স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আইসিসি বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার হয়েছেন বাংলাদেশ ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। বৃহস্পতিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ ঘোষণা দিয়েছে ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম কোন ক্রিকেটার আইসিসির বর্ষসেরা কোন বিভাগে পুরস্কার জিতলেন। তিনি বিশ্বকাঁপানো পেসার মুস্তাফিজ।
আইসিসির ২০১৫-১৬ মৌসুমে এত বড় অর্জনের পর আইসিসিকে মুস্তাফিজ জানান, ‘এখন পর্যন্ত এটা আমার ক্যারিয়ারের সেরা প্রাপ্তি। এই পুরস্কার সামনের বছরগুলোতে আমাকে আরও ভাল খেলতে উৎসাহিত করবে। এ পুরস্কার জিতে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি। বিশেষ করে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই অর্জনে সত্যিই আমি আনন্দিত।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সব ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার। এখানে খেলাটা সবসময়ই আকাক্সিক্ষত এবং আনন্দের। আমার জন্য এই স্বপ্নটা সত্যি হয়ে ধরা দিয়েছে। যারা আমাকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাদের কারণেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে আমি আরও বেশি আনন্দের উপলক্ষ বয়ে আনতে পারব।’
এর আগে আইসিসি বর্ষসেরা তালিকায় সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালসহ অনেকেই জায়গা করে নিতে পেরেছেন। কিন্তু কেউই বর্ষসেরা কোন বিভাগে পুরস্কার জিততে পারেননি। মুস্তাফিজ প্রথম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে তা জয় করলেন।
এমনদিনে আবার দীর্ঘ আট মাস পর জাতীয় দলে জার্সি গায়ে জড়িয়ে খেলতে নামেন মুস্তাফিজ। নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে খেলেন। দুর্দান্ত বোলিংও করেন। ৭ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন। যদিও দল হারে। তবুও মুস্তাফিজের খেলায় সবার মধ্যেই স্বস্তি এসেছে।
গত বছর ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে এ বছর ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পারফরম্যান্স বিবেচনায় মুস্তাফিজকে এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এই সময়ে তিন ওয়ানডেতে মুস্তাফিজ নিয়েছেন ৮ উইকেট। ১০টি টি২০ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১৯ উইকেট। এ বছর এখন পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলা হয়নি মুস্তাফিজের। তবে গত বছর উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছেন। ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় লাগিয়ে দিয়েছেন।
গত বছর টি২০ দিয়ে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ান। ১৩টি টি২০ ম্যাচ খেলে ২২ উইকেট শিকার করেন। ওয়ানডে ও টেস্টেও অভিষেক হয় একই বছর। ৯ ওয়ানডে খেলে ২৬ উইকেট নেন। আর ২ টেস্ট খেলে নেন ৪ উইকেট। এ বছর কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচেই খেলা হয়নি মুস্তাফিজের। গত বছর এশিয়া কাপ টি২০ ও টি২০ বিশ্বকাপেও সব ম্যাচ খেলতে পারেননি। ইনজুরিতে আক্রান্ত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত মার্চে টি২০ বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়ন দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে আইপিএল মাতিয়ে খানিক ইনজুরিতে পড়েন মুস্তাফিজ। এরপর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে ঠিক হয়ে আবার ইংল্যান্ডের ন্যাটওয়েস্ট টি২০ ব্লাস্টে খেলে জুলাইয়ে ইনজুরিতে পড়েন। তারপর করা হয় কাঁধে অস্ত্রোপচার। সেই থেকে চলে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৫ মাস পর আবার কোন ম্যাচে খেলেন। সেটি জাতীয় দলের হয়ে।
জাতীয় দলের হয়ে আবার খেলায় মুস্তাফিজ যেমন স্বস্তি পান। তেমনিভাবে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও মুস্তাফিজকে আবার বল হাতে দেখে আনন্দ পান। এমন আনন্দের দিনে সুখবর মিলে। দেশের হয়ে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার হন মুস্তাফিজ।
ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
