ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে দালালদের বিচার দাবি

অকথ্য নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন সৌদি ফেরত নারী

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ৯ আগস্ট ২০১৬

অকথ্য নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন সৌদি ফেরত নারী

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ৮ আগস্ট ॥ সৌদি ফেরত নির্যাতিত নারী সংবাদ সম্মেলন করে দালালদের বিচার দাবি করেছেন। আর যেন কোন নারীকে নির্যাতনের শিকার হতে না হয়, সেজন্য দালালদের অবিলম্বে গ্রেফতার দাবি করেন ওই নারী। তা না হলে একের পর এক দালালদের খপ্পরে পড়ে সৌদিতে দরিদ্রঘরের নারীরা নির্যাতনের শিকার হবে। সোমবার দুপুরে উপজেলার মঠেরঘাট এলাকার রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মমতাজ বেগম নামে ওই নির্যাতিত নারী। মমতাজ বেগম চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার হুগুলি এলাকার ফারুক মিয়ার স্ত্রী। তারা স্বামী-স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার বরাপ (সুতালাড়া) এলাকার হাফেজ শিকদারের বাড়িতে বসবাস করে স্থানীয় অন্তিম নিটিং, ডাইং এ্যান্ড ফিনিশিং কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সংবাদ সম্মেলনে মমতাজ বেগম জানান, ৩ মাস পূর্বে হাটিপাড়া এলাকার রওশন আলী খানের ছেলে আবুল হাসেম খান, বরপা এলাকার দালাল জামাই জাকির হোসেনসহ সহযোগী দালাল লতিফ, মোগল পাটুয়ারী ও হাসান বিনা খরচে বিদেশ নেয়ার প্রলোভন দেখায় মমতাজ বেগমকে। দালালরা তাকে জানায়, বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে স্বামীসহ পরিবারের কাউকে জানানো যাবে না। সৌদিতে বাসাবাড়িতে কাজের বিনিময়ে মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হবে বলে জানায় ওই দালালচক্র। এরপর পর্যায়ক্রমে ২২ হাজার টাকা নিয়ে মাসখানেক পর সৌদিতে পাঠায় দালালচক্র। মমতাজের সঙ্গে আরও কয়েক নারীকেও পাঠানো হয়। সৌদি এয়ারপোর্টে সৌদি দালালচক্রের হাতে তুলে দেয়া হয় মমতাজকে। ওই সৌদি দালাল অপর সৌদি নাগরিকের হাতে মমতাজকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বুঝিয়ে দেয়া হয়। সৌদি নাগরিক জানায়, বাংলাদেশের দালালদের কাছ থেকে মমতাজকে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে এনেছেন। পরে সৌদি নাগরিক ও তার পরিবারের সদস্যরা মমতাজকে ৫ দিন কোন খাবার না দিয়ে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের পর অসুস্থ হলে দ্রুত সেখানের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় মমতাজকে। ওই হাসপাতালে অপারেশন করে একটি কিডনি নিয়ে নেয় বলে মমতাজ অভিযোগ করেন। ১২ দিন হাজতবাস করেন মমতাজ। বাংলাদেশী নারীদের বিভিন্নভাবে অমানুষিক নির্যাতন করে জেলহাজতে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। যা প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয়। জেলহাজতে যখন মৃত্যুর মুখে তখন মমতাজকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
×