ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সিরিয়া সংকটই ট্রাম্পের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ১৮:৩৯, ২৪ জানুয়ারি ২০১৭

সিরিয়া সংকটই ট্রাম্পের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ

অনলাইন ডেস্ক॥ শুক্রবার একদিকে মহাসমারোহে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, অন্যদিকে আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ লোক ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ছিলেন। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পরের দিন শনিবার উইমেন্স মার্চ সংগঠনের আয়োজনে আমেরিকাজুড়ে ৩০০টি শহরসহ বিশ্বের প্রায় ১৬৯টি শহরে ৬০০-এর অধিক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসব বিক্ষোভ সমাবেশে প্রায় ২০ লাখের মতো বিক্ষোভকারী অংশ নেন। কোনো কোনো বিক্ষোভ সহিংসতায়ও রূপ নেয়। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। বিদেশ নীতির ক্ষেত্রেও ট্রাম্প বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়বেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ট্রাম্প যখন ক্ষমতা নিলেন, তখন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্যে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের উত্থানে চলছে গৃহযুদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমানে সিরিয়ার অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। ৪ বছরের গৃহযুদ্ধে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে সিরিয়া। লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফির পর সিরিয়ার বাশার সরকারকে উৎখাত করতে চেয়েছিল আমেরিকা ও তার মিত্ররা। এ লক্ষ্যে বাশার সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীগোষ্ঠী ফ্রি সিরিয়ান আর্মিকে সহায়তা দেয়া হয়। কিন্তু সিরিয়ার বাশার সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র রাশিয়ার হস্তক্ষেপে আমেরিকার ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বিদেশ নীতির প্রথম চ্যালেঞ্জ কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। এর আগে সিরিয়ায় শান্তি আলোচনার ব্যাপারে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। শান্তি আলোচনার চেষ্টা এখনও চলমান। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মার্ক টোনার এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাশিয়ার উদ্যোগে সিরিয়ার একটি শান্তি আলোচনায় কাজাখস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন। সোমবার কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় এ শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার উদ্যোগে এ শান্তি আলোচনাটি এ ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের সামনে যে চাপটি ছিল তা উপশম করছে। কাকতালীয় হোক আর ইচ্ছাকৃতই হোক, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শপথ নেয়ার ৩ দিন পরেই এ শান্তি আলোচনার ডাক দিয়েছেন। তবে এ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে শুধু পর্যবেক্ষক হিসেবেই ডাকছেন পুতিন। ট্রাম্প প্রশাসন এখনও পুরোদমে কাজ শুরু করেনি। এ মুহূর্তে শান্তি আলোচনার ডাক দিয়ে পুতিন মূলত সিরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্পকে পিছিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। আস্তানায় শান্তি আলোচনায় চালকের আসনে রয়েছে রাশিয়া। শান্তি আলোচনার মাত্র কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাও আবার পর্যবেক্ষক হিসেবে। সিরিয়ার ভবিষ্যৎ কী হবে, সে ব্যাপারে শান্তি আলোচনায় কে কে আমন্ত্রণ পাবে তার সিদ্ধান্ত মূলত যুক্তরাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত জাতিসংঘের হাতে ছিল। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আগের যে শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টা তাতে যুক্তরাষ্ট্রই প্রধান ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা বেশি দূর এগোয়নি। জেনেভার শান্তি আলোচনায় একটা উন্নতির আশা করা হয়েছিল। কারণ এ আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীরা মুখোমুখি বসেছিল। ওই আলোচনায় বাশার সরকারের পাশাপাশি বিরোধীরা অংশগ্রহণ করেছিল। আস্তানায় অনুষ্ঠিতব্য শান্তি আলোচনায় বড় ধরনের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সিরিয়ার সরকারবিরোধী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অনেকেই বলেছে, তারা আলোচনায় অংশ নেবে। এর সঙ্গে সিরিয়া সরকার ও শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী রাশিয়া, ইরান এবং তুরস্কও রয়েছে।
×