ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ যাত্রায় সান্তিয়াগোর পথে বিপ্লবীর ভস্ম

দুই কমরেডের প্রতীকী পুনর্মিলন!

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

দুই কমরেডের প্রতীকী পুনর্মিলন!

কিউবার প্রয়াত বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ট্রোর দেহভস্মবাহী একটি শকট রাজধানী হাভানা ছেড়ে দেশের পূর্বাঞ্চলে চূড়ান্ত গন্তব্যের পথে রওনা হয়েছে। রাজধানী হাভানা ছেড়ে বুধবার শকটটি কিউবার পূর্বাঞ্চলীয় সান্তিয়াগো দ্য ক্যুবার পথে যাত্রা শুরু করে। সেখান থেকেই ৬০ বছর আগে ক্যাস্ট্রো কিউবার গণমানুষের মুক্তির স্বপ্নে বিপ্লব শুরু করেছিলেন। সান্তা ক্লারা শহরে বৃহস্পতিবার কিউবা বিপ্লবের অপর কিংবদন্তি আর্নেস্ত্রো ‘চে’ গুয়েভারার সমাধিতে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যাস্ট্রোর দেহভস্ম। যা ছিল দুই কমরেডের প্রতীকী পুনর্মিলন। একটি ট্রেইলারে পতাকা দিয়ে ঢাকা একটি বাক্সে রাখা কাস্ত্রোর দেহভস্ম টেনে নিয়ে যাচ্ছে সবুজ একটি সামরিক জিপ। ওই বাক্সটির চারপাশে সাদা ফুল রেখে বাক্সটি কাঁচে ঢেকে দেয়া হয়েছে। জিপটি বুধবার মধ্যরাতে সান্তা ক্লারা শহরে প্রবেশ করে এবং দেশভস্ম চে’র সমাধিতে রাখা হয়। আজনিয়ার সানচেজ নামে এক মেডিক্যাল টেশনিশিয়ান বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক পুনর্মিলন। এই দুই কমরেড কিউবা ও মানবতার ইতিহাস পরিবর্তন করেছিলেন। এরপর দেহভস্মবাহী শকটটি বিপ্লবকালীন সেই বারুদগন্ধী পথগুলো পাড়ি দিয়ে রবিবার সকালে সান্তিয়াগো দ্য ক্যুবায় প্রবেশ করবে। ‘কিউবাকে কিউবাবাসীর কাছে ফিরিয়ে দিয়ে’, তাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিশ্বমানে পৌঁছে দিয়ে ‘কমাদান্তে’ যাচ্ছেন বিশ্রামে, তাই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিউবানরা ছোট ছোট জাতীয় পতাকা দুলিয়ে ‘ফিদেল!, ফিদেল!’ শ্লোগানে তাকে বিদায় জানাচ্ছেন, এমন দৃশ্যই দেখা গেছে বুধবার দিনজুড়ে। ৪৯ বছর ধরে ক্যারিশমা ও লৌহকঠিন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে দেশ শাসন করছেন ফিদেল। পুঁজিবাদের কেন্দ্রস্থল যুক্তরাষ্ট্রের নাকের ডগায় একটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে যুগের পর যুগ ধরে তাকে মর্যাদার সঙ্গে টিকিয়ে রেখেছেন। হাভানার ১৬০ কিলোমিটার পূর্বের জোভেলানোস টাউনের বাসিন্দা গুইলেরমো কাদিজ (৮৩) বলেন, ফিদেল কিউবার সবকিছু ছিলেন, আমরা তার অভাব বোধ করবো। পূর্বাঞ্চলীয় সিয়েরা মায়েস্ত্রা পবর্তমালার বিপ্লবী বাহিনীতে ফিদেলের সঙ্গে থেকে লড়াই করা এই বিপ্লবী বলেন, তার মতো মানুষ আর আসবে না। একই শহরের বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত ইরাম পেদরেরোস ফিদেলের মৃত্যুকে ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ বলে বর্ণনা করেন। ১৯৫৩ সালে এই সান্তিয়াগো দ্য ক্যুবার মনকাদা সেনাছাউনি আক্রমণের মধ্য দিয়েই বিপ্লব শুরু করেছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো। হাভানায় আসার পথে বিভিন্ন শহরে ও টাউনে থেমে থেমে এক সপ্তাহ পর রাজধানীতে পৌঁছান ফিদেল। এবার সেই পথেই তার দেহভস্ম ফিরে যাচ্ছে সেই সিয়েরা মায়েস্ত্রা পাহাড়ের দেশ সান্তিয়াগো দ্য ক্যুবাতে। এরপর থেকে চিরদিনের জন্য এখানেই বিশ্রাম নেবেন এই চিরবিপ্লবী। -এএফপি ও ওয়েবসাইট
×