ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অচলাবস্থায় কুয়াকাটা হাসপাতাল

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

অচলাবস্থায় কুয়াকাটা হাসপাতাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৬ সেপ্টেম্বর ॥ ডাক্তার, নার্সসহ প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পর্যটক-দর্শনার্থীসহ কুয়াকাটা পৌরসভা, লতাচাপলী, ধুলাসার, মহিপুর ইউনিয়নের মানুষ পড়েছে বিপাকে। বর্তমানে কুয়াকাটা হাসপাতাল ডাক্তার শূন্য। অবস্থা এমন হয়েছে যে, সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে হাসপাতালের সামনে জাতীয় পতাকা পর্যন্ত তোলা হয়নি। উদ্বোধনের পর থেকেই ডাক্তার সঙ্কটে অচলাবস্থা চলে আসছে কুয়াকাটা হাসপাতালে। এ দশার তেমন কোন উত্তরণ ঘটেনি। সকল আধুনিক উপকরণ রয়েছে হাসপাতালটিতে। পাঁচ বছর এখানকার চিকিৎসাসেবা কোনমতে চলেছে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও এক ওয়ার্ডবয় দিয়ে। এখন তাও বন্ধ। ফলে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার মানুষসহ পর্যটকদের কোন কাজে আসছে না হাসপাতালটি। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে ভুতুড়ে পরিবেশ। কুয়াকাটার গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০০৭ সালে চার কোটি ৬০ লাখ ১০ হাজার ৮৪১ টাকা ব্যয়ে তিন একর জমির ওপর নির্মিত ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হয়। বিশেষ করে গভীর সমুদ্রগামী জেলেরা চিকিৎসা সেবা পাওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে হাসপাতালটি নির্মাণের পর। লোকবল পদায়নসহ ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এ হাসপাতালটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন ডাক্তার, নার্সসহ পরিপূর্ণ কর্মচারী পদায়ন দেখানো হয়। এরপর সব এক এক করে লাপাত্তা হয়ে যায়। ৬ মেডিক্যাল অফিসারসহ ২৩ লোকবলের বিপরীতে এখন রয়েছে এক ল্যাব এটেনডেন্ট অসীম চন্দ্র পাল ও নামের একজন মেডিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট সালমা খাতুন। কাগজে কলমে ডাক্তার আফরোজা আকবর এখানে যোগ দেয়ার পর তাকে আর দেখা যায়নি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। প্রধান অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর হোসেন প্রেষণে অফিস করছেন বরিশাল ডিডি অফিসে। সর্বশেষ দুই ডাক্তার আশরাফুল ইসলাম ও মোঃ সুজন শরীফকে কলাপাড়া থেকে প্রেষণে কুয়াকাটায় পদায়ন করা হয়। তারা এক মাস পর ৩১ আগস্ট কলাপাড়ায় যোগদান করেন। এরপর থেকে কোন ডাক্তার নেই। কুয়াকাটার চিকিৎসা সেবায় এখানে রয়েছে তিন ইউনিটের আধুনিক দ্বিতল চিকিৎসক ভবন। সেবিকা ভবন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য দু’টি দ্বিতল আবাসিক ভবন, ড্রাইভার কোয়ার্টারসহ রয়েছে আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত অপারেশন থিয়েটার, ল্যাব, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড, সেবিকা কক্ষ, চিকিৎসক কক্ষ, পাম্প হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যটন এলাকার বিবেচনায় রয়েছে ভিআইপি কক্ষ। কিন্তু সবই পড়ে আছে ফাঁকা। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি হাসপাতাল না কোন পরিত্যক্ত জাদুঘর।
×