ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধর, বাঁশখালীর ইউপি ভোট স্থগিত

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২ জুন ২০১৬

নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধর, বাঁশখালীর ইউপি ভোট স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় সব ইউপিতে ভোট স্থগিত করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করারও নির্দেশ নিয়েছে সংস্থাটি। কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরের কারণে বাঁশখালী উপজেলার সব ইউপির নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এই মামলা করবেন। কমিশন জানিয়েছে, আগামী শনিবার চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় ১৪ ইউপিতে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত ছিল। তবে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে ওই উপজেলার তিনটি ইউপিতে আগেই ভোট গ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশনার। বাকি ১১ ইউপির নির্বাচনে তালিকা অনুযায়ী পছন্দের প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ না দেয়ায় বুধবার উপজেলায় নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করছে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হলে নির্বাচন কমিশন থেকে উল্লেখিত সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সবগুলো ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদের অভিযোগ, আগামী ৪ জুন অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য তালিকা অনুযায়ী ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেয়ায় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। এ বিষয়ে তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বাঁশখালীর সব ইউপিতে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। ষষ্ঠ ও শেষ ধাপের নির্বাচন প্রস্তুতি ॥ এবার ষষ্ঠ ও শেষ দফায় ইউপি নির্বাচনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে ইসি। আগামী শনিবার এ দফায় সারাদেশে ৭১৩ ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। এ দফায় মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে তিনমাসব্যাপী ইউপি নির্বাচন উৎসব। তবে জানা গেছে, ইসির পক্ষ থেকে এখনো এ দফায় নির্বাচন সহিংসতামুক্ত করতে কোন বিশেষ পরিকল্পনা নেই। ষষ্ঠ ও শেষ দফায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ কারণে এ দফায় নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে। ষষ্ঠ দফায় ৭২৭ ইউপিতে নির্বাচনের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বুধবার চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১৪ ইউপির ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। ফলে ভোট গ্রহণ হবে ৭১৩ ইউপিতে। এ দফায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রতি তিনজনের একজন প্রার্থী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। অতীতের নির্বাচনগুলোতে মূলত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। সংশ্লিষ্টরা বলছে, অধিক পরিমাণ বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় এ দফায় নির্বাচন সহিংসতামুক্ত পরিবেশে করা সম্ভব হবে না। এ কারণে আগে থেকেই কঠোর নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এদিকে ষষ্ঠ দফায় নির্বাচন সম্পন্ন করতেও কমিশনের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ভোটার ব্যালট পেপার, বাক্সসহ নির্বাচন সরঞ্জাম ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছানো হয়েছে আগামী শুক্রবার রাতে তা স্ব স্ব কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। এ দফায় নির্বচনী এলাকায় আজ থেকে নামেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া আজ মধ্যরাতেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার। ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় যান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। যা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। বাজেটে ইসির ১০৮ কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি ॥ আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হবে আজ। এদিকে ইসির পক্ষ থেকে আগামী এক বছরের নির্বাচন পরিচালনাসহ বিভিন্ন আর্থিক ব্যয় মেটাতে বাজেটে ১০৮ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে বরাদ্দ চেয়ে ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে বলে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব মোঃ এনামুল হক জানিয়েছেন।
×