ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সেরা পাঁচ বুদ্ধিমান

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

সেরা পাঁচ  বুদ্ধিমান

আইকিউ টেস্ট মানুষের বুদ্ধি পরিমাপের একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। তোমাদের জেনে রাখার সুবিধার জন্য বলি,সাধারণ বুদ্ধিমানদের আইকিউ স্কোর ৯০-১০৯-এর মধ্যে। ১২০-১২৯ যাদের আইকিউ তারা উচ্চ শ্রেণীর বুদ্ধিমান। আর ১৩০-এর বেশী আইকিউ হলে তারা অসাধারণ। ১৪৫-এর বেশী যাদের আইকিউ তারা জিনিয়াস। ৬৯-এর নীচে হলে তাদের বুদ্ধি কম বলেই ধরা হয়। আইকিউ পরীক্ষায় ৯৫ শতাংশ মানুষের আইকিউর গড় মান ৭০-১৩০-এর মধ্যে। বন্ধুরা, তোমাদের মনে নিশ্চয়ই এই প্রশ্ন আসবে যে, অসাধারণ বুদ্ধিমানদের আইকিউ স্কোর কত? প্রশ্নটির উত্তর দেয়া খুব কঠিন। কারণ, আইকিউ পরীক্ষা পদ্ধতিটি সাজানো হয় সাধারণের জন্য। অনেকেই দাবি করছেন সাধারণের উর্ধে যারা তাদের জন্য আলাদা পরীক্ষা নেয়া উচিত। যাই হোক, আমরা তোমাদের জন্য আইকিউ টেস্টের ভিত্তিতে পৃথিবীর সেরা পাঁচ বুদ্ধিমানের তথ্য জানাচ্ছিÑ ১. উইলিয়াম জেমস সিডস্্ উইলিয়ামসের এই তালিকায় ১ নম্বর অবস্থানটি নিয়ে বিতর্ক আছে। তার সময় আইকিউ টেস্ট এখনকার মতো উন্নত হয়নি। তবে এখন সর্বাধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতিতেও তার অবস্থান দ্বিতীয়। আবার বেশিরভাগ তালিকাতেই তার অবস্থান প্রথম। তাই তাকে আমরা প্রথম স্থানে রাখছি। উইলিয়াম জেমস সিডসের জন্ম ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। তাকে বলা হয় বিস্ময় শিশু। ১৮ মাস বয়সে তিনি পত্রিকা পড়তে পারতেন। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি আটটি ভাষায় কথা বলতেন। সে সময় তিনি নিজেও একটি ভাষা আবিষ্কার করেন নামÑ ডেনডারগুড। পরিণত বয়সে তিনি মোট চল্লিশটি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। ১১ বছর বয়সে তিনি হার্ভাডে যোগ দেন ছাত্র হিসেবে। তার গ্রাজুয়েশন শেষ হওয়ার আগেই তিনি হার্ভার্ড ম্যাথমেটিক্যাল ক্লাবে চতুর্মাত্রিক বিষয়ে লেকচার দিতেন। তোমরা জেনে খুশি হবে তিনি সব সময় ছিলেন যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদকারী। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি প্রবল প্রতিবাদ করেন। তাকে বলা হয় ম্যাথমেটিক্যাল জিনিয়াস। খুব কম বয়সে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। তার ছাত্ররা ছিল তার দ্বিগুণ বয়সী। তাই তাকে মানতে চাইত না। হতাশা পেয়ে বসে তাকে । একসময় শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। মাত্র ছেচল্লিশ বছর বয়সে তিনি মারা যান। এবার আসি তার আইকিউর কথায়। অনেকেই একমত যে তার আইকিউ মাপা কোন প্রচলিত পরীক্ষায় সম্ভব না। তবু পরীক্ষকরা তার আইকিউর মান নির্ধারণ করেনÑ ২৫০ থেকে ৩০০-এর মধ্যে। বলা হয় বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে তিনি সব সময়ই নিজের বয়সের চাইতে তিনগুণ এগিয়ে ছিলেন! ২. টেরেন্স টাও ইতিহাসে তিনি একজন বিস্ময় শিশু হিসেবে গণ্য। মাত্র দুই বছর বয়সে পাটিগণিতের মৌলিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারতেন। শুনলে