ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ধ্রুব হাসান

টেইলর সুইফট সাফল্যের বাঁধভাঙ্গা জোয়ার

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

টেইলর সুইফট সাফল্যের বাঁধভাঙ্গা জোয়ার

নবীন গীতিকার ও সঙ্গীতশিল্পী টেইলর সুইফট তো সঙ্গীতাঙ্গন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তার নতুন এ্যালবাম ‘১৯৮৯’ বের হওয়ার আগে থেকেই তিনি তার নতুন গানের মধ্য দিয়ে শ্রোতাদের কাছে নতুনরূপে ফিরে এসেছেন। আর সেই এ্যালবাম বের হওয়ার পর তো তার সাফল্যের বাঁধভাঙ্গা জোয়ারে সঙ্গীতবিষয়ক শীর্ষ তালিকাও যেন ভেসে যাচ্ছে। এ্যালবামটি বের হওয়ার প্রথম সপ্তাহেই ১২ লাখ ৮৭ হাজার কপি বিক্রি হয়েছে যা গত এক যুগের মধ্যে আর কারও হয়নি। তাই প্রথম সপ্তাহে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক এ্যালবাম বিক্রির রেকর্ড তার ঝুলিতেই ঢুকেছে। ১৯৮৯সালের ১৩ই ডিসেম্বর পেনসেলভেনিয়ায় টেইলর সুইফট জন্মগ্রহণ করেন। বেশ অল্প বয়সে তিনি কান্ট্রি গানের মাধ্যমে সঙ্গীতজগতে বিচরণ করার বিষয়ে আগ্রহী হন। সেই লক্ষ্যে এক ধাপ এগিয়ে যান ১৪ বছর বয়সে, যখন তার বাবা-মা ন্যাশভিলে বসবাস শুরু করেন। তখন ছিল ২০০৩ সাল, যদিও আগে থেকে এ ব্যাপারে আগ্রহ থাকলেও খুব একটা সাড়া পাননি। তবে ২০০৩ সাল তার জন্য ভাল ছিল। একটি সতন্ত্র রেকর্ড লেবেল ‘বিগ মেশিন রেকর্ডস’ এর সঙ্গে তিনি সে বছর চুক্তিবদ্ধ হন। এভাবে সেই রেকর্ড লেবেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার মধ্যদিয়ে তিনি সনি ও এটিভি মিউজিকের সর্বকনিষ্ঠ গীতিকার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হলেন। তার প্রথম এ্যালবাম ‘টেইলর সুইফট’ ২০০৬ সালে বের হয়ে তাকে কান্ট্রি ধাঁচের গানের মাধ্যমে তারকাখ্যাতি এনে দেয়। সেই এ্যালবামের ‘আওয়ার সং’ শীর্ষক গানটি হট কান্ট্রি গানের তালিকার প্রথম স্থান দখল করে। এ গানটি তিনি নিজেই লিখে সুর করেন মাত্র সতের বছর বয়সে। ২০০৮ সালের গ্র্যামি এওয়ার্ডসের জন্য তাই তিনি শ্রেষ্ঠ নবীন শিল্পী হিসেবে মনোনীত হন। তার দ্বিতীয় এ্যালবাম ‘ফিয়ারলেস’ ২০০৮ সালে বের হয়। ওই এ্যালবামের ‘লাভ স্টোরি’ ও ‘ইউ বিলং টু মি’ অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়। ‘ফিয়ারলেস’ ছিল ২০০৯ সালে আমেরিকার সর্বাধিক বিক্রিত এ্যালবাম। পরবর্তীতে এ্যালবামটি চারটি গ্র্যামি এওয়ার্ড জিতে নেয়। টেইলর সুইফট সর্বকনিষ্ঠ গায়িকা যিনি ‘এ্যালবাম অব দ্য ইয়ার’ বিভাগে গ্র্যামি এওয়ার্ড জয় করেন। টেইলর সুইফটের তৃতীয় এ্যালবাম ‘স্পিক নাও’ বের হওয়ার প্রথম সপ্তাহেই দশ লাখ কপি বিক্রি হয়। এ্যালবামটির ‘মিন’ গানটি ২০১২ সালে দুটো গ্র্যামি এওয়ার্ড জিতে নেয়। তার চতুর্থ এ্যালবাম ‘রেড’ যার বিক্রি ছিল প্রথম সপ্তাহেই বার লাখ কপি। এটা ছিল ওই সময়ের একটা রেকর্ড। আর টেইলর সুইফট একমাত্র গায়িকা যার এ্যালবামের বিক্রি প্রথম সপ্তাহেই এত বেশি ছিল। তার পঞ্চম এ্যালবাম ‘১৯৮৯’ এ বছরেই অক্টোবর মাসে বের হয়। বের হওয়ার প্রথম সপ্তাহেই তা গত বার বছরে বের হওয়া সমস্ত এ্যালবামকে ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়ে। প্রথম সপ্তাহেই দশ লাখ কপি এ্যালবাম বিক্রি হওয়ার ফলে তিনি ২০০২ সালের পর প্রথম শিল্পী যিনি এই সাফল্য দেখলেন। এই এ্যালবামের ‘শেক ইট অফ’ গানটি সিঙ্গেল হিসেবে ছাড়ার পর বিলবোর্ড হট ১০০ গানের তালিকার শীর্ষ স্থানে ছিল। এরপর তার সেই গানটিকে পেছনে ফেলেছে তার নতুন এ্যালবামের দ্বিতীয় সিঙ্গেল ‘ব্যাংক স্পেস’। এর ফলে তিনি বিলবোর্ডের ৫৬ বছরের ইতিহাসের মধ্যে প্রথম শিল্পী যার এমন হলো। ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতাকে টেইলর সুইফট তার গানের মধ্য দিয়ে বর্ণনা করে থাকেন। গীতিকার হিসেবে তিনি ন্যাশভিল সংরাইটার্স এ্যাসোসিয়েশন ও সংরাইটার্স হলো অব ফেমের পক্ষ থেকে সম্মাননা পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত তার অর্জনের মধ্যে আছে সাতটি গ্র্যামি এওয়ার্ডস, বারটি বিলবোর্ড মিউজিক এওয়ার্ডস, এগারটি কান্টি মিউজিক এ্যাসোসিয়েশন এওয়ার্ডস ও সাতটি একাডেমি অব কান্ট্রি মিউজিক এওয়ার্ডস। মূলত কান্ট্রি ধাঁচের গান দিয়ে শুরু করলেও টেইলর সুইফটের এখনকার গানে পপ ধাঁচের প্রভাব বেড়ে গেছে। দেখা যাক ভবিষ্যতে তিনি শ্রোতাদের জন্য আর কি কি চমক নিয়ে হাজির হন।
×