখেছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান বলেন, মুহিতের সঙ্গে আমার অনেক মিল রয়েছে। লেখা পড়া থেকে শুরু করে চাকরি জীবন এবং রাজনৈতিক জীবন। তার বয়স বাড়ার পাশাপাশি উদ্যোমও বেড়েছে। আমরা সমবয়সী হব। অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রীর বইয়ের প্রকাশনা উৎসব সমাপ্ত হয়।
×