নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ২৫ জানুয়ারি ॥ কেশবপুরের ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের সোনাতলা মাঠে কৃষদের তিন ফসলি জমি দখল করে জোরপূর্বক মাছের ঘের তৈরি করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক কৃষক তাদের জমিতে মাছের ঘের বন্ধ করাতে এলাকার সাংসদ প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোন ফল পাচ্ছেন না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ওসিকে লিখিতভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে কেশবপুরের শহরের প্রভাবশালী মাছের ঘের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান আসাদ তার লোকজন দিয়ে তাদের অনিচ্ছায় প্রায় ২শ’ বিঘা জমিতে মাছের ঘের তৈরি করছে। ওই ঘেরের ভেতর শ্রীরামপুম, শরাফপুর ও ভালুকঘর গ্রামের কুন্ডুপাড়া ও সাহাপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায় কৃষকদের বেশি জমি পড়েছে। তারা ভয়ে কিছু বলতে পারছে না।
রঘুরামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর, জামরুল, কালাম, আাব্দুল মান্নান, মোহাম্মদ আলী, গফুর গং ঘের মালিক আসাদের পক্ষে ফসলের জমি থেকে মাটি কেটে ও জমি দখল করে মাছের ঘের করতে সাহায্য করছে। সোনাতোলা মাঠে মাছের ঘের তৈরি করা হলে শ্রীরামপুর, শরাপপুর, মৃর্জানগরসহ মাঠের চারপাশের মানুষের ফসল এবং বসবাসে ব্যাপক ক্ষতি হবে। বর্ষার সময় পানিতে তলিয়ে জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে। তাদের তিন ফসলের জমিতে ধান, সরিষা, গমসহ অনেক ফসল ফলাতে পারবে না। অবৈধভাবে জোরপূর্বক মাছের ঘের তৈরির বিরুদ্ধে শতাধিক কৃষক স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জানুয়ারির ৯ এবং ১৮ তারিখে। সোনাতলা এলাকার জমির মালিক কৃষক শফিকুল ইসলাম, শাহাজাহান আলী, নওয়াব আলী, শ্যামপদ সাহা, গনেশ সাহা, সুবাসসহ অনেকে জানিয়েছেন, জোরপূর্বক তাদের জমি দখল করে ঘের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান আসাদ ওই মাঠের ২শ’ বিঘা জমিতে মাছের ঘের তৈরি করছে। তাদের কাছ থেকে জমি নেয়ার বিষয়ে কোন সম্মতি নেয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ রায়হান কবির বলেন, কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা থানার এসআই নাজিম উদ্দিন জানান, উভয়পক্ষকে নিয়ে ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিছুজ্জামানের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান আনিছুজ্জামান জানান, কাউকে জোরপূর্বক জমি দিতে সহায়তা করিনি। যারা জমি দিয়েছে তাদের টাকা নেয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তিনি বলেন, জোরপূর্বক জমি নেয়া ঠিক হবে না।
ঘের মালিক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, পক্ষে-বিপক্ষে লোক থাকতে পারে। কিন্তু কুন্ডপাড়া ও সাহাপাড়ার কৃষকরা দাবি করেছেন তাদের জমি জোরপূর্বক নেয়া হয়েছে।