অবাক হবে মাত্র ৯ বছর বয়সে কলেজে ভর্তি হন আর পিএইচডি অর্জন করে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ২০ বছর বয়সে। ২৪ বছর বয়সে ইউসিএনএতে পূর্ণ অধ্যাপক। তোমরা তো এখন গণিত অলিম্পিয়াডের নামের সঙ্গে পরিচিত তাই নয়? কেউ কেউ হয়ত অংশও নিয়েছ। মজার কথা তোমরা কি জানো, গণিত অলিম্পিয়াডে সর্বকনিষ্ঠ স্বর্ণপদক বিজয়ী কে? বুঝে ফেলছো এতক্ষণে না? হ্যাঁ টেরেন্স টাও মাত্র ১৩ বছর বয়সে! তার আইকিউ ২৩০। ৩. ত্রিস্টোফার হিরাটা শুধু আইকিউ নয় সবদিক মিলিয়ে হিরাটা পৃথিবীর অন্যতম স্মার্ট মানুষ হিসেবে গণ্য। বিস্ময় শিশুর এক অসাধারণ উদাহরণ তিনি। ১৪ বছর বয়সে তিনি ক্যালটেকে নাম লেখান আর মাত্র ষোলো বছর বয়সে তিনি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসায় যোগ দেন। এস্ট্রোফিজিক্সে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইডি ডিগ্রী অর্জন করেন মাত্র ২২ বছর বয়সে। জানো বন্ধুরা, এই হিটারাও সর্বকনিষ্ঠ আমেরিকান হিসেবে মাত্র ১৩ বছর বয়সে পদার্থবিদ্যা অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক জয় করেন। তার আই আইকিউ রেকর্ড ২২৫। ৪. কিম উং ইয়ং কিম বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেন শৈশবেই। মাত্র ২ বছর বয়সে চারটি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারতেন। ৪ বছর বয়সে কলেজ কোর্সে অডিট শুরু করেন। নাসার কথা তো আগেই বলেছি না? পৃথিবীর সেরা এই মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান মাত্র ৮ বছর বয়সে কিমকে সেখানে কাজের আমন্ত্রণ জানায়। কিম যোগ দেন নাসায় এবং ১৬ বছর বয়সে নাসা ত্যাগ করেন। তাকে কোরিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিমের স্বপ্ন ছিল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হবেন। তাই সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। ২১০ স্কোর নিয়ে তার অবস্থান এই তালিকায় চতুর্থ। ৫. ক্রিস্টোফার মাইকেল লাংগাল তাকে বলা হয় আমেরিকার স্মার্টেস্ট মানুষদের একজন। কথা বলা শুরু করেন মাত্র ছয় মাস বয়সে এবং নিজে নিজেই পড়তে শেখেন তিন বছর বয়সে। তোমরা জানো, ঝঅঞ পরীক্ষায় পারফেক্ট স্কোর তার। শুনলে অবাক হবে, মনটানা ইউনিভার্সিটি তার ছাত্রত্ব কেন বাতিল করেছিল? উনি শিক্ষকদের চেয়ে বেশি জানতেন যে! বেচারা শিক্ষকদের অবস্থাটা ভাব একবার? তাকে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আত্মবিশ্বাসী মানুষও বলা হয়। তিনি ঈঞগট প্রবর্তন করেন যাকে বলা হয়-‘ঈড়মরহঃরাব ঞযবড়ৎবঃরব গড়ফবষ ড়ভ ঃযব টহরাবৎং’. ১৯৫টি আইকিউ স্কোর নিয়ে তার অবস্থান পঞ্চম। বন্ধুরা, তোমরা তো নিশ্চয়ই নিউটন, আইনেস্টাইন, স্টিফেন হকিং এমন বড় বড় সব বিজ্ঞানীর নাম শুনেছ। এই তালিকায় তারা নেই দেখে অবাক হচ্ছো কি? অবাক হওয়ার কিছু নেই; যদিও তাদের সবার আইকিউ ১৪৫ অর্থাৎ জিনিয়াস লেভেল এর ওপরে। কিন্তু এসব থেকে তোমরা একটা জিনিস শিখতে পার। সেটা হলো অনেক বড় কিছু করতে হলে যে খুব বেশি আইকিউ স্কোর থাকতে হবে তা নয়। সাধারণ আইকিউ স্কোর নিয়ে চেষ্টা করলে তোমরাও তাদের মতো বড় কিছু করতে পারবে । বহঁধশরষ@মসধরষ.পড়স
×