ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনায় ঈদের পাঁচ টেলিফিল্ম

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আলোচনায় ঈদের পাঁচ টেলিফিল্ম

সাজু আহমেদ ॥ ঈদ উল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন চ্যানেলে বেশ কিছু অনুষ্ঠান প্রচার হবে। এর মধ্যে নির্মাণ এবং গল্প বিচারে কয়েকটি টেলিফিল্ম আলোচনায় এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে তরুণ পরিচালক সাজিন আহমেদ বাবু রচিত ও পরিচালিত এসএটিভির টেলিফিল্ম ‘স্টপ’, তাবারক হোসেন রচিত এবং মাহমুদ দিদার ও তাবারক হোসেনের যৌথভাবে পরিচালনায় আরটিভির টেলিফিল্ম ‘নির্জন উপকূলে’, জিএম সৈকতের এটিএনবাংলার ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’ ও বৈশাখীটিভির ‘সাগরপড়ের কন্যা’ এবং কবি শাহীন রেজার বিশেষ টেলিফিল্ম ‘কবিতা কান্না’। ৫টি টেলিফিল্মের তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন। সাজিন আহমেদ বাবুর ‘স্টপ’ : সাজিন আহমেদ বাবুর রচনা এবং পরিচালনায় নির্মিত হয়েছে বিশেষ টেলিফিল্ম ‘স্টপ’। টেলিফিল্মটি ঈদের দিন দুপুর ২-২০ মিনিটে এসএ টিভিতে প্রচার হবে। টেলিফিল্মে জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ এবং তারিক আনাম খান। এ টেলিফিল্মে আরও অভিনয় করেছেন ওয়ালিদ খানসহ প্রায় ৪০ জন অভিনেতা-অভিনেত্রী। টেলিফিল্মে একজন বিজ্ঞানীর ব্যক্তিগত ও পরিবারিক জীবনকে সাদিয়া ইসলাম মৌ এবং তারিক আনাম তাদের অভিনয় দক্ষতার মধ্যমে তুলে ধরেছেন। মানুষের যৌবনকে ধরে রাখার ওষুধ আবিষ্কার করে তারিক আনাম সেটা মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে চাইলেও তার সহধর্মিণী সাদিয়া ইসলাম মৌ চায় সেটাকে বিক্রি করে কোটি কোটি ডলার রুজি করতে। এর মাঝেই এক চক্রের মাধ্যমে তারিক আনাম অপহরণ হলে টেলিফিল্মের গল্প ঘুরতে থাকে অন্যদিকে। টেলিফিল্মে অভিনয় প্রসঙ্গে সাদিয়া ইসলাম মৌ বলেন, গত বছর চিত্রনাট্যটিতে আমাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু আমার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সময় না থাকায় কাজটি করতে পারিনি। এ বছর যখন কাজটি করার প্রস্তাব পাই তখন কিছুটা অবাক হয়েছিলাম। কারণ আমার জন্য এক বছর থেকে কাজটি রেখে দেয়া হয়েছে। টেলিফিল্ম প্রসঙ্গে পরিচালক সাজিন আহমেদ বাবু বলেন, আমি চিত্রনাট্যটি তৈরি করেছিলাম কয়েক বছর আগে। গত বছর মৌ আপা এবং তারিক আনাম খানের সিডিউল না পাওয়ায় কাজটি স্থগিত করতে হয়েছিল। কিন্তু চরিত্র দুটির জন্য এদের ছাড়া কাউকেই ভাবতে পারিনি। তাই এক বছর পর তাদের নিয়েই কাজটি করতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। আশা করছি টেলিফিল্মটি দর্শকদের ভাল লাগবে। মাহমুদ দিদার ও তাবারক হোসেনের ‘নির্জন উপকূলে’ : তাবারক হোসেন রচিত ‘নির্জন উপকূলে’ টেলিফিল্মটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন মাহমুদ দিদার ও তাবারক হোসেন। টেলিফিল্মটি প্রচার হবে আর টিভিতে ঈদের দ্বিতীয় দিন রাত ১১-৩০ মিনিটে। ‘নির্জন উপকূলে’ টেলিফিল্মটি প্রযোজনা করেছে ইনভেনশন। সন্তানের সুস্থ মানসিক বিকাশে একজন বাবা ও একজন মায়ের ভূমিকার তুলনামূলক চিত্রের মাধ্যমে আদর ও শাসনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়েছে এই প্রেমের কাহিনী চিত্রে। টেলিফিল্মের কাহিনীতে দেখা যাবে কণা একজন ধনাঢ্য ব্যক্তির মা হারা অতি আদরের একমাত্র সন্তান। তার কোন চাওয়াই অপূর্ণ থাকে না। তার সকল ইচ্ছে, জেদ তার বাবা পূরণ করেন। মা না থাকার কারণে তার বাবা তাকে কোন দিন কোন প্রকার শাসন করেনি। ফলে কণার আচার-আচরণে অন্যকে তুচ্ছ-চাচ্ছিল্য করা ও অন্যের অসহায়ত্ব নিয়ে অন্যায়ভাবে আনন্দ পাওয়া ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয়। তার বাবার অর্থ-প্রতিপত্তির কল্যাণে তার চারপাশে তোষামোদকারী বন্ধু-বান্ধবের অভাব হয় না। কিন্তু কেউ তার প্রকৃত বন্ধু না। অন্যদিকে শিশির পিতৃহারা একজন স্কুল শিক্ষিকার একমাত্র সন্তান। সে একজন মেধাবী ছাত্র এবং আচার-আচরণে খুবই ভদ্র ও বিনয়ী। