ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে ভারতীয় গরুর আমদানি বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রাজশাহীতে ভারতীয় গরুর আমদানি বেড়েছে

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী থেকে জানান, জমজমাট কেনাবেচা শুরু হয়েছে রাজশাহীর পশুহাটগুলোতে। কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসায় শেষ মুহূর্তে গরু-ছাগল আমদানি ও কেনাবেচা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাটগুলো গরু-ছাগলে ভরে উঠেছে। কোরবানির গরু আর ছাগলে একাকার হয়ে উঠেছে হাটগুলো। শেষ মুহূর্তে এ অঞ্চলের হাটগুলোর ভারতীয় গরুর আমদানি বেড়েছে। দেশী গরুর চাহিদা বেশি থাকায় দাম খুব একটা কমেনি। এছাড়া হাটগুলো ছাগল আমদানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ছাগলের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। কোরবানির হাটে দেশীয় গরুর পাশাপাশি ছাগলের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে বিক্রেতারা দামও হাঁকছেন আকাশছোঁয়া। রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠে সিটিহাট। কোরবানির পশু কিনতে নগরসহ এ অঞ্চলের মানুষ এই হাটের ওপরই নির্ভরশীল। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, হাঁটু কাদা-জল ঠেলেই মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছেন পছন্দের গরু। সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। গরু বিক্রেতাদের সঙ্গে দামদর নিয়ে চলছে ক্রেতাদের হৈ চৈ চিৎকার। এ হাটের ক্রেতাদের অভিযোগ, অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। সে কারণে নির্ধারিত বাজেট পছন্দের গরু মিলছে না। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট সাইজের গরুগুলোরই দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। মাঝারি সাইজের গরুর দাম ৫০ থেকে ৬৫ হাজার ও বড় সাইজের গরুগুলো ৭০ থেকে দেড় লাখ পর্যন্ত দাম হাঁকানো হচ্ছে। বরিশালে দেশী গরুর কদর ॥ দাম চড়া স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে জানান, দেশী গরুতে জমে উঠেছে নগরীসহ জেলার প্রতিটি পশুর হাট। তবে এসব হাটে গরুর দাম বেশ চড়া। শুরুতে এসব হাটে বেচাকেনা কম থাকলেও ঈদের আগ মুহূর্তে হাটগুলোতে ক্রেতা সমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে। গৌরনদীর কসবা গো-হাটে ভারতীয় গরু উঠলেও দেশী গরুর কদর বেশি ক্রেতাদের কাছে। ক্রেতারা বলছেন, এবার গরুর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। ফলে মধ্যবিত্তদের গরু কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ গরুই ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে। লাইন আকারে গরু সাজিয়ে রাখা হচ্ছে যাতে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে হাটের মধ্যে চলাচল করতে পারেন। তিনি আরও জানান, হাটে জাল টাকা শনাক্তে মেশিন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিসহ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। যশোরে দাম ক্রেতাদের নাগালে স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস থেকে জানান, দেশী খামারিদের লালন পালন করা গরু ছাগলে ভরপুর যশোরের হাটগুলো। দামও রয়েছে ক্রেতাদের সামর্থ্যরে মধ্যে। তবে ঈদকে সামনে রেখে কিছু ভারতীয় গরু আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খামারিরা। তারা অবিলম্বে ভারতীয় গরু আনা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন, অন্যথায় তাদের বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এদিকে সুস্থ গরু ছাগলের নিরাপদ মাংস নিশ্চিত করতে হাটগুলোতে তৎপর রয়েছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা। ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ করে দেয়ায় গত বছর কোরবানি ঈদে তার প্রভাব ছিল লক্ষ্যণীয়। তবে সে সঙ্কট কাটাতে কৃষক ছোটবড় খামার তৈরি করেন। কেবল যশোরে গড়ে ওঠে প্রায় ১১ হাজার খামার। খামারে লালন পালন করা গরুতে কোরবানি ঈদের হাট এখন ভরপুর। জেলার সকল হাটেই পর্যাপ্ত উঠছে খামারিদের মোটতাজা করা গরু। যোগান বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাল দাম পাচ্ছেন না বলে দাবি করেছেন খামারিরা। তবে ক্রেতারা বলছেন কোরবানির গরুর দাম তাদের সমর্থ্যরে মধ্যেই রয়েছে। শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাতমাইল হাটে আসা আব্দুস সালাম নামে এক খামারি বলেন, তিনি ৫টি গরু মোটাতাজা করেছেন কোন প্রকার ওষুধ ছাড়া। কিন্তু হাটে এসে দেখেন গরুর যোগান অনেক। যেদিকে তাকান সেদিকেই গরু আর গরু। যে কারণে কাক্সিক্ষত দাম বলছেন না ক্রেতারা। তিনি আরও বলেন, একটি গরুর দাম চেয়েছেন ৮৫ হাজার, অথচ দাম বলছে ৭০ হাজারের কাছাকাছি। রফিকুল ইসলাম নামে অপর এক খামারি বলেন, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে তিনি ২০টি গরু পালন করেছেন। সবক’টিই হাটে এনেছেন। কিন্তু ভাল দাম পাবেন বলে মনে হচ্ছে না। ঠাকুরগাঁওয়ে দাম বেশি, ক্রেতারা বিপাকে নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও