ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী সংগঠন ছাত্রী সংস্থার নেপথ্যে শিবির

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২ অক্টোবর ২০১৬

জঙ্গী সংগঠন ছাত্রী সংস্থার নেপথ্যে শিবির

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশব্যাপী বিচরণ করছে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সদস্যরা। তবে এ সংগঠনের পেছনে কাজ করছে শিবির প্রভাবিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থেকে গত মঙ্গলবার পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ৫ নারী জঙ্গীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এসব নারীদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বই ইসলাম ও বিজ্ঞান ভিত্তিক হলেও মূলত ইসলামের তথ্যগুলোকে ঘুরিয়ে মগজ ধোলাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব নারী জঙ্গীরা সংগঠিত হবার অপচেষ্টা করছে বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থার জঙ্গীরা অতি গোপনে ও পারিবারিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ সংগঠনের কর্মী ও সংগঠকরা তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছে। এক সময় সুপ্ত এই জঙ্গী সংগঠন বিস্তারের পরিকল্পনা করছে। এলাকাভিত্তিক ও ঘরোয়া প্রচারের মাধ্যমে মা, খালা, আপু ও ভাবি বলেই সুচ হয়ে ঢুকছে বাসা বাড়িতে। কাজ করছে মহিলা কলেজ, মাদ্রসা ও মহিলা হোস্টেলকে কেন্দ্র করে। আবার যাত্রীবেশে ট্রেনেও ধর্মের দোহাই দিয়ে বাগে আনার প্রচেষ্টা চলছে সর্বত্র। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও চলছে প্রচার ও সাথী বানানোর অপচেষ্টা। তবে নাম সর্বস্ব এ সংগঠনটির কোন সাইনবোর্ড বা কার্যালয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে সংগঠনটির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এমন তথ্য ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল র‌্যাব সেভেনের অভিযানে। সংগঠনটির পরিসংখ্যানে ও উদ্ধারকৃত ওই লিফলেটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯৭৯ সাল থেকেই ইসলামের সঠিক প্রচারণার নামে কাজ শুরু করছে। তবে ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম মহানগরীকে ওই সংগঠনটি তাদের কর্মসূচীর আওতায় আনতে উত্তর ও দক্ষিণ দুটি ভাগে ভাগ করেছে। নতুনভাবে কাজ শুরু করলেও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অফিস কক্ষ, ল্যাপটপসহ বায়তুল মালের জন্য নগদ অর্থের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল সংগঠনের সভানেত্রীর এক চিঠিতে। এই চিঠি নারীদের উদ্দেশে লেখা হয়েছিল সংগঠনের সভানেত্রী সুমাইয়া আফরোজের পক্ষ থেকে। কক্সবাজারের রহিমা নামের নারী জঙ্গীর দেয়া তথ্যেই র‌্যাব সেভেন খুঁজে পেয়েছিল তাদের সংগঠিত হবার পরিকল্পনা। উদ্ধারকৃত লিফলেটে সংগঠনটির কথা উল্লেখ থাকলেও অবস্থানের কোন ঠিকানা নেই। কক্সবাজারের মগনামা এলাকার রহিমাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে নারী সংগঠনের অস্তিত্ব সম্পর্কে অবগত হয়েছে র‌্যাব। উদ্ধারকৃত চিঠি ও লিফলেট থেকেই মূলত জঙ্গী ছাত্রী সংস্থার পরিচয় উঠে আসে। অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরী ও উপজেলা মিলে ৩১টি থানার আওতায় সাপ্তাহিক ও ইসলামী মাহফিলের নামে বিভিন্নস্থানে গোপন বৈঠক চলছে যা পুলিশ এখনও সন্ধান করতে পারেনি। তবে মঙ্গলবার বোয়ালখালীতে পুলিশের অভিযানের মধ্যদিয়ে র‌্যাবের পর পুলিশের নজরে এসেছে নারী জঙ্গী সংগঠন ইসলামী ছাত্রী সংস্থার। এ ধরনের বৈঠকে সংগঠনের ৮ থেকে ১০ সদস্য উপস্থিত থাকে। এই সদস্যদের আবাসস্থলে পৃথকভাবে নির্দিষ্ট দিনে জমায়েত হয়। প্রত্যেক সদস্য প্রত্যেক সপ্তাহে পৃথকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে এসব সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে।
×