ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় নাট্যোৎসব ২০১৬

সমকালীন নাটক নাট্যধারা, ঢাকা ও বাইরের ৫৮ প্রযোজনায় মুখর

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সমকালীন নাটক নাট্যধারা, ঢাকা ও বাইরের ৫৮ প্রযোজনায় মুখর

মোরসালিন মিজান ॥ ঢাকার বিখ্যাত দল। আলোচিত নাটক। বাইরের বিভাগগুলোর উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা। শিল্পকলা একাডেমির একাধিক হল সরব। যুক্ত হয়েছে বেইলী রোডের মহিলা সমিতিও। একই দিনে মঞ্চস্থ হচ্ছে তিন থেকে চারটি করে নাটক। শিল্পকলা একাডেমির সহায়তায় জাতীয় নাট্যোৎসব ২০১৬’র আয়োজন করেছে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। দুই-দশ দিন নয়, ১৮ দিনের আয়োজন। নাটক দেখার পাশাপাশি থাকছে সমকালীন নাট্যভাবনা, চর্চার ধরন সম্পর্কে অবগত হওয়ার সুযোগ। বৃহৎ এ উৎসব এমন এক সময়ে আয়োজন করা হয়েছে, যখন ধর্র্মীয় জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তুমুল ফাইট দিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। বাঙালী প্রতিবাদে মুখর। একই অবস্থান থেকে নাটকের ভাষায় চলছে আন্দোলন-সংগ্রাম। উৎসবের স্লোগান তাই- এই মাটি নয় জঙ্গীবাদের, এই মাটি মানবতার। শনিবার শিল্পকলা একাডেমিতে উদ্বোধন করা হয় উৎসবের। জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মঞ্চ নাটকের পুরোধা ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও আতাউর রহমান। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাষ্ট্র। এজন্য বাঙালীকে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করতে হয়েছে। এখনও সে সংগ্রাম অব্যাহত। নাট্যকর্মীরা বরাবরের মতোই নাটককে হাতিয়ার করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। অন্ধকারের শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাওয়া বাংলাদেশ জঙ্গীবাদের কাছে মাথা নত করবে না বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। উৎসবের নাট্য আয়োজন সম্পর্কে বক্তারা বলেন, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের নামকরা দলগুলো এতে অংশ নিচ্ছে। সব দলই তাদের সাম্প্রতিক ও আলোচিত প্রযোজনাগুলো নিয়ে মঞ্চে থাকবে। এত এত নাটক! দেখতে দেখতে বাংলাদেশের মঞ্চ নাটক, নাটকের ধারা, সমকালীন চর্চা সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন দর্শক। নাট্যকর্মীদের মধ্যে আদান-প্রদানটাও ভাল হবে। সবাইকে নাটক দেখার আহ্বান জানান বক্তারা। তবে আলোচনাপর্বটি নির্ধারিত সময়ের অনেক পর শুরু হয়। নাটক দেখার জন্য আসা দর্শক অস্বস্তিতে পড়ে যান। প্রথম দিনেই এমন অব্যবস্থাপনায় কেউ কেউ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। শিল্পকলা একাডেমির ব্যক্তি খুশি করার স্থূল নীতির সমালোচনা হয় প্রকাশ্যেই। এ অবস্থায় প্রথমপর্বটি কোন রকমে শেষ হলে নাটকে ফেরা সম্ভব হয়। অনেক দেরি করে শুরু হওয়া প্রদর্শনী অবশ্য সহসাই দর্শকদের অধিকার করে নেয়। শুরু হয় ঢাকার বাইরের নাটক দিয়ে। এদিন নাট্যশালার মূল হলে মঞ্চস্থ হয় হবিগঞ্জের জীবন সংকেত নাট্যদলের প্রযোজনা ‘জ্যোতিসংহিতা’। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে সিরাজগঞ্জের নাট্যলোক মঞ্চস্থ করে ‘নারী নসিমন’। একই সময় সরব ছিল বেইলী রোডের মহিলা সমিতি। এখানে গাইবান্ধার পদক্ষেপ নাট্যদল মঞ্চায়ন করে ‘পলোনাথ কোম্পানি’ নাটকটি। আয়োজক সূত্র জানায়, উৎসবের দ্বিতীয় দিনে আজ রবিবার মঞ্চস্থ হবে তিনটি নাটক। জাতীয় নাট্যশালায় নাগরিক নাট্যাঙ্গন মঞ্চস্থ করবে ‘গহর বাদশা বানেছা পরী’। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে কুষ্টিয়ার বোধন থিয়েটার থাকবে ‘চন্দ্রাবতীর কথা’ নিয়ে। একই সময় মহিলা সমিতিতে কিশোরগঞ্জের একতা নাট্যগোষ্ঠী মঞ্চস্থ করবে ‘মহুয়া’। আগামীকাল সোমবার জাতীয় নাট্যশালায় দেশ নাটক মঞ্চস্থ করবে ‘অরক্ষিতা’। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে থাকবে ঢাকা পদাতিকের ‘হেফাজত’। একই সময় মহিলা সমিতিতে দৃশ্যপট মঞ্চস্থ করবে ‘সক্রেটিসের জবানবন্দী’। উৎসব আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
×