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়ও পারদর্শী। কণা আর সে একই কলেজে একই বিভাগে পড়াশোনা করে। শুরু থেকে কণা শিশিরের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তারপরও শিশির কোন প্রতিবাদ করে না। ভাল আচরণ ও বিনয়ের কারণে সে আস্তে আস্তে সবারই প্রিয় পাত্রে পরিণত হয়। সে তার মায়ের কাছ থেকে বিনয়ী হতে শিখেছে। শিশিরের চারিত্রিক গুণাবলীর কারণে কণা ধীরে ধীরে তার প্রতি দুর্বল হতে থাকে, কিন্তু অতিরিক্ত মিথ্যা অহমিকার কারণে সে তা প্রকাশ করতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকে। ইতোমধ্যে তাদের ¯œাতক পর্যায়ে লেখা পড়া শেষ হয়ে যায়। কণা তার ভুল বুঝতে পারে। কিন্তু যখন সে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইতে মনস্থির করে, তখন জানতে পারে শিশির এবং তার মা এই মফস্বল এলাকা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গিয়েছে। যার খোঁজ কেউ জানে না। কণা তখন থেকেই আত্মদহনে জ্বলতে থাকে। আস্তে আস্তে সে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। তারপর ঘটতে থাকে অনেক নাটকীয় ঘটনা। জিএম সৈকতের দুই টেলিফিল্ম : আসন্ন ঈদে জিএম সৈকতের দুটি টেলিফিল্ম প্রচার হবে। এর মধ্যে টেলিফিল্ম ‘সাগরপাড়ের কন্যা’ আজ চাঁদ রাত রাত ১১টায় বৈশাখী টেলিভিশনে এবং ১১-৫০ মিনিটে এটিএন বাংলায় প্রচার হবে বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের নিয়ে নির্মিত টেলিফিল্ম ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’। মৃত্যুঞ্জয় সরদার উচ্ছ্বাসের রচনায় ‘সাগরপাড়ের কন্যা’ টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন ডি এ তায়েব, অনন্যা অনু প্রমুখ। অন্যদিকে প্রিয় চট্টোপাধ্যায়ের রচনায় ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’ টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন ভারতের পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, তথাগত এবং বাংলাদেশের অস্পরা সুহি, নাদের চৌধুরী প্রমুখ। জিএম সৈকত বলেন ভিন্ন ধারার দুটি গল্প নিয়ে টেলিফিল্ম দুটি নির্মাণ করা হয়েছে। আশা করি দর্শকরা ভিন্নতা খুঁজে পাবেন। শাহীন রেজার টেলিফিল্ম ‘কবিতাকান্না’ : ঈদের অনুষ্ঠানমালায় প্রচারের জন্য নির্মিত হয়েছে বিশেষ টেলিফিল্ম ‘কবিতাকান্না’। কবি ও নির্মাতা শাহীন রেজার চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুব্রত, জামিলুর রহমান শাখা, চিত্রনায়ক আশিক, জিদান, চিত্রনায়িকা আঞ্জুমান, শোয়াইব, অলকা সরকার, লুতু সরকার, আসমা আহমেদ প্রমুখ। টেলিফিল্মের উপদেষ্টা পরিচালক মাসুদ আজাদ, প্রধান সহকারী পরিচালক আঞ্জুমান, সহকারী পরিচালক আরিফ, ইদ্রিস রায়হান, ক্যামেরায় মঞ্জু, কারিগরি সহযোগিতায় উইজার্ড মিডিয়া, সম্পাদনায় এসএম রনি। টেলিফিল্মটি একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে প্রচার হবে।টেলিফিল্মের কাহিনী গড়ে উঠেছে তিনবন্ধু নীলু, রনি ও ইমন এবং নায়িকার প্রবাসী খালা তো ভাই হাসানকে নিয়ে। কাহিনীতে দেখা যায়; নিলু আর রনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ঢাকার মেয়ে নিলু কবিতা লেখে আর গ্রামের ছেলে রনি ভালবাসে গলা ছেড়ে গান গাইতে। গান আর কবিতার মেলবন্ধনে গড়ে ওঠা ওদের সম্পর্কে একদিন এসে যুক্ত হয় ইমন। বড়লোকের ছেলে ইমন এমবিএ শেষ করে- বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টায় ব্যস্ত। ধানম-ি লেকের পাশে সবুজ আড্ডায় কেটে যায় দিন। এদিকে বিদেশ থেকে দেশের টানে ঢাকায় আসে নিলুর খালা তো ভাই হাসান। হাসান ছোটবেলা থেকেই নিলুকে মনে মনে ভালবাসে কিন্তু তা প্রকাশের সুযোগ তার হয়ে ওঠেনি কোনদিন। একদিকে রনি আর ইমনের বন্ধুত্ব অন্যদিকে হাসানের স্নেহের মাধ্যমে সময় কেটে যায় নিলুর। কিন্তু এ আনন্দে বাদ সাধে তিনটি ঘটনা।
×