ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

গাইবান্ধার জব্বার ম-লসহ ৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

গাইবান্ধার জব্বার ম-লসহ ৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গাইবান্ধা সদর উপজেলার আব্দুল জব্বার ম-লসহ ছয় রাজাকারের বিরুদ্ধে চার অভিযোগে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনে দাখিল করা হয়েছে। তদন্ত সংস্থার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ হেলাল উদ্দিন ছয় খ-ে ৯৫৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহার কাছে হস্তান্তর করেছেন। এর আগে ধানম-ির তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আব্দুল জব্বার ম-লসহ ৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটি তদন্ত সংস্থার ৪৪তম তদন্ত প্রতিবেদন। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মোঃ হেলাল উদ্দিন ছয় খ-ে ৯৫৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন। ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর থেকে তদন্ত শুরু করে ২১ ডিসেম্বর শেষ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ৪০ জনকে প্রসিকিউশনের সাক্ষী করা হয়েছে। আব্দুল জব্বার ম-ল ছাড়া এ মামলায় অন্য পাঁচ আসামি হলেন জাছিজার রহমান ওরফে খোকা (৬৪), আজগর হোসেন খান (৬৬), মোন্তাজ আলী ব্যাপারী (৬৮), আব্দুল ওয়াহেদ ম-ল (৬২) ও মোঃ রনজু মিয়া (৫৯)। আসামিদের মধ্যে শুধু রঞ্জু মিয়া আটক রয়েছেন। বাকিরা পলাতক। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী চার অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে। বুধবার তদন্ত সংস্থার ধানম-ি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সংস্থার সমন্বয় কর্মকর্তা সানাউল হক। ৬ রাজাকারই জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ২৯ মে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে তাদের মধ্যে রঞ্জু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের মধ্যে আনা চার অভিযোগ প্রথম অভিযোগ ॥ ১৯৭১ এর জুন মাসের প্রথম দিকে আজগর হোসেন খানের নেতৃত্বে ৮-১০ জন রাজাকার এবং ১৫-২০ জন পাকিস্তান দখলকার সেনাবাহিনী গাইবান্ধার সদরে সাহাপাড়া ইউনিয়নের বিঞ্চপুর গ্রামে হিন্দুদের বাড়িতে হামলা করে। তারা অম্বিকা চরন সরকার, দ্বিজেন চন্দ্র সরকার ও আব্দুল মজিদ প্রধানকে নির্যাতন করে। আসামিরা ফুল কুমারী রানী ও তার জা সাধনা রানী সরকার (বর্তমানে মৃত) আটক করে নির্যাতন করে। তারা মুসলমান হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে কপালের সিঁদুর এবং হাতের শাখা ভেঙ্গে দিয়ে ছেড়ে দেয়। দ্বিতীয় অভিযোগ ॥ গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন সাহাপাড়া ইউনিয়নের নান্দিনা গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আবু বক্কর, তারা আকন্দ, আনছার আলী এবং নছিম উদ্দিন আকন্দসহ মোট ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করে এবং ৪০-৫০টি বাড়ির মালামাল লুণ্ঠন করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তৃতীয় অভিযোগ ॥ গাইবান্ধা জেলার সদর থানার সাহাপাড়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে লাল মিয়া বেপারী, আব্দুল বাকী এবং খলিলার রহমানসহ ৫ জনকে গুলি করে হত্যা করে। চতুর্থ অভিযোগ ॥ গাইবান্ধার সাহাপাড়া ইউনিয়নের নান্দিনা, মিরপুর, সাহারবাজার, কাশদহ, বিসিক শিল্প নগরী, ভবানীপুর এবং চকগায়েশপুর গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক, ইসলাম উদ্দিন এবং নবীর হোসেনসহ মোট ৭ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
×