ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পবিত্র ঈদ-উল-আযহার আনন্দ সপরিবারে উপভোগ করতে যেন মেতে উঠেছে সারাদেশ। বিভিন্ন জেলার বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে গত কয়েক দিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়, এখনও যার রেশ কাটেনি। ঈদের লম্বা ছুটিতে বাড়ি গিয়ে মা-বাবা, আত্মীয়-পরিজন সবার সঙ্গে একত্রে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার মজাই আলাদা। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো । নিজস্ব সংবাদদাতা নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, ঈদ-উল-আযহার ছুটিতে নারায়ণগঞ্জ শহর, সোনারগাঁ, ফতুল্লা ও রূপগঞ্জের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। বিশেষ করে বুধবার ও বৃহস্পতিবার শিশু, কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী লোকজন ছুটে আসে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। দর্শনার্থীরা সারাদিন মেতেছিল আনন্দ-উল্লাসে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের পদচারণায় ছিল মুখরিত বিনোদন কেন্দ্রগুলো। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। জানা গেছে, শহরের বরফকল এলাকার চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসি পার্ক, ফতুল্লার পঞ্চবটির এ্যাডভেঞ্চারল্যান্ড পার্র্ক, সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (জাদুঘর), বাংলার তাজমহল, ঐতিহাসিক পানাম নগরী, রূপগঞ্জের জিন্দাপার্ক, পন্ডগার্ডেন, রাসেল পার্কসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঈদের দিন থেকে বৃহস্পতিবারও দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নারায়ণগঞ্জ শহরের বরফকল এলাকায় নির্মিত চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসি পার্কে বুধবার বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় শত শত শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী লোকজন ঈদের ছুটিতে বিনোদনের জন্য পার্কে ছুটে এসেছেন। বিকেলের পর থেকে পার্কে দর্শনার্থীদের তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। এ সময় শিশু, কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীরা ম্যারিগোল্ড, ম্যাজিক বোট, বাম্পার কার, হানি সুইং, ওয়ান্ডার হুইল, রোলার কোস্টার, ফ্রিজবি ও ফ্লাইং রকেট রাইটসে চড়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছে। শহরের পাইকপাড়ার বাসিন্দা মাহবুবর রহমান পুরো পরিবার নিয়ে ছুটে এসেছেন চৌরঙ্গী পার্কে। ঈদের ছুটিতে সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (জাদুঘর), বাংলার তাজমহল ও পানাম সিটিসহ সোনারগাঁয়ের প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী ও শিশুদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। রূপগঞ্জের জিন্দাপার্ক, পন্ডগার্ডেন ও রাসেল পার্কেও ছিল দর্শনার্থীদের প্রচুর ভিড়। সবচেয়ে বেশি পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের নির্মিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে। দর্শনার্থীদের উপস্থিতির কারণে ঈদের দিন থেকেই লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং বাংলার তাজমহল খোলা রাখা হয়। দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে ছিল জাদুঘর প্রাঙ্গণ। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম জানান, এবারের ঈদের ছুটিতে জাদুঘরে দর্শনার্থী এসেছে প্রচুর। বুধবার সাড়ে ১২ হাজার দর্শক বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে (জাদুঘর) ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে এসেছেন। এখানে রয়েছে বিভিন্ন রাইডস, জাদুঘর, লেক ও নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা। ঈদ উপলক্ষে শুক্রবার ও শনিবার ঈদ অন্্ুষ্ঠানের আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়াও র‌্যাব, পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। এদিকে সোনারগাঁ জাদুঘর ও বাংলার তাজমহল ছাড়াও সোনারগাঁয়ের পানাম সিটি, গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের মাজার, বারদী জ্যোতি বসুর বাড়ি, মেঘনা নদীর বৈদ্যোর বাজার ঘাট ও কাইকারটেক ব্রিজ এলাকায় বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছিল। স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া থেকে জানান, ঈদে দেশের প্রাচীন নগরী বগুড়ার মহাস্থানগড়ে পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হালে মহাস্থানগড়কে পর্যটক আকর্ষণে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। দেশী পর্যটক ছাড়াও বিদেশী অনেক পর্যটকের আগমনে মহাস্থানগড় মুখর