ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পতেঙ্গায় পুলিশী অভিযানে আনসারুল্লাহর পাঁচ সদস্য আটক

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২ আগস্ট ২০১৬

পতেঙ্গায় পুলিশী অভিযানে আনসারুল্লাহর পাঁচ সদস্য আটক

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার কাঠগড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে, বিদেশে পালানোর সময় আটক হিযবুত জঙ্গী মাহবুব ইকবাল মুন্নাকে সিলেট কোতোয়ালি থানায় প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অভিযান চালিয়ে উপজেলা জামায়াত সেক্রেটারিসহ ১০জন এবং খুলনার কয়রা থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি ছাত্রশিবির নেতা আসাদুল শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার। চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থানার কাঠগড় এলাকায় পরিচালিত পুলিশী অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) আরও ৫ সক্রিয় সদস্য। গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার গভীর রাতে ওই এলাকার মুসলিমাবাদে ‘শেরে পতেঙ্গা’ নামের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি ল্যাপটপ ও বেশ কিছু জিহাদী বই। কয়েক দফায় নগরী ও সীতাকু- এলাকা থেকে ৮ জঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সিএমপির উপ-কমিশনার (বন্দর) নাজমুল হাসান জানান, রবিবার রাত পৌনে ১টার দিকে নগর গোয়েন্দা বিভাগের একটি জঙ্গীবিরোধী টিম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালায় মুসলিমাবাদ এলাকার ঐ বাড়ির চতুর্থ তলায়। সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় ৫ জনকে। তারা হলেন- মোঃ আক্কাস আলী ওরফে জাহেদুল ইসলাম ওরফে নয়ন (২৩), মোঃ আতিকুল হাসান ওরফে ইমন (২৬), জামশেদুল আলম ওরফে হৃদয় (২১), মোঃ রুবেল (২৬) ও মোঃ মহিউদ্দিন (১৮)। এদের মধ্যে প্রথম চারজনের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায় ও শেষোক্তজনের বাড়ি বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায়। চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করে তারা সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিল। নাশকতামূলক কর্মকা-ে প্রস্তুতিও ছিল তাদের। গোপন বৈঠক করার সময় এরা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো চট্টগ্রামেও জঙ্গীবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যেই ধরা পড়েছে একাধিক জঙ্গী সংগঠনের বেশ কজন সক্রিয় সদস্য। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিও মিলেছে। রবিবার রাতের অভিযানে যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারাও এবিটির সক্রিয় সদস্য। নাজমুল হাসান আরও জানান, গ্রেফতার ৫ জনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের অন্যান্য সহযোগীদের খোঁজে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতার আসামিরা স্বীকার করেছে যে, তারা এবিটি’র পরিকল্পনা অনুযায়ী সাংগঠনিক কর্মকা-কে বেগবান করতে ঐ স্থানে গোপনে অবস্থান করছিল। সিলেট অফিস ॥ বিদেশে পালানোর সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক হিযবুত জঙ্গী মাহবুব ইকবাল মুন্নাকে রবিবার রাত ১১টার সময় সিলেট কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। হিযবুত জঙ্গী মাহবুব ইকবাল মুন্না সিলেট নগরীর খাসদবীর বন্ধন আবাসিক এলাকার এফ-১ নম্বর বাসার মৃত আবদুল বাছিরের ছেলে ও লিডিং ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র। জানা যায়, মাহবুব ইকবাল মুন্নাকে শনিবার মালয়েশিয়ায় যাওয়ার প্রাক্কালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে খবর পেয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঢাকা থেকে তাকে সিলেটে নিয়ে আসে। ২০১১ সালে মদন মোহন কলেজের সামনে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণকালে মুন্না পুলিশের হাতে আটক হয়। কিছুদিন কারাগারে থেকে সে জামিনে মুক্ত হয়। পুলিশ জানায়, মাহবুব ইকবাল মুন্নার বিরুদ্ধে জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে বন্দরবাজার জামে মসজিদের সামনে লিফলেট বিতরণকালে হিযবুত জঙ্গীরা র‌্যাবের উপর হামলা চালিয়েছিল। এ হামলার সঙ্গেও মুন্না জড়িত ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। মুন্না ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে লিডিং ইউনিভার্সিটিতে অনুপস্থিত রয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান অমি ও মাসুদুর করিম চৌধুরীকে জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক করা হয়েছে। বাঁশখালী ॥ চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানা পুলিশের অভিযানে উপজেলা জামায়াত সেক্রেটারিসহ ১০ জকে আটক হয়েছে। রবিবার গভীর রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত পৌরসদরে এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) কেএম এমরান ভুঁইয়া ও বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেনসহ অর্ধ শতাধিক পুলিশ সদস্য। অভিযানে উপজেলা জামায়াত সেক্রেটারি মোঃ ইসমাইল (৪৫) ও তার সহযোগী শফিকুর রহমান (৩৭), আবু ছালেক (৪৬), রফিক আহমদ (৬০)সহ বিভিন্ন মামলার আরও ৬ আসামিকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। আটক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে বাঁশখালীতে সংঘটিত তা-বলীলা এবং অফিস আদালত পুড়িয়ে দেয়ার মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি নতুন করে জঙ্গী সম্পৃক্তার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। খুলনা অফিস ॥ সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কয়রা গ্রাম থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি ছাত্রশিবির নেতা আসাদুল শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আসাদুল কয়রা কপোতাক্ষ কলেজ শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি। কয়রা থানার ওসি শমসের আলী জানিয়েছেন, বেলা ১১টার দিকে তাকে তার বাড়ির সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে কয়রা সদর ইউনিয়নের ২নং কয়রা গ্রামের হাকিম শেখের ছেলে।
×