ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যাস্ট্রোর দেখা ১১ মার্কিন প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২৭ নভেম্বর ২০১৬

ক্যাস্ট্রোর দেখা ১১ মার্কিন প্রেসিডেন্ট

কিউবার সদ্যপ্রয়াত নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো ছিলেন বিশ শতকের কিংবদন্তি। কিউবায় সমাজতন্ত্র টিকে আছে মূলত তারই অনুপ্রেরণায়। তিনি দীর্ঘদিন দেশটি শাসন করেন। এ সময় ১১ জন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তিনি হোয়াইট হাউসে আসতে-যেতে দেখেন। তার দেখা প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডুয়েট আইসেন হাওয়ার। তিনি কিউবার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন। সবশেষে দেখেন বারাক ওবামাকে, যিনি কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে অগ্রসর হয়েছিলেন। ক্যাস্ট্রো শুক্রবার রাতে মারা যান। এগারো মার্কিন প্রেসিডেন্টের শাসনামল তার যেভাবে কাটে- আইসেন হাওয়ার (রিপাবলিকান, ১৯৫৩-১৯৬১) ॥ তিনি কিউবার একনায়ক ফুলজেন্সিও বাতিস্তাকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেন। ক্যাস্ট্রোর নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা বাতিস্তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পর হাওয়ার কিউবার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন। জন এফ কেনেডি (ডেমোক্র্যাট, ১৯৬১-১৯৬৩) ॥ কেনেডির সময় কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি অবনতি ঘটে। কেনেডি ১৯৬২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কিউবার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ওই বছরের অক্টোবরে মিসাইল সঙ্কট দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে নিয়ে যায়। লিন্ডন জনসন (ডেমোক্র্যাট ১৯৬৩-১৯৬৯) ॥ জনসন কিউবার বিরুদ্ধে অবরোধ আরও তীব্রতর করেন। এছাড়া সোভিয়েত ব্লকভুক্ত দেশগুলোর কাছে কিউবা থেকে নিকেল রফতানি আটকানোরও চেষ্টা করেন। রিচার্ড নিক্সন (রিপাবলিকান, ১৯৬৯-১৯৭৪) ॥ পূর্বসূরির মতো তিনিও সোভিয়েত ব্লকভুক্ত পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোতে নিকেল রফতানিতে বাধা দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। এছাড়া তিনি ক্যাস্ট্রোবিরোধী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে কিউবান জেলেদের আটক করার উদ্যোগ নেন। জেরাল্ড ফোর্ড (রিপাবলিকান, ১৯৭৪-১৯৭৭) ॥ তার আমলে বহির্বিশ্বে কিউবার মিশনগুলোতে আক্রমণ বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ৭৩ জন আরোহী নিয়ে একটি কিউবার প্লেন বিধ্বস্ত হওয়া। জিমি কার্টার (ডেমোক্র্যাট ১৯৭৭-১৯৮১) ॥ তিনি কিউবার বিরুদ্ধে আরোপিত অবরোধ কিছুটা শিথিল করার উদ্যোগ নেন। তার সময়ে দুই দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে ওয়াশিংটন ও হাভানায় দুটো অফিস খোলা হয়। প্রবাসী কিউবানদের নিয়ে গঠন করেন কিউবান-আমেরিকান ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন। রোনাল্ড রিগ্যান (রিপাবলিকান, ১৯৮১-১৯৮৯) ॥ ক্যাস্ট্রোবিরোধী প্রবাসী কিউবানদের কথা প্রচারের জন্য একটি রেডিও ও টিভি স্টেশন তার সময় চালু করা হয়। ১৯৮৪ সালে তিনি প্রথম অভিবাসন চুক্তিটি করেন। জর্জ বুশ (রিপাবলিকান, ১৯৮৯-১৯৯৩) ॥ তার সময়ে ক্যাস্ট্রোবিরোধী সংগঠনগুলো মার্কিন সরকারের আরও পৃষ্ঠপোষকতা পায়। অবরোধ আরও জোরদার করতে প্রণয়ন করেন বিতর্কিত টরিসেলি আইন। বিল ক্লিনটন (ডেমোক্র্যাট ১৯৯৩-২০০১) ॥ তিনি টরিসেলি আইন ছাড়াও কিউবার ওপর অবরোধ জোরদার করতে প্রণয়ন করেন হেমস-বার্টন আইন। তার সময় যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখে কিউবান অভিবাসীদের ঢল নামে। জর্জ ডব্লিউ বুশ (রিপাবলিকান, ২০০১-২০০৯) ॥ তিনি কিউবার ওপর অবরোধ জোরদার করা ছাড়াও ক্যাস্ট্রোবিরোধী সংগঠনগুলোকে আর্থিক ও অন্যান্য পৃষ্ঠপোষকতা করেন। বারাক ওবামা (ডেমোক্র্যাট ২০০৮- বর্তমান) ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে একমাত্র ওবামার সময়ই কিউবা-মার্কিন সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার দিকে এগিয়েছে। তিনি দেশটির ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেন। ১৯২৮ সালের পর প্রথম ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি চলতি বছরের মার্চে কিউবা সফর করেন। -এএফপি
×