ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সীমান্ত টপকে হামলায় প্রস্তুত আত্মঘাতী গোলাপ গ্যাং

প্রকাশিত: ১৯:৪৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সীমান্ত টপকে হামলায় প্রস্তুত আত্মঘাতী গোলাপ গ্যাং

অনলাইন ডেস্ক॥ দুই বছর আগে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে একটি দোতলা বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপরই ওই বাড়িতে যায় পুলিশ। কিন্তু প্রথমেই যে দৃশ্যটি পুলিশের নজরে পড়ে তা বিস্ময়কর। স্বামীর রক্তাক্ত মৃতদেহের সামনে বসে বাচ্চাকে আপেল খাওয়াচ্ছিলেন দুই নারী। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ ঘরের মেয়ে রাজেরা ও আলেমা বিবির ওই আচরণে ঘাবড়ে যান গোয়েন্দারাও। পরে জানা যায়, জঙ্গি সংগঠন জেএমবির কঠোর প্রশিক্ষণেই এতোটা নির্মম হয়ে উঠেছিল ওই দুই বাঙালি নারী। সম্প্রতি ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য এসেছে, বাংলাদেশে নারীদের নিয়ে আত্মঘাতী জঙ্গি দল গড়েছে জেএমবি। এই বাহিনীর নাম 'রক্ত গোলাপ ' বা রেড রোজ। তালিবান ও লস্কর -ই -তৈয়বার ফিদায়েঁ গোষ্ঠীর আদলে গড়া এই জঙ্গি বাহিনীর সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে চোখ কপালে উঠেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। সূত্রের খবর, সুপ্রতিষ্ঠিত ও উচ্চশিক্ষিত ১২ জন নারী জঙ্গির তত্ত্বাবধানে এই বাহিনী গড়ে উঠেছে। ওই নারী বাহিনী যে কোনো অ্যাসাইনমেন্টের জন্য প্রস্তত বলেও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি ঢাকায় গুলশানের হোলি আর্টিজেন বেকারিতে জঙ্গি হামলার মূল হোতা তামিম আহমেদ চৌধুরীর এনকাউন্টারের পরে জানা যায়, তামিমের সর্বক্ষণের সঙ্গী, পলাতক মেজর জিয়ার তত্ত্বাবধানেই চলছে এই আত্মঘাতী নারী বাহিনীর প্রশিক্ষণ। চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে এমনই একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের সন্ধান পেলেও নিরাপত্তা বাহিনী পৌঁছানোর আগেই সেখান থেকে পালায় জঙ্গিরা। যে ১২ জন উচ্চশিক্ষিত নারী এই আত্মঘাতী নারীবাহিনীর দেখভাল করছে, তাদের মধ্যে ঢাকা ও রাজশাহীর বিভিন্ন কলেজের কয়েকজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছাত্রী রয়েছেন বলেও জানা গেছে। বাংলাদেশের দু'টি নামী কর্পোরেট সংস্থার কয়েকজন নারী কর্মীও এই আত্মঘাতী বাহিনীতে নাম লিখিয়েছেন বলে সন্দেহ সে দেশের গোয়েন্দাদের। এই জঙ্গিদের মধ্যে চারজন কয়েকদিন আগে কিশোরগঞ্জ থেকে ধরা পড়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রী। জেরায় গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা জানিয়েছেন, আইএসের ভাবধারাকে সমর্থন করেই তারা জেএমবি'র সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। কয়েকদিন আগে নয়াদিল্লিতে সার্ক অ্যান্টি টেরর মেকানিজম বৈঠকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির উপরে গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন আই বি প্রধান দীনেশ্বর শর্মা। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই এই বাহিনীর বিস্তারিত নেটওয়ার্কিং নিয়ে আলোচনা হয় ভারত এবং বাংলাদেশের গোয়েন্দাকর্তাদের মধ্যে। ভারতীয় গোয়েন্দারা তথ্য 'শেয়ার' করেন বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সঙ্গে। তারা ভারতকে জানান, তাদের হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী এই বাহিনীর আস্তানা সীমান্তের এ পারে পশ্চিমবঙ্গ ও অাসামের দক্ষিণ প্রদেশে, নিম্নভাগে।
×