স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০০৮ সালের পর উপমহাদেশে নিজেদের শেষ ১৫ টেস্টের ১০টিতেই হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। ৪ ড্রয়ের বিপরীতে জয় মাত্র ১টিতে। তবু এই সিরিজে ফেবারিট তারা! কারণ প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক দৈন্যতা। ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে দেশটির ক্রিকেট। প্রতি ভার্সনেই চরম নাজুক অবস্থা। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে নেমে গেছে সাত নম্বরে। অন্যদিকে সোমবারই শীর্ষ দেশ হিসেবে আইসিসির পুরস্কার গ্রহণ করেছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। উপমহাদেশের চিরায়ত ব্যর্থতার পরও তাই তিন ম্যাচের এই সিরিজে ফেবারিট অসিরা। গ্রেট মাহেলা জয়াবর্ধনে-কুমার সাঙ্গাকারার অবসরে পর ধুঁকছে লঙ্কানরা। হারছে একের পর এক সিরিজে। ক’দিন আগেও ইংল্যান্ড থেকে বিধ্বস্ত হয়ে ফেরা এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের দল নিশ্চিত করেই চাপে থাকছে। পাল্লেকেলে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে দশটায়।
ঘরের মাটিতে মানসিকভাবে এতটা পিছিয়ে থেকে আর কখনই সিরিজ শুরু করেনি লঙ্কানরা। প্রধান নির্বাচক সানাথ জয়সুরিয়ার কণ্ঠেও হতাশার সুর, ‘গুরুত্বপূর্ণ পেসাররা ইনজুরিতে। দল নির্বাচন করাটাই কাঠিন হয়ে পড়েছে! তারপরও আমরা চেষ্টা করব। আশা করছি, যাদের নেয়া হবে তারা সেরা পারফর্মেন্স প্রদর্শন করবে।’ বলেন দলটির ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য। ইনজুরিতে দ্রুতগতির বোলার ধাম্মিকা প্রসাদ, দুশমন্ত চামিরা। এমন কঠিন সিরিজেও তাই নতুন মুখ চারজন। ১৮ বছর বয়সী পেসার আসিথা ফার্নান্ডো ও বিশ্ব ফার্নান্ডো, স্পিনার লক্ষ্মণ সানদাকান ও ব্যাটসম্যান রোশন সিলভা। সবাই পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে ও চলমান ইংল্যান্ড সফরে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের হয়ে ভাল পারফর্মেন্স করে নজর কাড়েন। ব্যাটিংয়ে বড় ভরসা অধিনায়ক ম্যাথুস নিজে। সঙ্গে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে দিনেশ চান্দিমাল আর দিমুথ করুনারতেœকে। তবে ভাইটাল হয়ে উঠতে পারে স্পিন বোলিং। শ্রীলঙ্কায় স্পিনের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার দুর্বলতার ইতিহাস পুরনো। মুত্তিয়া মুরলিধরন অবসরে যাওয়ার পর লঙ্কান বোলিংকে একাই টানছেন রঙ্গনা হেরাথ। এই ৩৮ বছর বয়সেও অসাধারণ বাঁহাতি অর্থোডক্স স্পিনার। ৭০ ম্যাচে তার ঝুলিতে ৩০৪ উইকেট। অবশ্য স্বাগতিকদের স্পিন দিয়ে কাবু করার পরিকল্পনা এঁটেছে অস্ট্রেলিয়াও। এরই মধ্যে তারা সিরিজে বোলিং পরামর্শক হিসেবে লঙ্কান গ্রেট মুরলিধরনকে নিয়োগ দিয়েছে! টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিককে (৮০০) পেয়ে অসিরাও উজ্জীবিত। প্রস্তুতি ম্যাচে অসাধারণ বোল করেছেন দুই স্পিনার স্টিভ ও’কেফে এবং অভিজ্ঞ নাথান লেয়ন। কন্ডিশন চাইলে আজই তারা দুই স্পিনার নিয়ে নামতে পারে। ওদিকে ঘরের মাটিতে শত্রু শিবিরে যোগ দেয়ায় মুরালি লঙ্কান বোর্ডের (এসএলসি) কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
ব্যাটিংয়ে তুখোড় অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে আছেন ছোট্ট ফরমেটে দুরন্ত ফর্মে থাকা ডেভিড ওয়ার্নার। সাদা পোশাকেও ভাল করতে মরিয়া তিনি। কম যাবেন না জো বার্নস, উসমান খাজা, এ্যাডাম ভোগস, শন মার্শ। দুই স্পিনারের সঙ্গে পেসার নাথান কাল্টার নাইল, মিচেল মার্শ ও মিচেল স্টার্ককে নিয়ে অসিদের বোলিং লাইনও দুর্বার। ১৯৮৩ থেকে ২৬ টেস্টে মুখোমুখি হয়ে ১৭টিতেই জয় অস্ট্রেলিয়ার, হার ১ (১৯৯৯ সালে)। ড্র ৮ টেস্ট। ২০১১ সালের শেষ শ্রীলঙ্কা সফরেও সিরিজ জিতেছিল অসিরা। ২০০৭ থেকে দু’দেশের মধ্যকার দ্বৈরথ ‘ওয়ার্ন-মুরলিধরন’ ট্রফি নামে পরিচিত।