ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিয়াবাসীর দুর্ভোগ যেন শেষ হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সিরিয়াবাসীর দুর্ভোগ  যেন শেষ হচ্ছে না

সমুদ্র উপকূলে পড়ে থাকা মৃত সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির নিথর মৃতদেহের ছবি বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছিল। শুক্রবার ওই ঘটনার এক বছর পূর্ণ হয়। সিরিয়ার একটি অভিবাসী পরিবার তুরস্ক হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে নৌযানটি দুর্ঘটনাকবলিত হয়। এতে পরিবারের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে শিশুটি মারা যায়। ঘটনার এক বছর পার হলেও গৃহযুদ্ধকবলিত সিরিয়ায় শান্তি ফিরে আসেনি। বন্ধ হয়নি জীবনবাজি রেখে ইউরোপ অভিমুখে অভিবাসীদের যাত্রাও। অবশ্য সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের ফলে অভিবাসীগমনের মাত্রা অবশ্য কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। সৈকতে পড়ে থাকা মৃত শিশু আয়লানের ওই ছবি যুদ্ধকবলিত লাখ লাখ সিরীয় অভিবাসীর দুর্ভোগ ও দুর্দশার প্রতীকে পরিণত হয়েছিল। মর্মান্তিক সেই ছবি কোটি কোটি মানুষের মানবিকতাবোধকে আলোড়িত করলেও সিরিয়াবাসীর দুর্দশা লাঘব করতে পারেনি। বরং এই সময়ের মধ্যে ওমরান দাকনিশের আরেকটি অভিবাসী শিশুর মর্মান্তিক ছবি দেখেছে বিশ্ববাসী। একটি কমলা রংয়ের এ্যাম্বুলেন্সের সিটে বসা গোলার আঘাতে আহত শিশু ওমরানের ছবি দেখে শিউরে ওঠে মানুষ। ছবি দুটো নিয়ে সরগরম হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সিরিয়াবাসীর দুর্দশা তুলে ধরতে কার্টুন শিল্পীরা তৈরি করেন কোলাজ। আয়লানের ভাই গালিব এবং মা রিহান ওই দুর্ঘটনায় মারা যান। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর কোবানিতে তাদের সমাহিত করা হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের ফটো এডিটররা বলছেন, আয়লান বা ওমরানের ছবিগুলো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে, কারণ ছবিগুলো সাধারণ মানুষের সহানুভূতিবোধকে জাগিয়ে তুলেছে। সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধে আহত ও নিহত এবং তাদের স্বজনদের ছবি প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমে আসছে। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ছবিগুলো ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করছে কিন্তু সিরিয়ার লোকজনের দুর্ভোগ লাগভের জন্য তারা সময়ক্ষেপণ ছাড়া কিছুই করছে না। আয়লান বা ওমরানের মতো হাজার হাজার যুদ্ধাহত সিরীয় শিশুর জন্য তারা কিছুই করছে না। এদিকে অভিবাসীদের জন্য দরজা উন্মুক্ত রাখার জন্য ইউরোপের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আয়লানের বাবা আব্দুল্লাহ কুর্দি। বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে আব্দুল্লাহ আশা প্রকাশ করেন, সিরিয়ায় যুদ্ধ অবসানে পশ্চিমা দেশগুলো ভূমিকা রাখবে। আব্দুল্লাহ বর্তমানে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে বাস করছেন। সেখান থেকে বিবিসির বৈদেশিক সংবাদদাতা ফার্গাল কেনিকে তিনি বলেন, ‘আয়লানের ঘটনার পর বিশ্ব যথেষ্ট সহানুভূতি দেখায়। কিন্তু সেটি একমাসও স্থায়ী হয়নি। যুদ্ধের তীব্রতা কেবল বাড়ছে তেমনি বেড়েছে হতাহতের সংখ্যা। বিষয়টি আমার জন্য বেদনাদায়ক।’ আয়লানসহ অন্যান্য শরণার্থীদের মৃত্যুর জন্য তুরস্কের একটি আদালত চলতি বছর দুই সিরীয়কে চার বছর কারাদ- দিয়েছে।
×