ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

খাদিজাকে কোপানোয় বদরুলের ছাত্রত্ব বাতিল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

খাদিজাকে কোপানোয় বদরুলের ছাত্রত্ব  বাতিল

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ কলেজছাত্রী খাদিজা বেগমের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমকে চিরতরে বহিষ্কার করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) কর্তৃপক্ষ। এদিকে বদরুলকে আদালতে হাজিরার পর ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রবিবার সিন্ডিকেট সভায় এই ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয় বলে নিশ্চিত করেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক কবির হোসেন। বদরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হয়ে অনিয়মিত ছাত্র হয়ে পড়েছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সম্পাদক ছিলেন। গত ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজে পরীক্ষা দিতে যাওয়া সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস কোর্স) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজাকে কুপিয়ে জখম করার পরদিন বদরুলকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল কমিটি। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক রাশেদ তালুকদারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ কমিটির প্রতিবেদন রবিবার সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করার পর বদরুলকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান অধ্যাপক কবির। হামলায় আহত খাদিজা ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর বর্তমানে তার অবস্থা উন্নতির দিকে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। আদালতে হাজির ॥ শাবি ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমকে রবিবার আদালতে হাজির করা হয়েছে। মহানগর হাকিম আদালতে হাজিরা শেষে তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশ জানায়, খাদিজার ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটির তদন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মামলার চার্জশীট আদালতে দাখিল করা হবে। খাদিজার অবস্থার আরও উন্নতি ॥ ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খাদিজার শারীরিক অবস্থার আগের চেয়ে অনেক উন্নতি ঘটেছে। শরীরে ব্যথা অনুভব করতে পেরে তিনি মাঝে মাঝে কেঁদে ওঠেন। শরীরে বিভিন্ন অংশে অস্ত্রোপচারের ফলে এমনটা হচ্ছে বলে ডাক্তারের ধারণা। রবিবার বিকেলে খাদিজার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তার বাবা মাসুক মিয়া বলেন, খাদিজার অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হলেও এখনও সবাইকে চিনতে পারে না। কথা বলতে পারে না। যখন জ্ঞান ফিরে তখন স্বজনদের দেখে চিনতে পেরে কেঁদে ওঠে। তবে ডাক্তাররা বলছেন, আস্তে আস্তে তিনি সবাইকে চিনতে পারবেন। খাদিজার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে কৃত্রিমভাবে নল দিয়ে খাবার সরবরাহ না করে শক্ত খাবার দেয়া হচ্ছে। এখন তিনি চিবিয়ে খাবার খেতে পারছেন। রবিবার খাবার হিসেবে তাকে জেলি, কেক, পানি, জুস ও প্রোটিন খাওয়ানো হয়েছে। ডাঃ মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, খাদিজা একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠছেন। দিন দিন তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তবে তার কথা বলতে আর সময় লাগবে। কিছুদিনের মধ্যে খাদিজাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হবে।
×