ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

রমজানে শপিংমল এলাকায় রাত পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৫ জুন ২০১৬

রমজানে শপিংমল এলাকায় রাত পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রমজান মাসে অর্থ লেনদেনে নিরাপত্তা দিতে শপিংমল এলাকায় ব্যাংকের শাখা রাত পর্যন্ত খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একই সঙ্গে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি। শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়ক ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করার পাশাপাশি পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণেও কাজ করবে। চাঁদাবাজি বন্ধে গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করছে। ব্যবসায়ীরা এ সংক্রান্ত তথ্য দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, রোজার মাসে ব্যবসায়ীদের ব্যাংক লেনদেনের জন্য সার্বক্ষণিক প্রশাসনিক সহায়তা দেয়া হবে। এছাড়া সব মার্কেটে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। রমজানে ব্যবসায়ীদের কি ধরনের সমস্যা হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে এখানে এসেছি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শনিবার ইউপি নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিয়োজিত পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ফিরে আসবেন এবং তারা রমজান উপলক্ষে কাজ করবে। মন্ত্রী বলেন, চাঁদাবাজি শূন্যের কোটায় আনা সম্ভব হয়নি। তবে আগের থেকে অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। আমাদের টার্গেট জিরো টলারেন্স। তিনি আরও বলেন, রমজান মাসে শপিংমলের অর্থ লেনদেনে নিরাপত্তা দিতে নিকটস্থ ব্যাংকের শাখা রাত পর্যন্ত খোলা রাখা হবে। শিগগিরই মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে সার্কুলার দেয়া হবে। এছাড়াও নগদ অর্থ বহনে যে কোন ব্যক্তি পুলিশের সহায়তা নিতে পারবেন। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন চাঁদাবাজি অনেক কমে গেছে। এরপরও কোথাও কোথাও চাঁদাবাজি হচ্ছে, তবে সব জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারি রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে কোন রাজনৈতিক চাঁদাবাজকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, রোজা ও ঈদ ঘিরে ঢাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রোজাকে কেন্দ্র করে শপিংমল কেন্দ্রিক তিন ধরনের নিরাপত্তা রাখা হবে। তিনি বলেন, প্রথম রোজা থেকে ১০ রোজা, ১০ রোজা থেকে ২০ এবং ২০ রোজা থেকে ঈদ পর্যন্ত তিন ধরনের নিরাপত্তা দেয়া হবে। রমজানের প্রথম দিকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, এরপর নির্বিঘেœ কেনাকাটা এবং সবশেষে গ্রামের বাড়ি যাওয়া ও ফিরে আসা। শপিংয়ের সময় যে স্থানে নারীদের সমাগম বেশি থাকবে, সে সব স্থানে নারী আইনশৃঙ্খলা কর্মীদের নিয়োজিত করা হবে বলেও জানান তিনি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, মলম পার্টির দৌরাত্ম্য বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮২ জনকে বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মলম পার্টি কিভাবে প্রতারণা করছে তার একটা ডকুমেন্টারি ফেসবুক, ইউটিউবে ছাড়া হবে। একই সঙ্গে শপিংমল, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চ ঘাট এবং রেল স্টেশনে প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হবে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য। রমজানে অনিরাপদভাবে অর্থ পরিবহনে কোন ধরনের ঝুঁকি নিতে নিষেধ করেছেন কমিশনার। তিনি বলেন, আমাদের টিম থাকবে। ঢাকা মহানগরীর যে কোন স্থানে যে কাউকে নিরাপত্তা দেবে। ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা প্রশাসক মোঃ সালাহ উদ্দিন, ডিসিসিআই সহ-সভাপতি হুমায়ুন রশিদ প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অপরাধতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়াউর রহমান। তিনি টিসিবি কে আরও কার্যকর করার পাশাপাশি সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং টিমের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বিশেষ করে রমজান মাসে পুলিশ বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য আনসার ও কমিউনিটি পুলিশ আরও বেশি সংখ্যায় নিয়োজিত করা প্রয়োজন। তিনি শীঘ্রই ‘একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ আইন’ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। সভাপতির বক্তব্যে হোসেন খালেদ বলেন, সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অর্জনে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা প্রদান করবে, তবে এ ক্ষেত্রে দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা একান্ত আবশ্যক।
×