হয়ে ওঠে। ভারতের কাশ্মীরের শ্রীনগরের সাইস আলী, বোরহান আলী এসেছিলেন মহাস্থানগড়। বললেন ইন্টারনেটে প্রাচীন এই নগরীর ছবি দেখেছেন ও বর্ণনা পড়েছেন। অনেক দিন থেকেই ভাবছিলেন মহাস্থানগড়ে আসবেন। এবার সুযোগ হয়েছে। তারা সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। কাশ্মীরী মেয়ে গুলফাম বললেন, মহাস্থানগড় দেখে তিনি মুগ্ধ। কাশ্মীরের কয়েক মেয়ে শিক্ষার্থী ওই মেডিক্যাল কলেজে পড়ছেন। তারা বিদেশী কোটায় ওই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন। বললেন শ্রীনগরের ৪০ শিক্ষার্থী এই মেডিক্যাল কলেজে পড়ে। তাদের অর্ধেক এবার এসেছে। মহাস্থানগড় বেড়াতে এসে তারা অভিভূত। বললেন ভূস্বর্গ কাশ্মীরের সৌন্দর্য এক রকম মহাস্থানগড়ের সৌন্দর্য আরেক রকম। তারা এই দেশে এসে বাংলা ভাষা শিখে নিয়েছেন। ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলায় সুন্দর করে কথা বলেন। স্টাফ রিপোর্টার কক্সবাজার থেকে জানান, ঈদের ছুটিতে সরকারী চাকরিজীবী, সাধারণ মানুষ আর ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত কক্সবাজারের বিনোদন স্পটগুলো। উচ্ছ্বাস আর আনন্দে ভ্রমনপিপাসুরা মনের আনন্দে খোলা আকাশের নিচে বিশাল বালিয়াড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ঈদ-উল-আযহায় টানা ছুটি পেয়ে সরকারী চাকরিজীবীদের পরিবারে ঈদের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। সপ্তাহের মাঝামাঝি দিনে ঈদক্ষণ পড়ায় তারা ভ্রমণে এসেছেন কক্সবাজারে। পরিবার-পরিজন আর প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছেন ওসব মানুষ। নারী-শিশু, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী মানুষ বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও বিনোদন স্পটগুলোতে ভিড় করেন। ভ্রমণপিপাসুরা নিরাপদ অবকাশ যাপনে ঈদের আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছেন হোটেল-মোটেল-কটেজ কক্ষগুলো। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ছাড়াও শিশু-কিশোর ও কিশোরীদের নিয়ে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, ইনানী পাথুরে বিচ, রামুর দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধ পুরাকীর্তি এলাকা, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, রাখাইন পল্লী, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, হিমছড়ির অপরূপ ঝর্ণা, দরিয়ানগরসহ বিভিন্ন পর্যটন পয়েন্টে এসেছেন বাবা-মা। ব্যস্ততম নগরজীবনের যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি পেয়ে ঈদের ছুটিকে কাজে লাগাতে একটু খোলামেলা জায়গায় বেড়ানোর মধ্যে অন্যরকম এক অনুভূতি খুঁজে পাচ্ছেন তারা। নিজস্ব সংবাদদাতা কলাপাড়া থেকে জানান, ঈদের ছুটির সুবর্ণ সুযোগকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন প্রকৃতি ও বিনোদনপ্রেমী মানুষ। ছুটে এসেছেন কুয়াকাটায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক সহজতর হওয়ায় কুয়াকাটায় বুধবার থেকে পর্যটক-দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে। সর্বত্র এখন এদের পদচারণায় মুখর হয়ে আছে। হোটেল-মোটেলগুলোতে ৮০ ভাগ সিট আগেই বুক হয়ে গেছে। ঈদের উপভোগ্য আলাদা। অধিকাংশই পারিবারিকভাবে আসা পর্যটক। তবে সকাল-সন্ধ্যা সৈকতে অবস্থান করা অধিকাংশই ছিল পর্যটক-দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা। স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, লৌহজং উপজেলার মাওয়া পদ্মার পার, মাওয়া রিসোর্ট, পদ্মা রিসোর্ট, চালতাতলা এমজে হলিডে রিসোর্ট, মুক্তারপুর সেতুতে পর্যটকদের কোলাহলে মুখরিত। পদ্মা আর ধলেশ্বরী নদীর নির্মল পরিবেশ দেখতে সব বয়সী নারী-পুরুষ ছুটে আসেন। পদ্মাপারের মুক্ত বাতাস আর ধলেশ্বরী নদীর সুউচ্চ এই সেতু থেকে নৌকা, লঞ্চ, চাঁদের আলো এবং সূর্যাস্তের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে কার না ভাল লাগে। তাই তো দূর-দূরান্ত থেকে নানা শ্রেণী পেশার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় এ সকল পর্যটন কেন্দ্র। এদিকে মাওয়া পদ্মাপারেও ছিল পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদের দিন বিকেল থেকে পদ্মার পারে যেন মানুষের ঢল নেমেছে, তা গতকাল অবধি দেখা গেছে। মাওয়া রিসোর্ট, পদ্মা রিসোর্টেও ছিল পর্যটকদের উপচে পড়া আনাগোনা। অনেকে আবার ঢাকা থেকে সপরিবারে এসেছেন রাত্রিযাপন করতে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা শহরের কর্মব্যস্ততা আর সীসাযুক্ত বাতাস থেকে একটি পরিত্রাণ পেতেই পরিবার-পরিজনকে নিয়ে তারা এখানে বেড়াতে এসেছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে ফিরছেন পদ্মার বেলাভূমিতে। প্রেমিক-প্রেমিকারাও এসেছেন হাতে হাত ধরে। ঘুরে বেড়িয়েছেন মাওয়ার পদ্মার পারে। এভাবেই ঈদের ছুটিতে পদ্মা পারেও ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রতিদিন বিকেল হলেই যেন মানুষের ঢল নামে এখানে আর সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরার চালতাতলা এমজে হলিডে রিসোর্টে মানুষের ঢল নামে। এখানে শিশু, কিশোর এবং বড়দের পৃথক তিন ধাপে রয়েছে সুইমিংপুল। সেখানে সাঁতার কাটা আর শরতের গ্রামীণ পরিবেশে ঘুড়ে বেড়ানোর মজাই আলাদা। স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, নগরীর বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে উৎসবপ্রেমীর ভিড় ঈদের দিনের বিকেল থেকেই। