ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বীপ হস্তান্তর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মিসরে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ১৭ এপ্রিল ২০১৬

দ্বীপ হস্তান্তর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মিসরে বিক্ষোভ

মিসরের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি দ্বীপ সৌদি আরবের কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনার প্রতিবাদে শুক্রবার কায়রোয় বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। ওই পরিকল্পনার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ কায়রোর রাস্তায় নেমে মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসির পদত্যাগ দাবি করেন। খবর বিবিসির। সৌদি বাদশা সালমানের মিসর সফরকালে সিসি নির্বাহী ক্ষমতাবলে লোহিত সাগরে মিসরের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি দ্বীপ সৌদি আরবকে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেছে নেন দেশটির নাগরিকেরা। আইনীভাবেও সরকারের এ পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি রাস্তায় নেমেও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ মিসরীয়রা। ওই সিদ্ধান্তের পক্ষে মিসরীয় সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, মিসর ও সৌদি আরব জলসীমা চুক্তি সই করেছে এবং চুক্তি অনুযায়ী তিরান ও সানাফির দ্বীপ সৌদি জলসীমায় পড়েছে। ছয় বছরের মধ্যে দ্বীপ দুটি সৌদি জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। সৌদি ও মিসরীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বীপ দুটি আদতে সৌদি আরবের। ১৯৫০ সালে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ আল সউদ মিসরকে দ্বীপ দুটি দেখে রাখতে বলেছিলেন বলে এ দুটো মিসরীয় নিয়ন্ত্রণে আছে। মিসরীয় পার্লামেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা ওই চুক্তিটির এই অপ্রত্যাশিত বক্তব্যে মিসরীয়রা সন্দিহান হয়ে উঠেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেছেন, স্কুলে তাদের পড়ানো হয়েছে দ্বীপ দুটি মিসরের। প্রতিবাদকারীরা কায়রোয় ’সিসি আউট’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করে। মোহামেদ হুসেইন নামে একজন প্রকৌশলী বলেন, আমি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিবাদে নেমেছি। এটি শুধুমাত্র ওই দ্বীপগুলোর জন্য নয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কায়রো ও আলেকজান্দ্রিয়ায় অন্ততপক্ষে ৮০ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠ মিত্র মিসরের পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করবে। দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ ও ইসলামপন্থী উভয় পক্ষই জনগণের প্রতি দ্বীপ দুটি হস্তান্তর পরিকল্পনার প্রতিবাদে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। ২০১১ সালের এক গণঅভ্যুত্থানে দেশটিকে ৩০ বছর ধরে শাসন করে আসা একনায়ক হোসনি মোবারকের পতন হয়। তারপর থেকে অর্থনীতির গতি ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে মিসরকে। মোবারকের পতনের পর মিসরের ইতিহাসের প্রথম অবাধ, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে ইসলামপন্থী মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রার্থী মুহাম্মদ মুরসি জয়লাভ করে প্রেসিডেন্ট হন। কিন্তু ২০১৩ সালে গণঅসন্তোষের সুযোগে দেশটির সেনাবাহিনী মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর পরপরই মুসলিম ব্রাদারহুড বিরোধী সৌদি আরব মিসরকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়। মুরসিকে ক্ষমতা থেকে সরানোয় নেতৃত্ব দেয়া তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসিই এখন মিসরের প্রেসিডেন্ট।
×