ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

রুমেল খান

চ্যালেঞ্জিং পেশার স্বাধীনচেতা নারী একজন ইরার কাহিনী

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

চ্যালেঞ্জিং পেশার স্বাধীনচেতা নারী একজন ইরার কাহিনী

প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনের অন্ধ ভক্ত বড় বোন ফাহমিদা ইয়াসমিন রিপা। সুযোগ পেয়েই ছোট বোনের নাম রাখলেন তার নামে। তবে গায়িকার গান পছন্দ হলেও তার নামটি মোটেও পছন্দের নয় ছোট বোনটির! এমনিতে তার ডাক নাম ‘ ইরা’। পরে বিয়ের পর স্বামীর ‘হাসান’ অংশটি ধার করে নতুন করে নাম রাখলেন ইরা হাসান। ইরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স ফাইনাল দিয়েছেন চট্টগ্রামের সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ থেকে। পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করছেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপে, ২০০৯ সাল থেকে। কাজ করতে করতে একসময় জড়িয়ে পড়েন খেলাধুলার সঙ্গে। এখন স্পোর্টস ইভেন্ট নিয়েই কাজ করছেন বেশি। কেন এই পেশাটি বেছে নেয়া? ‘সরাসরি স্টেডিয়ামে বসে খেলা ও খেলোয়াড়দের দেখার এবং তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ, কাজের পরিবেশ ও সহকর্মীদের সুন্দর ব্যবহার এবং সবার সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব... তাই পেশাটি বেছে নেয়া।’ ইরার ভাষ্য। স্পোর্টস ইভেন্টে তার পথচলার সূচনা ২০১১ সাল থেকে। পেশাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং? ‘প্রতিটা কাজই চ্যালেঞ্জের। চ্যালেঞ্জকে ওভারকাম করা ব্যক্তি বিশেষে নির্ভর করে। পেশাটা অনেক উপভোগ্য এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ। এমন পেশায় আসতে পেরে আমি অনেক ভাগ্যবতী ও গর্বিত।’ এ পেশা বেছে নেয়ার আরেকটি কারণও ব্যাখ্যা করেন সুদর্শনা ও ২৫ বছর বয়সী ইরা ‘যেহেতু এখনও পড়াশোনা করছি, স্থায়ী কোন চাকরিও পাচ্ছি না, তাই ভেবেচিন্তেই এ পেশায় আসা। এটা অনেক আনন্দদায়ক ও সম্মানজনক পেশা। এ পেশার ডিডটি শুরু হয় বিকেল বা সন্ধ্যা থেকে। তাই অনায়াসেই পড়াশোনা ও অন্যান্য দৈনন্দিন কাজগুলো সেরে ফেলতে পারি।’ ভবিষ্যতে সরকারী চাকরি করার কোন ইচ্ছে নেই ইরার। কারণ সরকারী চাকরিতে ঘন ঘন বদলির ঝক্কি। এ প্রসঙ্গে ইরা বলেন, ‘আসলে চট্টগ্রামকে অনেক বেশি ভালবাসি। এখানকার সঙ্গে আমার নাড়ির টান। কারণ আমি জন্মসূত্রে চাটগাইয়া। বাবা-মায়ের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে (মায়ের মাওয়া, বাবার লৌহজংয়ে)। প্রাইভেট কোন জবই করব, সেটা যদি স্পোর্টস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট হয়, তাহলে ভাল হয়।’ ইরার কাপড় ব্যবসায়ী বাবা মোঃ ইব্রাহিম ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মারা যান। মা মিলি বেগম, গৃহিণী। বছরখানেক আগে বিয়ের আক্দ হয়েছে আন্দরকিল্লা নিবাসী ইরার। এ পেশায় মেয়েদের আগমন প্রসঙ্গে ইরার উপদেশ, ‘এ পেশাটি খুবই চমৎকার। এটা পার্টটাইম জবের মতোই। এখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজের স্বাধীনতা আছে। এখানে নেতিবাচক কিছু নেই বললেই চলে। বেতন দেয়া হয়, ইভেন্ট ও দিন অনুযায়ী, সেটা সম্মানজনক। যারা খেলা দেখতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য পেশাটি পোয়াবারো।’ ইরার শখ? ‘চট্টগ্রাম ছেড়ে কোথাও যেতে না চাইলেও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ঘোরার শখ আছে। আরেকটি হচ্ছে নতুন রেস্টুরেন্টে গিয়ে সেখানকার ভিন্ন স্বাদের খাবারগুলো খাওয়া।’ ভিন্ন ও চ্যালেঞ্জিং পেশার এক স্বাধীনচেতা এই নারীর ভবিষ্যতের সব সুনীল স্বপ্নগুলো সত্যি হবে কি?
×