ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘বিচার বিভাগ স্বাধীন, তবে দেশের প্রতি দায়িত্বের কথা তারা মনে রাখবেন’

জঙ্গীদের জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর হওয়ার আহ্বান আইনমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১১ জুলাই ২০১৬

জঙ্গীদের জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর হওয়ার আহ্বান আইনমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিচার বিভাগের ‘দায়িত্বের কথা মনে রেখে’ জঙ্গীদের জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে ‘কঠোর’ হতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক। রবিবার বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন জঙ্গী হামলায় গ্রেফতার ব্যক্তিরা জামিনে বেরিয়ে যাচ্ছে বলে এক সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আবারও বলব, বিচার বিভাগ স্বাধীন। জামিনের হাত আমাদের না।’ আমরা সরকারের দিক থেকে বা নির্বাহী বিভাগের দিক থেকে যেটা করতে পারি, প্রসিকিউশন সার্ভিস যেটা আছে, তাদের আমরা এই সব মামলায় জামিন না দিতে বিচারকদের প্রতি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে তাদের যুক্তিতর্ক রাখতে বলেছি এবং বলছি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপরে কোন হস্তক্ষেপ না করে আমি শুধু এইটুকু অনুরোধ করব, দেশ ও জাতি আমাদের সকলের। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার একটা বিরাট দায়িত্ব কিন্তু বিচার বিভাগেরও। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে বিচার বিভাগকে তার সুবিবেচনায় অত্যন্ত কঠিন হতে আমি আবেদন করব। অভিযোগপত্রের দুর্বলতার কারণে অনেকের ‘ছাড় পাওয়ার’ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইন মন্ত্রণালয় থেকে কোন নির্দেশনা দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোঅপারেশনে বিশ্বাসী, সব কিছুর একটা পদ্ধতি আছে। এই সব গুরুত্বপূর্ণ মামলায় এই রকম ফাঁকফোকর যাতে না থাকে, সেইগুলো দেখে দেব। গুলশানে জঙ্গী হামলার পর ১০ দিনে ঘটনার বিষয়ে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের নিবৃত্ত করেন। ‘আমার বিশ্বাস যে প্রশ্ন করবেন, সেগুলো তদন্তকেন্দ্রিক না হলে ভাল হয়। কারণ আমি মনে করি, তদন্ত শেষ হওয়ার পর এতে কী কী বের হয়েছে, সে সম্পর্কে তথ্য দেয়া উচিত। ‘আমি শুধু আপনাদের বলব, এই তদন্ত সঠিক পদ্ধতিতে এবং সঠিক দিকে এগুচ্ছে। এ্যাটর্নি জেনারেল অফিস অনেক মামলায় জামিনের বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে তথ্য প্রমাণের অভাবে পড়ে অভিযোগের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি এইটুকু বলব, যে ক্ষেত্রে এ্যাটর্নি জেনারেল অফিস আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যে সব ক্ষেত্রে অন্য মন্ত্রণালয় বা তদন্তকারী সংস্থার সহায়তা চেয়েছে, আইন মন্ত্রণালয় সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ‘এখন থেকে এই সব মামলায় কোঅর্ডিনেশনের যেন কোন অভাব না হয়, সেটা আইন মন্ত্রণালয় দেখবে।’ এক পর্যায়ে হাইকোর্টে বিচারাধীন রমনা বটমূলে বোমা হামলার মামলা ও নিম্ন আদালতে বিচারাধীন ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা মামলার কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা নিয়েও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রসিকিউশন থেকে, এ্যাটর্র্নি জেনারেল অফিস থেকে চেষ্টা করব, এগুলোর ত্বরিত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা আমরা নেব। আপনারা এই ব্যবস্থার প্রতিফলন কিছু দিনের মধ্যেই দেখবেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা এখন চলমান। যতটুকু আমি জানি, শেষ পর্যন্ত ২২৫ জনের উর্ধে সাক্ষী হয়েছে, বিচার যেহেতু চলমান, সেই সম্পর্কে কোন কথা বলি না। এই ধরনের মামলার বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে না কি না জানতে চাইলে দ-বিধি, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের কথা উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশের এসব আইন এই ‘অপরাধগুলোকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার জন্য যথেষ্ট’।
×