ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

গুমের শিকার ছেলেকে ফেরত দাবি

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৫ মে ২০১৬

গুমের শিকার ছেলেকে ফেরত দাবি

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ গুমের শিকার একমাত্র কর্মক্ষম সন্তানকে ফেরত চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে পঞ্চগড়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রুহুল আমিন নামে গরিব হতভাগ্য অসহায় বাবা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় পঞ্চগড় প্রেসক্লাব হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় রুহুল আমিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১২ সালের ৫ মার্চ ঢাকার ফার্মগেট এলাকা থেকে তার ছেলে ঈমাম হাসান ওরফে বাদলকে (২৪) অপহরণ করা হয়। ওইদিনই সে মোবাইল ফোনে তেজগাঁও র‌্যাব-২ এর কাছে ছেলে অপহরণের অভিযোগ জানায়। অপহরণের পরের দিন র‌্যাব সদস্যরা জাহিদ ও বাবুল নামে দুই অপহরণকারীকে আটক করে এবং অপহৃত বাদলকে উদ্ধার করে। অপহরণকারীরা বাদলের পূর্ব পরিচিত ছিল। এ জন্য বাদলকে র‌্যাবের উদ্ধারের ঘটনাটি অপহরণকারীরাই মোবাইল ফোনে রুহুল আমিনকে জানায়। মোবাইল ফোনে ছেলে উদ্ধারের খবর পেয়ে ১৩ মার্চ সে ঢাকায় র‌্যাব-২ অফিসে যান। র‌্যাবের পরামর্শে তেজগাঁও থানায় একটি জিডিও করেন। (জিডি নং-৭৪০, ১৩ মার্চ ২০১২)। এরপর র‌্যাব-২ এর ডিউটি অফিসার এসআই রাজু একটি আবেদনে স্বাক্ষর নিয়ে তার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন এবং টাকা লেনদেনের বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। এ সময় রুহুল আমিন র‌্যাবের পোশাক পরিহিত এসআই রাজুকে নগদ ৪০ হাজার টাকা প্রদান করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিন জানায়, প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে ছেলের জন্য ঢাকার মানবাধিকার কমিশন, র‌্যাব ক্যাম্প, থানা, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা অফিসসহ বিভিন্ন দফতরে ঘুরছি। আজ পর্যন্ত ছেলের কোন হদিস পাইনি। র‌্যাব আমার ছেলেকে গুম করেছে। সংসারের একমাত্র কর্মক্ষম ছেলেকে হারিয়ে আমরা অনাহারে অর্ধহারে দিনযাপন করছি। আমার আরেক ছেলে ঈমাম হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে বর্তমানে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিসাধীন। আমি হকারি করে সংসার চালাতাম। বয়সের কারণে এখন আর পারি না। এক পর্যায়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন রুহুল আমিন। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতেই কেঁদে ফেলেন গুমের শিকার বাদলের মা মিনারা বেগমও। তিনি বলেন, ছেলের আয় দিয়েই আমাদের সংসার চলত। এখন আমরা একবেলাও ঠিকমতো খেতে পারি না। ছেলে ফেরত আসবে এই আশায় বুক বেঁধে বেঁচে আছি। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
×