থেকে জানান, শেষ মুহূর্তে জেলার ৭০টি হাটে জমজমাট বেচাকেনা শুরু হয়েছে। প্রতিটি হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক কোরবানির পশু রয়েছে। এ বছর কোরবানির হাটে বিদেশী গরুর আমদানি কম হওয়ায় দেশী গরুর চাহিদা বেড়ে গেছে। আর এ সুযোগে গরুর চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন খামারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ফলে সাধারণ ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। খামারিরা জানান, এবার গরু পালনে বেশি খরচ হয়েছে। তাছাড়া গরুর খাদ্যেরও দাম বেশি। এজন্য এবার গরুর দাম তুলনামূলক বেশি। অপরদিকে গরু ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, ভারতীয় গরু না আসায় এবার বেশি দামে গরু“ কিনতে হচ্ছে। গতবছর যে গরুর দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবার সে গরু ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে বলে জানান তারা। দেশী পাইকাররা ভারতীয় গরু না আসায় দেশী গরুর দাম কমাচ্ছে না। জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফতর জানায়, জেলার সবচেয়ে বড় কয়েকটি হাটে যেমন মাদারগঞ্জ, শিবগঞ্জ, ফাড়াবাড়ি, খোচাবাড়িতে সর্বক্ষণিক তদারকি করার জন্য ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম রয়েছে। যারা সর্বক্ষণিক রোগাক্রান্ত ও ক্ষতিকারক ওষুধে মোটাতাজাকরণ গরু চিহ্নিত করে আইনী ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া হাটে জালনোট শনাক্তকরণ মেশিন নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের তিনটি টিমও তৎপর। ঝালকাঠিতে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝালকাঠি থেকে জানান, ঝালকাঠি জেলার শতাধিক স্থানে জমে উঠেছে কোরবানির হাট। এ বছর গরুর দাম ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি বলে দাবি করেছে ক্রেতা এবং গরুর বেপারিরা। কোরবানি উপলক্ষে ঝালকাঠি জেলায় এ বছর ছোট ছোট খামারিরা ২৫-৩০ শতাংশ গরু বেশি লালনপালন করেন। এ বছর ১৫টি গরুর হাট বেড়েছে। সরকারী নির্দেশনায় গরুর হাটগুলোতে জাল টাকা শনাক্তকরণের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা মেশিন নিয়ে এসেছেন। হাটের ইজারাদাররা দাবি করেছেন আরও গরু এলে দাম কিছুটা কমতে পারে। গফরগাঁওয়ে দাম বেশি নিজস্ব সংবাদদাতা, গফরগাঁও থেকে জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রধান প্রধান হাট-বাজারে জমে উঠেছে বেচাকেনা । গফরগাঁও পৌর শহরসহ ছোটবড় কয়েকটি হাটে ক্রেতা -বিক্রেতার ভিড় বেড়েই চলছে । গতবারের চেয়ে এবার দামও বেড়েছে। গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া, পালের বাজার, গাভীশিমূল বাজার, কান্দিপাড়া, দত্তেরবাজার, শিবগঞ্জ বাজার, রসুলপুর আমরীতলা বাজার ও গয়েশপুর বাজারসহ আশপাশের উপজেলা ও চরাঞ্চল থেকে প্রচুর গরু- ছাগল এসেছে। গফরগাঁও পৌরসভার সালটিয়া বাজারে গরু কিনতে আসা মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, গরুর দামের সঙ্গে এবার ক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে। ২০ হাজার টাকা থেকে লাখ টাকা দামের গরু বাজারে উঠেছে। সাধারণ মানুষ দামের কারণে গরু কিনতে না পেরে শেয়ারে গরু কিনছে। ফরিদপুর থেকে আসা গরুতে ভরে গেছে চাঁদপুরের হাট নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুর জেলা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ে কোরবানির পশুরহাট ফরিদপুর থেকে আসা গরুর দখলে। গত ১ সপ্তাহ ধরে নৌপথে আসতে শুরু করেছে এসব গরু। শুক্রবার সকালে জেলা সদরের সবচাইতে বড় গরুরহাট চৌরাস্তা মোড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর থেকে আসা কয়েক হাজার গরু। ৪০ হাজার থেকে শুরু করে ২লাখ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্যের গরু রয়েছে এই হাটে। চৌরাস্তা মোড় হাটের ইজারাদার কবির হোসেন পাটওয়ারী বলেন, চাঁদপুরে ৯০ভাগ গরু ফরিদপুর থেকে আসে। শনিবার থেকে স্থানীয়ভাবে পালিত গরু ও ছাগল হাটে আসবে। রবি ও সোমবার ভাল বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী। পিরোজপুরে দাম বেশি হওয়ায় মধ্যবিত্তরা হিমশিম খাচ্ছেন নিজস্ব সংবাদদাতা, পিরোজপুর থেকে জানান, জেলা সদরের বলেশ্বর ব্রিজ সংলগ্ন বালুরমাঠ,পাঁচপাড়া বাজার, তেজদাসকাঠী গরুরহাট, জিয়ানগরে ঘোষেরহাট গরুরহাট, কাউখালীর দক্ষিণ বাজার, চৌরাস্তা বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ধীরে ধীরে পশুরহাট সরগরম হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন ক্রেতা থাকলেও ভাল বিক্রি নেই। তবে দুই একদিনের মধ্যে জমজমাট হয়ে উঠবে পশুরহাট। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সম্পূর্ণ হাট ছিল গরু, ছাগল পশুতে পরিপূর্ণ। তবে দাম বেশি থাকায় মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। অন্য বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি। অনেককে কোরবানির পশু না কিনে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে। সোমবার শেষ হাটে কোরবানির পশু কিনবেন বলে জানিয়েছেন অনেকে।
×