ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

জনতার উদ্যোগে কলাপাড়ায় বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২৯ আগস্ট ২০১৬

জনতার উদ্যোগে কলাপাড়ায় বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৮ আগস্ট ॥ জনগণ ও পাউবোর সমন্বিত উদ্যোগ। ভুক্তভোগী জনগণ নিজেদের অর্থে বিকল্প বেড়িবাঁধ করার জমি কেনার টাকা দিলেন। আর বেড়িবাঁধ করার অর্থ দিল পাউবো। চম্পাপুর ইউনিয়নের দেবপুরে রামনাবাদ নদীতে বিলীন হওয়ায় জোয়ারের প্লাবন থেকে নিজের বাড়িঘর ও ফসলি জমি রক্ষায় ধানখালী ও চম্পাপুর ইউনিয়নের অন্তত সাত গ্রামের কৃষক চাঁদা তুলে এ উদ্যোগ নিয়েছেন। বিকল্প বেড়িবাঁধটি করতে প্রায় ১৬ বিঘা জমির দরকার ছিল। এজন্য জমির মালিকদের সঙ্গে সকল শ্রেণীর কৃষকসহ সাধারণ মানুষ বসে তাদের বাঁধ করার জন্য জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ আট লাখ টাকা সংগ্রহ করেছেন। তারা একে ক্ষতিপূরণ বলতে রাজি নন। জমির মালিকদের সম্মানী দিচ্ছেন। ওই জনপদের হাজারও কৃষকের এমন সমন্বিত সহায়তার অংশগ্রহণের ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতোমধ্যে বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। বসতভিটাসহ হাজার হাজার একর জমির আমনসহ বিভিন্ন ফসল রক্ষার বেড়িবাঁধটি এবছর রামনাবাদ নদীতে বিলীন হয়ে ডুবে যায়। মানুষের রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ডুবে যায় জোয়ারের পানিতে বাড়িঘর। ভেসে যায় ঘের ও পুকুরের মাছ। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিকল্প ২৭০০ ফুট বিকল্প বেড়িবাঁধ করতে পরিকল্পনা নেয়। প্রয়োজনীয় বরাদ্দও তারা পেয়ে যায়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণে কোন অর্থ ছিল না। ফলে বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। বিকল্প বাঁধ নির্মাণকারী স্পটের জমির মালিকদের নিয়ে দুই ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সমন্বয় সভা করেন। তাদের বোঝাতে সক্ষম হন। নামমাত্র সম্মানী মূল্যের মতো কড়া (তিন শতক) প্রতি পাঁচ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্তে উপনীত হন। এ টাকা দেন দু’টি ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সকল মানুষ। ফলে শুরু হয় অনিশ্চিয়তা দেখা দেয়া বিকল্প বাঁধ নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে বিকল্প বাঁধ নির্মাণের ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে পাউবো সূত্র নিশ্চিত করেছে। ধানখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ গাজী এবং চম্পাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার, মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা কমান্ডার বদিউর রহমান বন্টিন স্থানীয় লোকজন নিয়ে বিষয়টি সমন্বয় করেন। ফলে এ বছর দুটি ইউনিয়নের কৃষকের আমন আবাদে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল, তা কেটে যাচ্ছে। জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন এ দুটি ইউনিয়নের মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, দুই হাজার সাত শ’ ফুটের মতো দীর্ঘ এ বিকল্প বেড়িবাঁধটি করতে জনগণের সহায়তা সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল, যা তারা করেছেন। নইলে জমি অধিগ্রহণ করে কাজটি করা সম্ভব হতো না। তিনি জানান, আট ফুট উচ্চতার এ বাঁধটির টপ হচ্ছে আট ফুট প্রস্থ এবং বটম হচ্ছে ২৬-২৭ ফুট। এছাড় স্লোপ রক্ষায় জিও টেক্সটাইলের ব্যাগও দেয়া হবে। এ জন্য প্রায় ৪৮ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব খাত থেকে ব্যয় হচ্ছে।
×