সকালে সেলফোনের রিং শুনে ঘুম ভাঙ্গে অনার্স সেকেন্ড ইয়ার পড়ুয়া শাহেদের। বিকেলে ফুসকা খাওয়ানোর বিনিময়ে গতকালের কোচিংসিট নেয়ার বিনীত অনুরোধ জানায় অপর প্রান্তের প্রিয় বন্ধুটি। শাহেদ চিন্তা না করেই রাজি হয়ে যায়। কর্মব্যস্ত জীবনে মানুষ কতভাবেই না অবসর কাটাতে ভালবাসে। কাজের ফাঁকে ক্ষণিকের অবসরে কেউ প্রিয়জনকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যায়, কেউ শপিংয়ে ব্যস্ত থাকে। আবার কেউ বা শাহেদের মতো বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-প্রিয়জন কিংবা সহকর্মীকে নিয়ে বসে ফুসকা অথবা চটপটির আড্ডায়। আবার কেউ নিছক শখের বসে, কেউ শুধু ভাললাগার খাতিরে ভিড় জমায় আড্ডায়। প্রতিদিন না হোক অন্তত সপ্তাহের একটা দিন ফুচকার দোকানে একটু সময় কাটিয়ে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে অনেকেই। চটপটি কিংবা ফুচকা খেতে খেতে একদিকে যেমন গল্প-আড্ডায় বিরক্তিকর সময় কাটে, আবার তেমনি অপরদিকে মনটা হয় চাঙ্গা। নাটোর শহরের বিভিন্ন রাস্তা কিংবা মোড়ে অহরহ চোখে পড়ে ফুচকার দোকান। কলেজ, ভার্সিটি চত্বরেও ফুচকার আড্ডা লক্ষ্যণীয়। চার চাকার ভ্যানটাইপের গাড়িতে বসে ভ্রাম্যমান ফুচকার দোকান। স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিশুদের ফুচকা বিক্রেতার সহযোগী হিসেবে কাজ করতে দেখা যায়। কমবেশি প্রায় সব ফুচকা বিক্রেতাই ব্যবসা পরিচালনার সুবিধার্থে এরকম পিচ্চি দিয়ে প্লেট ধোয়া মোছা, পানি আনা-নেয়াসহ নানান কাজ করিয়ে থাকে। ভ্রাম্যমান ফুচকা দোকানের সামনে কয়েকটা প্লাাস্টিকের চেয়ার পেতে দেয়া হয়। নারী-পুরুষ এসব চেয়ারে বসে ফুচকা খেতে খেতে মেতে ওঠে আড্ডায়। ইদানীং মফস্বল শহরে যেখানে সেখানে অহরহ চোখে পড়ে গোল হয়ে বসে ফুচকা খেতে খেতে আড্ডা দেয়ার দৃশ্য। বিকেল হলেই জমে ওঠে ফুসকার আড্ডা। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকালে বেশি চাঙ্গা থাকে এসব আড্ডা। অনেকের কাছেই প্রতিদিনের বাঁধাধরা নিয়মের বিরক্তিকর অধ্যায় থেকে নিজেকে মুক্ত করে মন-মেজাজ ফুরফুরে রাখতে ফুচকা কিংবা চটপটির আড্ডা তুলনাহীন। কথায়, গল্পে, হাসি-ঠাট্টায় ভরে ওঠে বিকেলের নির্মল আনন্দঘন পরিবেশ। শিশু, কিশোর-কিশোরী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ সব বয়সী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় ফুসকার আড্ডা। এই আড্ডা চলতে থাকে রাত ১০টা বা কখনও কখনও তার বেশি সময় ধরে। স্বল্প পরিসরে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কটা আরও মজবুত আর গভীরতা বাড়ায় এই আড্ডা। Ñকালিদাস রায়, নাটোর থেকে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: