ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধীদের মদদদাতারও বিচার হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:২৬, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

যুদ্ধাপরাধীদের মদদদাতারও বিচার হবে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের হাতে যারা পতাকা দিয়েছে তাদের শাস্তি হয়েছে। আর যারা যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়েছে তাদেরও বিচার হবে। মঙ্গলবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি, বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। আমি শুধু এইটুকুই বলবো, যারা যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়েছে, মন্ত্রী বানিয়ে লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত পতাকা দিয়েছে, রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে তাদেরও বিচার বাংলার মাটিতে একদিন হতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদের পথে যারাই যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদের ঠাঁই হবে না। তিনি আরও বলেন জঙ্গিবাদের যে নতুন উৎপাত শুরু হয়েছে, তা কেবল বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে এ সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যার উৎসটা কি? আমরা ধর্মে বিশ্বাস করি। ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের স্থান নেই। ইসলাম মানুষ খুন করার কথা বলেনি। আত্মঘাতী হলে দোজখে যেতে হয়, বেহেস্তে যাওয়া যায় না। ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে সবার আগে শিক্ষা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষাই হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে বড় পাথেয়। এ শিক্ষাই সকলকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি দেশ-জাতিকে উন্নত করবে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিজের এলাকায় কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ছাত্রলীগ নেতা নিরক্ষর লোকজনকে খুঁজে বের করবেন, তাদের শিক্ষা দেবেন। ছাত্রলীগকে সাক্ষরজ্ঞান কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। নিরক্ষরমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে এমন নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অশিক্ষিতদের হাতে দেশের ক্ষমতা পড়লে কি হয় তা আমরা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। তিনি বলেন, জিয়া ছিলেন মেট্রিক পাস, তার স্ত্রী মেট্রিক ফেল। তারা কেন চাইবেন, এদেশের ছেলে-মেয়েরা শিক্ষিত হোক! তাদের আমলে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্র বাণিজ্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শত অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে ছাত্রলীগ বা মুজিব সৈনিককে ধ্বংস করা যায়নি। তিনি বলেন, আজকে আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাধীন একটি দেশ। সেই দেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধশালী। শোষণ-বঞ্চনা থাকবে না। প্রতিটি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হবে। প্রতিটি মানুষ উন্নত জীবন পাবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে তিনি রাজনীতি করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বাংলাদেশের বিজয়কে মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। এরপর আমরা দেখেছি কিভাবে একটার পর একটা ক্যু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরপর থেকে ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগসহ আমাদের সহযোগী সংগঠনের ওপর নির্যাতন চলেছে। ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবুর লাশ তার বাবা-মা পায়নি। সে মহানগর ছাত্রলীগের নেতা ছিল। নারায়ণগঞ্জের মুনিরকে এ ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ভাবে সারাদেশে চলেছে নির্যাতন আর হত্যা। তিনি বলেন, এত নির্যাতন করেও ছাত্রলীগ বা মুজিব সৈনিককে ধ্বংস করা যায়নি। তার কারণ ছিল ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগ জাতির পিতা গড়ে তুলেছিলেন তার আর্দশের ভিত্তিতে। যে সংগঠন আদর্শের ভিত্তি করে গড়ে উঠে তাকে ধ্বংস করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতির পিতার দেখানো পথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চলার নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর স্বাধীনত বিরোধী চক্র বা পাকিস্তানের শাসকদের দালাল চক্র ভেবেছিল আওয়ামী লীগ আর কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আওয়ামী লীগ আর কোনোদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। তারাই রাজত্ব করে যাবে, লুটপাট চালাবে। দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করবে। আর ওই বিকৃত ইতিহাস মানুষ শুধু জানবে। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করে দেবে। কিন্তু সেটা তা তারা করতে পারেনি। পারেনি এই জন্য যে জাতির পিতা এ সংগঠন একটি আদর্শ ও নীতির ভিত্তিতে গড়ে তুলেছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষ তাদের আর্থ সামাজিক উন্নত করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করবে। দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশ হিসাবে গড়ে তুলবে। আর সেই লক্ষ্য সামনে রেখে এই সংগঠন শত প্রতিকূলতার মাঝেও টিকে থেকেছে।
×