ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

জেলা পরিষদ

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত হবে আজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

 নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী  চূড়ান্ত হবে  আজ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য দেশের ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ সমর্থিত প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গণভবনে আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। জানা গেছে, দেশের ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে গড়ে ৫ জন আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যার্শী। আবার কয়েকটিতে ৮/১০ জনও নৌকার সমর্থন পেতে আগ্রহী। আওয়ামী লীগ আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত দলের সমর্থন পেতে আগ্রহীদের আবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন নির্ধারণ করেছে। গত ১১ নবেম্বর থেকে শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন ৬১ জেলা পরিষদের জন্য ৩ শতাধিক প্রার্থী। ধানম-ির আাওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমর্থন প্রত্যার্শীদের আবেদনপত্র, সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিসহ জীবন বৃত্তান্ত পাঠানোর নির্দেশনা ছিল আওয়ামী লীগের। আজ বিকেল ৫টার পর সমর্থন প্রত্যার্শীদের আবেদনপত্রগুলো নিয়ে যাচাই-বাছাই করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রতিটি জেলা থেকে কমপক্ষে ৩ জন যোগ্য প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে মনোনয়ন বোর্ডে উপস্থাপন করা হবে। এরপর তিন স্তরের জরিপ আর ওই তালিকা বিশ্লেষণ করে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন দলের হাইকমান্ড। সূত্র জানায়, জেলা পরিষদ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের সমর্থন দিতে চায় দলটি। এদিকে সমর্থন প্রত্যার্শীদের অধিকাংশই এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। চালিয়ে যাচ্ছেন জোর লবিং। গত এক সপ্তাহে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের কাছে সাক্ষাত করতে আসা সমর্থন প্রত্যার্শীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের পর এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সমর্থন প্রত্যার্শী ও তাদের সমর্থকদের পদচারণায় সপ্তাহকাল ধরে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে কোন ফৌজদারি মামলার আসামি ও ঋণ খেলাপিরা আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবেন না। এছাড়া দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন বা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তাদেরও সমর্থন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির জন্য আলাদা আইন থাকায় এখানে নির্বাচন হবে না। সরকার ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা বাদে বাকি ৬১টি জেলা পরিষদে দলীয় নেতাদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। কোন প্রশাসক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইলে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। জেলা পরিষদ নির্বাচন করার জন্য গত ৬ অক্টোবর জেলা পরিষদ আইন সংশোধন করে সংসদে বিল পাস হয়। আইন অনুযায়ী, জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ মানুষের ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। ভোট দেবেন ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধি বা নির্বাচকমণ্ডলী। তাদের ভোটে একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও সংরক্ষিত পাঁচজন নারী সদস্য নির্বাচিত হবেন। এ হিসাবে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয় অনেকটা নিশ্চিত। কারণ জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার ইউপি, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের। তাই নৌকার সমর্থন পেতে নেতারা এখন মরিয়া। কমিশন সচিবালয়ের হিসাব অনুযায়ী, তিন পার্বত্য জেলা বাদে সারাদেশের ৬১ জেলায় মোট জনপ্রতিনিধির সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার, যারা ওই নির্বাচনের ভোটার। প্রতিটি ইউপিতে জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ ‘ভোটার’ ১৩ জন। এর মধ্যে একজন চেয়ারম্যান, সাধারণ আসনের ৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের ৩ জন সদস্য রয়েছেন। এই হিসাবে সাড়ে ৪ হাজার ইউপির ভোটার সংখ্যা ৫৮ হাজার ৫০০।
×