ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দাম চড়া

রাজশাহীতে খামারে পর্যাপ্ত গরু

প্রকাশিত: ০৪:১২, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রাজশাহীতে খামারে পর্যাপ্ত গরু

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ দাম বেশি হওয়ার কারণে কেনাবেচা তেমন শুরু না হলেও গরু-ছাগল আমদানিতে জমে উঠছে রাজশাহীর বিভিন্ন কোরবানির হাট। রাজশাহীর হাটগুলোতে এবার দেশী গরুর আমদানি তুলনামূলক অনেক বেশি হলেও দাম বৃদ্ধির কারণে এখনও কেনাবেচা তেমন জমেনি। শুধু রাজশাহী জেলার বিভিন্ন খামারে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে চাহিদার তুলনায় ৭০ হাজারের বেশি। তবে হাটে দাম চড়া হওয়ায় অনেকে আগ্রহ নিয়ে হাটে গেলেও ফিরে আসছেন। রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ৩ লাখ ২৩ হাজার ৬৮৪টি কোরবানিযোগ্য পশু আছে। এর মধ্যে গরু ৫৪ হাজার, ছাগল ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫০টি, মহিষ এক হাজার ২৩৪টি ও ভেড়া ১৪ হাজার। জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা দুই লাখ ৫৩ হাজারের মতো। এছাড়াও এসব পশুর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সীমান্ত থেকে আনা ভারতীয় গরু। রাজশাহী কাস্টম ও এক্সাইজ ভ্যাট কমিশনার ড. আবদুল মান্নান সিকদার বলেন, প্রতিদিন রাজশাহী অঞ্চলের ৯টি করিডরে দেড় থেকে দুই হাজার গরু-মহিষ ছাড়পত্র নেয়। গেল জুলাই মাসে ৯টি করিডরে ৪০ হাজার ৮৬৫টি গবাদি পশু ছাড়পত্র নেয়। পশু বেশি মজুদ থাকলেও কোরবানির হাটগুলোতে পশুর দাম আকাশছোঁয়া। রাজশাহীর সিটি হাটে গিয়ে দেখা যায়, ছোট আকারের গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের গরু ৫০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা আর বড় সাইজের গরু ৮০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ পর্যন্ত। এদিকে হাটগুলোতে গরুর পাশাপাশি ছাগলের দামও চড়া। ছোট সাইজের ছাগল ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের ছাগল ১২ থেকে ২০ হাজার টাকা ও বড় সাইজের ছাগল ২২ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। নওগাঁ নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। পবিত্র ঈদ-উল-আযহা সামনে রেখে সাপাহার সীমান্ত গলিয়ে চোরাইপথে আসছে ভারতীয় গরু। ঈদকে সামনে রেখে এক শ্রেণীর চোরাকারবারি এখন ভারত থেকে চোরাইপথে গরু আনতে যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা প্রতি রাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে গিয়ে নির্দ্বিধায় গরু নিয়ে আসছে। তবে এজন্য তাদের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি ও স্থানীয় থানাকে ম্যানেজ করেই গরু আমদানি করতে হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক গরু ব্যবসায়ী জানিয়েছেন। চোরাই পথে ভারত থেকে আনা দেশী আকৃতির ছোট-বড় গরুগুলো হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণ আমদানি হওয়ায় এবার কোরবানির পশুর দাম সকলের নাগালের মধ্যেই রয়েছে বলে ক্রেতারা দাবি করছেন। জানা গেছে, অতীতে সাপাহার সীমান্ত দিয়ে অসংখ্য ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আনা হতো। কিন্তু গরু ব্যবসায়ীদের কষ্ট করে সুদূর চাঁপাইনবাগঞ্জ থেকে সরকারী ভ্যাট-ট্যাক্সের কাগজ সংগ্রহ করতে হতো। এ কারণে বিগত ২০১৩ সালে সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি সাপাহার উপজেলার সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের সুবিধার্থে উপজেলার খঞ্জনপুর সীমান্তে একটি বিট করিডর ব্যবস্থা চালু করেন। এর পর মাত্র ৬ মাসে ওই করিডর থেকে কয়েক কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আয় হয়। এর পর কতিপয় অসাধু ব্যক্তি সরকারী রাজস্বের তিন/চার গুণ অধিক টাকা চাঁদা হিসেবে আদায় করা শুরু করে এবং বেশ কয়েকজন রাখাল বিএসএফের গুলিতে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় করিডরটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিজিবি সদস্যরাও সীমান্তে কঠোর অবস্থানে থাকায় ভারত থেকে গরু আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বিজিবি-বিএফএস ও স্থানীয় থানা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এক শ্রেণীর চোরাকারবারি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আবারও ভারতে গিয়ে গরু আনতে শুরু করে। এখন ভারত থেকে আসা গরুগুলো থেকে সরকারী কোষাগারে কোন অর্থ জমা না পড়লেও সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনের পকেটে মোটা অংকের টাকা জমা পড়ছে বলে অভিযোগ। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাত হলেই সাপাহার উপজেলার হাপানিয়া, কলমুডাঙ্গা, পাতাড়ী, বামনপাড়া, সোনাডাঙ্গা ও পতœীতলার উপজেলার হাটশাঁওলী, রাধানগর, শীতলমাঠ সীমান্ত এলাকাগুলো চোরাকারবারিদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হচ্ছে। চোরাকারবারি ও তাদের দোসরদের আনাগোনায় প্রায় সারারাত ওই সব এলাকা মুখরিত হয়ে থাকছে বলে সীমান্তে বসবাসকারীরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার ও থানা প্রশাসন সাংবাদিকদের কাছে তাদের ম্যানেজ করে গরু আনার অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।
×