ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

জনপ্রশাসন থেকে দুর্নীতি কমানোর উদ্যোগ, সচিবদের চিঠি

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭

জনপ্রশাসন থেকে দুর্নীতি কমানোর উদ্যোগ, সচিবদের চিঠি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জনপ্রশাসন থেকে দুর্নীতি কমিয়ে আনতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে সরকারী ক্রয়, জনবল নিয়োগ, প্রকল্প গ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সব মন্ত্রণালয়-বিভাগের সচিবদের কাছে চিঠি দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। গত ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবদের এই চিঠি দেন। একই সঙ্গে শফিউল আলম চিঠিতে মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও অধীন সংস্থাগুলোতে দুর্নীতি প্রতিরোধে সচিবদের পূর্ব প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সুদৃষ্টি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব সেক্টরে দুর্নীতি প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এর আগে গত ৩১ অক্টোবর এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে একটি চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে এ চিঠি দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব চিঠিতে সচিব ও সিনিয়র সচিবদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, দুর্নীতি একটি সামাজিক ব্যাধি এবং জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্যতম প্রতিবন্ধক। ফলশ্রুতিতে দেশীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে এখনও পৌঁছেনি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় দেখা গেছে যে, দুর্নীতি রোধ করতে পারলে দেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রতিবছরে প্রায় ২ শতাংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সরকারী ক্রয় প্রক্রিয়া, জনবল নিয়োগ, প্রকল্প গ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নের কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রকোপ থাকতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রো-এ্যাকটিভ (পূর্ব প্রস্ততিমূলক) মনিটরিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ জন্য সরকারী ক্রয় প্রক্রিয়া, জনবল নিয়োগ, প্রকল্প গ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রো-এ্যাকটিভ মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার সুদৃষ্টি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করছি। তিনি লিখেছেন, এছাড়া আপনার আওতাধীন দফতরসমূহের দুর্নীতির ধূসর এলাকাসমূহ (গ্রে এরিয়া) যদি থাকে শনাক্তপূর্বক সেগুলো দুর্নীতি দমন কর্মসূচীর আওতাভুক্তকরণে আপনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি। দুর্নীতি দমনে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের যে কোন পদক্ষেপে সহযোগিতা করতে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রস্তুত রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও মন্ত্রণালয় যৌথ প্রয়াসে দুর্নীতির মূলোৎপাটিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সচিবদের উদ্দেশে তিনি চিঠিতে আরও লিখেছেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতি দমনে বন্ধপরিকর। ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়ন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের পর্যায়ে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বিশেষ কর্মসূচী ও নীতি গ্রহণ করেছে। দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য দুর্নীতি এবং অন্যান্য সুনির্দিষ্ট অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ প্রণীত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতি দমনে অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, তা ছাড়া সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি অঙ্গে দুর্নীতি দমন, সুশাসন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার জন্য ২০১২ সালে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল গৃহীত হয়েছে।
×