ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের সঙ্গে মতের মিল না হলেও জিওপি নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেসের

অন্তর্দ্বন্দ্বে রিপাবলিকানরা

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৩ জানুয়ারি ২০১৭

অন্তর্দ্বন্দ্বে রিপাবলিকানরা

মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটনে রিপাবলিকানরা হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেস নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে চলতি মাসে অনেক অভিন্ন লক্ষ্য নিয়েই ক্ষমতায় বসবেন। কিন্তু আগামী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দলীয় নেতারা সরকারী কর্মসূচীর অগ্রাধিকার নিয়ে সর্বদাই একমত না হওয়ায় দলটিকে অভ্যন্তরীণ উত্তেজনার মুখে পড়তে হবে। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি (জিওপি) বা রিপাবলিকান পার্টি নির্বাচনের দিন হোয়াইট হাউস, সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদে জয়ী হওয়ার পর সিনেট মেজরিটি লিডার মিচ ম্যাককনেল দলীয় নেতাদের তাদের নিরঙ্কুশ বিজয়কে একপেশে দলীয় এজেন্ডাকে পাস করিয়ে নেয়ার লাইসেন্স হিসেবে গণ্য করার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেন। ম্যাককনেল সাংবাদিকদের বলেন, কোন নির্বাচনের পর বাড়াবাড়ির পরিচয় দেয়া সাধারণভাবে বলতে গেলে ভুলই হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সিনেটে আধিকাংশ বিল পাস করতে হলে ডেমোক্র্যাটদের ভোটের দরকার হবে। আমি মনে করি না, আমাদের এমন আচরণ করা উচিত, যেন আমরা চিরদিন সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভোগ করতে যাচ্ছি। ক্যাপিটলের অন্যদিকে প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকানরা কয়েক বছর ধরে এক ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্টের শাসনে ত্যক্তবিরক্ত থাকার পর এ্যাফোর্ডেবল কেয়ার এ্যাক্ট ও অন্যান্য নীতিতে আমূল পরিবর্তন আনার জন্য চাপ দিচ্ছেন। তারা তাদের সিনেট সহকর্মীদের তুলনায় আরও দ্রুত এ কাজটি সম্পন্ন করতে চান। কিন্তু যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন জিওপির এজেন্ডার অনেকাংশকে আইনে পরিণত করার পক্ষে সহায়ক হবে, কিন্তু ভিন্নমত পোষণে অভ্যস্ত এ নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট প্রথাগত রিপাবলিকান ধ্যানধারণা মেনে চলতে যে বাধ্য নন, তা দেখিয়েছিল। এটি ট্রাম্প এবং বাজেট নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান এমন কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে উত্তেজনার ক্ষেত্র তৈরি করছে। কারণ ট্রাম্প কর হ্রাস করা এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ধরনের অর্থ ব্যয় করা- উভয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান আর কংগ্রেস নেতারা ঘাটতি অর্থ সংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য টমাস ম্যান্সি বলেন, মূল কথা হলো আমাদের বাজেটের ওপর দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা চাই না, প্রতিনিধি পরিষদ সিনেট ও হোয়াইট হাউসকে নিয়ন্ত্রণ করে আসলেই বাজেট ঘাটতি বাড়াতে। ট্রাম্প তার প্রচার অভিযানে নতুন অবকাঠামো নির্মাণে এক ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করার আহ্বান জানান। তিনি এ বিষয়ে সাধারণত বেসরকারী অর্থ সংস্থানের ওপর নির্ভর করতে চান। কিন্তু বেসরকারী অর্থ সেই ব্যয় মেটানোর পক্ষে খুবই অপ্রতুল হবে বলে শিল্প বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন। কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা এফোর্ডেবল কেয়ার এ্যাক্ট বাতিল বা প্রতিস্থাপনের মতো ইস্যুগুলোতে মোটামুটি প্রায়ই একমত হয়ে থাকেন। কিন্তু এ সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে তাদের মধ্যে দ্রুত মতপার্থক্য দেখা দেয়। দৃষ্টান্তস্বরূপ প্রতিনিধি পরিষদের অনেক রিপাবলিকান সদস্য কংগ্রেসের আগামী দু’বছরের অধিবেশনের মধ্যেই স্বাস্থ্যসেবা আইনটির পুরোপুরি সংস্কার সাধনে আগ্রহী। কিন্তু সিনেটের অনেক রিপাবলিকানই এ সময়সীমাকে অবাস্তবসম্মত বলে মনে করেন। অন্যান্য ইস্যুতে সিনেট প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্যদের ও ট্রাম্পকে হতাশ করতে পারে। অভিবাসন ব্যবস্থাকে নতুন করে কার্যকর করা, সরকারী ব্যয় বিল পাস এবং ফেডারেল সরকারের অর্থ ঋণ করার সীমা বৃদ্ধির মতো বড় বড় অধিকাংশ নীতিনির্ধারণী কাজে সিনেটে ৬০ ভোটের প্রয়োজন হবে। যেহেতু সিনেটের ১০০টি আসনের মধ্যে রিপাবলিকানদের মাত্র ৫২টি আসন রয়েছে, সেহেতু অধিকাংশ বিল পাস হতে হলে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক উভয় দলের সমর্থনেরই প্রয়োজন হবে। প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকানরা বলছেন, তারা সিনেটের হাতে নীতিনির্ধারণের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছেন না। রিপাবলিকান ডেনিস রস বলেন, আমরা প্রতিনিধি পরিষদে সহযোগিতা করব, কিন্তু নতিস্বীকার করব না। চলতি মাসেই উত্তেজনার লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। তখন ট্রাম্পের মনোনীত কেবিনেট সদস্যদের নাম অনুমোদন প্রশ্নে সিনেটে শুনানি ও ভোটাভুটি হবে। কট্টর পররাষ্ট্রনীতির সমর্থক এমন কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য এক্সন মোবিল কর্পোরেশনের প্রধান হিসেবে রেক্স টিলারসনের দায়িত্ব পালনকালে রাশিয়ার সঙ্গে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তোলা নিয়ে উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন। ট্রাম্প টিলারসনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে মনোনীত করতে চান।
×