ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

উপকূলে জামায়াতকে চাঙ্গা করতে মাঠে পাঁচ নারী কর্মী

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

উপকূলে জামায়াতকে চাঙ্গা করতে মাঠে পাঁচ নারী কর্মী

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৭ ডিসেম্বর ॥ জামায়াতের পাঁচ নারী কর্মীর কর্মকা- সম্পর্কে পুলিশ বিস্তারিত তথ্য উদ্ঘাটনে সক্ষম হয়েছে। এরা সবাই এ অঞ্চলে সংগঠনটির কর্মকা- পরিচালনার পাশাপাশি সকল ধরনের অর্থায়ন করে আসছে। বর্তমানে একজন আসামি জেলহাজতে রয়েছে। বাকিরা জামিনে রয়েছে। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আতিক এ প্রতিনিধিকে বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছিলেন। বদলির কারণে বর্তমানে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয়েছে এসআই হাফিজকে। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, কুয়াকাটা, পায়রা বন্দরসহ কলাপাড়া উপজেলা হতে যাচ্ছে দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ এলাকা ঘিরে চলছে বিভিন্ন ধরনের সরকারী মেগা প্রকল্প। বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট। তাই গুরুত্বপূর্ণ এ এলাকায় জামায়াত তাদের সংগঠন শক্তিশালী করতে গড়ে তুলেছে শক্তপোক্ত নেটওয়ার্ক। তারা গোপনে গোপনে নিয়মিত সভা চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ১৪ মে কুয়াকাটার আজিমপুর গ্রামের জামায়াতের শীর্ষ নেতা মাওলানা নুরুল ইসলামের বাড়িতে গোপন সভা চলাকালে পুলিশ হানা দেয়। তখন পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া সেখান থেকে জামায়াতের কুয়াকাটার সাংগঠনিক কর্মকা-ের পরিকল্পনার খাতাপত্র, চাঁদা আদায়ের রশিদ, চাঁদা দাতাদের রশিদ বই, নগদ টাকা, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করে। একই তারিখে মহিপুর থানার এসআই মনিরুজ্জামান ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় জামায়াতের পাঁচ নারী কর্মী হলেন- মেহের আলীর স্ত্রী জয়নব রানী, মাওলানা হাবিবুর রহমানের স্ত্রী নাজমা হাবিব, মাওলানা আব্দুল মান্নানের মেয়ে জোবায়দা, মাওলানা আব্দুল মান্নানের স্ত্রী মোসাঃ হালিমা ও মোসাঃ তাসলিমা। এখানে সবার স্বামীর নাম উল্লেখ থাকলেও স্বামীর নাম গোপন করেছেন জোবায়দা। তিনি মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজের শিক্ষক। এরা ছাড়াও বেশ কয়েকজন মাদ্রাসা, কলেজ ও স্কুলশিক্ষক রয়েছেন, যাদের এসব কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তবে এ অঞ্চলে জামায়াত তাদের নারী সংগঠনকে চাঙ্গা করতে নতুন কৌশলে এগোচ্ছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। পুলিশ চাঁদা আদায়ের রশিদ পর্যালোচনা করে দাতাদের নাম সংগ্রহ করেছে। যাদের মূলত নিষিদ্ধ সংগঠনের অর্থায়নকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এমনকি পটুয়াখালী জেলার কার্যক্রমও চলত কুয়াকাটায় বসে। উপকূলীয় সাগরপারের এ জনপদে বিশেষ কোন বাহিনীর দৃশ্যমান অভিযান না হওয়ার সুযোগে জামায়াত তাদের পুরুষ সংগঠনের পাশাপাশি নারী সংগঠনকে চাঙ্গা করতে থাকে। ১৪ মে সভার পর পুলিশ এদের কর্মকা- সম্পর্কে আরও ব্যাপক অনুসন্ধানে নেমে পড়ে। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠপর্যায়ে পুরুষ-নারী যারা এমন কর্মকা-ে জড়িত রয়েছে, তাদের সম্পর্কে খোঁজ-খবরে নেমেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাফিজ জানান, মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলছে। এজাহারকৃত আসামি ছাড়াও অজ্ঞাত আসামিদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।
×