বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) সাম্প্রতিক প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে সংগঠনটিকে একটি ভাড়াটে সংগঠন হিসেবে দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, এইচআরডব্লিউ এখন ভাড়ায় কাজ করে, অর্থের বিনিময়ে প্রতিবেদন তৈরি করে। পয়সার বিনিময়ে বিবৃতি দেয়। বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে তারা ভাড়ায় কাজ করছে। বিএনপি-জামায়াতের নিয়োগ করা মিলিয়ন ডলারের লবিস্ট ফার্মের তৈরি করা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। বিএনপি ওই প্রতিবেদন ‘কিনে’ এখন তা নিয়ে ‘লাফালাফি’ করছে। এইচআরডব্লিউ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, একপেশে, ভুল তথ্যপূর্ণ ও বানোয়াট। আওয়ামী লীগ এই প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। এটি একটি পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন।
মঙ্গলবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। হাছান মাহমুদ দাবি করেন, জামায়াতের লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে এইচআরডব্লিউ অর্থ পেয়ে থাকে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার চলাকালে জামায়াতের পক্ষে কাজ করার জন্য আদালত অবমাননার দায়ে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছিল এ সংগঠনটি।
ড. হাছান বলেন, কোন দেশের সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততাবিহীনভাবে কাজ করার নীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অনুদান গ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে এই সংগঠনটির বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে দেশে হত্যা, খুন, আর সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়। আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সে সময় কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেনি, প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে সংস্থাটি। হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার পর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন বিবৃতি দেয়নি এই সংস্থা। ২০১৫ সালে তিন মাসে বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রায় শত শত নিরপরাধ লোককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। এ নিয়ে কোন ধরনের উদ্বেগ কিংবা উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেনি তারা। অথচ সম্প্রতি সিলেটে মানুষের জমি দখলকারী, সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী হাজতে থাকা ডাঃ রাগীব আলীর জামিন চেয়েও এই সংস্থা বিবৃতি দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।