ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে জমজমাট মোকাম

রোজায় বেড়েছে আমের চাহিদা

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ১৯ জুন ২০১৬

রোজায় বেড়েছে আমের চাহিদা

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় রোজার মাসে ক্রমেই বেড়ে চলেছে আমের দাম। প্রতিদিন আমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা খুশি হলেও ক্রেতারা হতাশ। আমের ভরা মৌসুমে এখন রাজশাহীতে পুরোদমে শুরু হয়েছে কারবার। প্রশাসনের সময় বেঁধে দেয়ায় এবার কেমিক্যালমুক্ত পাকা আমই রয়েছে বাজারে। গোপালভোগ শেষ হলেও এখন চলছে ল্যাংড়ার দেদার কেনাবেচা। রোজার মাসে আমের দর দিয়ে ব্যবসায়ীরা শঙ্কায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভাল লাভ পাচ্ছে তারা। বৃহৎ আমের মোকার জেলার পুঠিয়া বানেশ^র হাটের আম ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, ‘ভ্যাবছিলাম দেরিতে আম নাম্যালাম রোজাও পড়্যা গেলো ব্যবসা বুঝি লাটে উইঠলো। কিন্তু এবার রোজা পড়্যাই ভালোই ব্যবসা হছ্যে। ইফতারে মানুষ বোতলের জুস না খ্যায়া তাজা আমই খ্যাছে। দামও ভালো মিলছে। আমাদের ব্যবসাও চইলছে।’ জানা গেছে, এবার প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময় মেনে গাছ থেকে আম নামাচ্ছে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এতে একসঙ্গে অনেক আম পেকে যাওয়ায় সময় মতো তা বিক্রি নিয়ে চিন্তার রেখা ফুটে উঠেছিল তাদের। এর ওপর আম নামানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই রোজা শুরু হওয়ায় সেই উৎকণ্ঠা আরও বাড়ে। তবে রমজান মাসে বেচা-কেনা স্বাভাবিক থাকায় এবং বাজারে এবার আমের ভাল দাম পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত স্বস্তি ফিরেছে আমচাষী ও ব্যবসায়ীদের মনে। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজশাহীর আমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় হাসি ফুটেছে আম কারবারিদের মুখে। পুঠিয়ার বানেশ্বর আমের মোকামে বেলপুকুর গ্রামের আম ব্যবসায়ী ফরিদ শেখ বলেন, ভরা মৌসুমে গাছ থেকে আম ভাঙা, ঝুড়ি বোঝাই করে আম হাটে আনা আর বিক্রি করা নিয়েই এখন দিন-রাত কাটছে তাদের। আম ছাড়া অন্য কোন কাজের ফুরসত নেই। একেক জন ব্যবসায়ীর অধীনে অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন করে মৌসুমি শ্রমিক কাজ করছে। এদের কারও কাজ গাছ থেকে আম ভাঙা, কারো ঝুড়ি করা, কারও পরিবহন। কারও কেবল আম বিক্রি করা। ফলে আমের ভরা মৌসুমে গ্রামের কেউ আর ঘরে বেকার বসে নেই। ঈদের আগে কর্মসংস্থান হওয়ায় মজুররা বেজায় খুশি। আর সময়মতো আম বাণিজ্যের জন্য শ্রমিক পাওয়ায় তারাও খুশি। অবস্থা এমন হয়েছে যে, এখন গ্রামের জমিতে অন্য কাজ করার জন্যই পাইট (শ্রমিক) মিলছে না। আম ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে রাতেই পাইকাররা এসে দর-দাম মিটিয়ে ফেলেন। সকাল থেকে চাহিদানুযায়ী সেই আম ভাঙা এবং ক্যারেটজাত করা হয়। পরদিন সন্ধ্যায় গড়াতেই আম ট্রাকে লোড দেয়া শুরু হয়। রাতে সড়ক ফাঁকা হতেই তাদের যাত্রা শুরু হয়।
×