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ঢল নামছে সবসময়। বিশেষ করে তরুণ-তরুণী ও শিশুর পদচারণায় মুখরিত বিনোদনকেন্দ্র। নগরীর প্রধান বিনোদনকেন্দ্র পদ্মা নদীরপার, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা এবং জিয়া শিশুপার্কে সকাল থেকেই মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। রঙ-বেরঙের পোশাক পরে পরিবার-পরিজন, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোরসহ সকল শ্রেণীর মানুষ ছুটে আসছেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, ঈদের আনন্দে মেতে উঠেছে কুড়িগ্রাম শহরের মানুষ। জেলার একমাত্র বিনোদন এলাকা ধরলা ব্রিজ এবং আশপাশের বিভিন্ন গাইডবাঁধে সব বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ঈদের দিন থেকে উৎসবের আমেজ। এখনও পরিবার-পরিজনসহ শহরে এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ। ধরলা পার্ক এলাকাটি এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আতঙ্ক কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি সকলেই যেন প্রাণের সন্ধান করেছেন। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, মোরে আরও আরও দাও প্রাণ... শহরের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ধরলা নদী। স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, ঈদ আনন্দ উপভোগে ঈদের পরের দিন হতে নীলফামারীর তিস্তা অববাহিকার দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ, ১৫৫ একর জমির ওপর বিন্যাবতী রানীর বিশাল দিঘি নীলসাগর, ধর্মপাল রাজার- গড় ধর্মপালের পুরান কীর্তি এবার পর্যটককে বেশি কাছে টেনে নিয়েছে। তাই তো এসব প্রকৃতির বিনোদনকেন্দ্রে চলছে সপরিবারে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। পশু কোরবানির ঈদের দিন সকল ব্যস্ততা কাটিয়ে এখন চলছে ঘুরে বেড়ানোর উৎসব। তিস্তা অববাহিকা বাসিন্দারা নানান রকম খাবার দোকানসহ বাড়তি বিনোদনের জন্য বসিয়েছেন চর্কিখেলা, মিনি লটারিখেলা, বেলুন, টার্গেট সুট খেলাসহ বিভিন্ন সামাজিক খেলা। আর এখানে বাড়তি বেচাকেনায় দোকানিরাও বেশ খুশি। আরও বেশি বিনোদন উপভোগের জন্য নদীরধারে প্রস্তুত স্পীডবোট ও নৌকা । উজান হতে তিস্তার ঢেউয়ের মাতমের সঙ্গে প্রকৃতির বাতাস শরীরে দোলা লাগাতে নৌকা বা স্পীডবোটে জনপ্রতি ১০/২০ টাকার বিনিময়ে দর্শনার্থী তিস্তার অথই পানির বুকজুড়ে ঘুরে বেড়াছে। আছে তিস্তাপারের হাওয়ায় মোবাইলে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা ছড়িয়ে দেয়ার আনন্দ। কি যে মজা! যা প্রকৃতির আলো-বাতাস জীবনকে ধন্য কর তুলছে। এসবের সঙ্গে রয়েছে নিজেদের রান্না করে সঙ্গে নিয়ে আসা এবং খোলা মাঠের গাছের ছায়ায় একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া। মুক্ত পরিবেশে মন খুলে খোশগল্প করা আনন্দের মাত্রাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে প্রকৃতি। নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, সীমান্তবর্তী ধামইরহাটের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ঈদের দিন বিকেল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি উপজেলার ঐতিহাসিক ও আকর্ষণীয় বিনোদনকেন্দ্র আলতাদিঘি শালবন জাতীয় উদ্যান, শীমুলতলী সেতু ও জগদ্দল বৌদ্ধবিহারে ভ্রমণপিপাসুর পদচারণায় মুখরিত থাকে। বিশেষ করে শালবন ও আলতাদিঘির অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, মাইক্রো, সিএনজি, ইজিবাইক, ভটভটিসহ বিভিন্ন যানবাহনে এসব কেন্দ্রে আসতে থাকে। ঈদকে সামনে রেখে স্থানীয় জনগণ আলতাদিঘির পারে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলনার দোকান, দিঘিতে নৌকা ভ্রমণ, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় সামগ্রীসহ দোকান বসায়। ভ্রমণপিপাসুরা এক সঙ্গে জগদ্দল বৌদ্ধবিহার, আলতাদিঘি, শালবন জাতীয় উদ্যান, আত্রাই নদীর ওপর নির্মিত শীমুলতলী সেতু ও বন বিভাগের উদ্যোগে লাগানো সবুজের সমারোহ চরবাগানের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করেন।
×