ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভাড়ায় চালিত আরও দুই বিদ্যুত কেন্দ্র ফার্নেস তেল আমদানির অনুমতি পেল

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১৯ জুন ২০১৬

ভাড়ায় চালিত আরও দুই বিদ্যুত কেন্দ্র ফার্নেস তেল আমদানির অনুমতি পেল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার আরও দুটি ভাড়ায়চালিত বিদ্যুতকেন্দ্রকে ফার্নেস তেল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) ফার্নেস তেল বিক্রির পরিমাণ কমে যাওয়ার মধ্যে এই অনুমোদন দেয়া হলো। সরকারী উদ্যোগের বাইরে ভাড়ায় চালিত বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো নিজস্ব তেল আমদানি করলে করমুক্তি সুবিধা রয়েছে। এর বাইরে তাদের আরও ৯ ভাগ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। ফলে এখানে দুই দিক থেকেই রাষ্ট্রের লোকসান গুনতে হয়। এক দিকে বিপিসি মুনাফা বঞ্চিত হয় অন্যদিকে সরকার কোন কর পায় না। তবে এর বিপরীত যুক্তিও রয়েছে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)। বিদ্যুত বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন স্বাক্ষরিত দুটি পত্রে দেখা যায় মেসার্স এ্যাকরণ ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিস লিমিটেডকে আগামী এক বছরের জন্য এক লাখ ১০ হাজার টন তরল জ্বালানি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জুলাই থেকে আগামী বছরের জুলাই পর্যন্ত কোম্পানিটি এই পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করবে। বাংলা ট্রাক কমিউনিকেশনের মাধ্যমে কেন্দ্রটি তেল আমদানি করবে। চট্টগ্রামের জুলদায় এ্যাকরণের একটি ১০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র রয়েছে। গত পাঁচ জুন কোম্পানিটিকে সরকারের অনাপত্তির কথা জানানো হয়। একই দিন মেসার্স সিনহা পিপলস এনার্জি লিমিটেডকে তাদের ৫২ মেগাওয়াটের বিদ্যুতকেন্দ্রের জন্য তেল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। এই কেন্দ্রটিও জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত তেল আমদানি করে নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে পারবে। চিঠিতে তাদের ৫৬ হাজার টন তেল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। মুন্সীগঞ্জের কাঠপট্টিতে এই বিদ্যুতকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র বলছে, এখন দেশে ১৬টি ভাড়ায় চালিত বিদ্যুতকেন্দ্র নিজেরাই তেল আমদানি করে। এর বাইরে যেসব বিদ্যুতকেন্দ্র ফার্নেস তেল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে তারাও নিজস্ব উদ্যোগে জ্বালানি তেল আমদানি করার অনুমোদন চাইছে। বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সরকারের কর এড়িয়ে গেলে বেসরকারী উদ্যোক্তাদের সার্ভিস চার্জ দেয়ার পরও ১০ থেকে ১২ টাকা লিটারপ্রতি তেল আমাদনিতে লাভ হয় পিডিবির। এতে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমে আসে। এক্ষেত্রে বিপিসি মুনাফা বঞ্চিত হলেও উদ্যোক্তা কোম্পানিগুলোর মুনাফা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেবলমাত্র পিডিবি এবং বিপিসি নিজস্ব অবস্থান পরিবর্তন করতে না চাওয়ায় সরকারের হাত থেকে বিপুল পরিমাণ মুনাফার এই ব্যবসাটি হাতছাড়া হয়ে যায়। ফার্নেস তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে অনেকটা কমার পরও বিপিসি তা কমাতে না চাওয়ায় এই বিপত্তি ঘটে। একই মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের মধ্যে বিভাজন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিপিসি থেকে আলাদা হয়ে পৃথকভাবে জ্বালানি তেল আমদানির উদ্যোগ নেয় বিদ্যুত বিভাগ। সরকারী অবকাঠামো ব্যবহার করেই তেল আমদানি করছে বেসরকারী কোম্পানিগুলো। তবে এখন বেসরকারী কোম্পানিগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে বিপিসির জন্য অসুবিধার কারণ হচ্ছে।
×