ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা

জঙ্গীবাদ সন্ত্রাসবাদের গণতন্ত্র চান খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ০৫:২২, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

জঙ্গীবাদ সন্ত্রাসবাদের গণতন্ত্র চান খালেদা জিয়া

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা বলেছেন, ঢাকায় পাকিস্তানের দূতাবাস এখন ষড়যন্ত্রের কাশিমবাজার কুটিরে পরিণত হয়েছে। আর পাকিস্তানের এজেন্ট হয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন খালেদা জিয়া। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখার বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। বিএনপি নেত্রী জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের গণতন্ত্র চান। কিন্তু এমন গণতন্ত্র দেশে কখনও আসবে না। তারা পাকিস্তানের কাছ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ আদায়, শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের নাগরিকত্ব বাতিল এবং জঙ্গীবাদের অর্থের যোগানদাতা সকল ব্যাংক-বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানান। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ভুল করে নয়, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে এবং বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জেনেশুনেই মাহফুজ আনাম তার পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে আর কেউ গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী এমন ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেজন্য মাহফুজ আনামদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করা উচিত। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিতে বুধবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সরকারী দলের মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আবদুল মান্নান, অধ্যাপক আলী আশরাফ, ড. হাছান মাহমুদ, মনিরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। আলোচনায় অংশ নিয়ে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, খালেদা জিয়ার চোখে ছানি পড়েছে বলেই উনি দেশের উন্নয়ন দেখতে পান না। খালেদা জিয়া জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের গণতন্ত্র চান, তবে এদেশে সে ধরনের গণতন্ত্র আর আসবে না। আর কাউকে আন্দোলনের নামে মানুষকে নির্বিচারে পুড়িয়ে হত্যার সুযোগ দেয়া হবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়। এখনও পাকিস্তানের বাংলাদেশ দূতাবাসের কয়েক কর্মকর্তা জঙ্গীবাদকে উস্কে দিচ্ছে। ঢাকার দূতাবাস কাশিমবাজারের কুঠিরে পরিণত হয়েছে। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বিষয়টি আমাদের নতুন করে চিন্তা করতে হবে। তিনি পাকিস্তানের কাছে পাওয়া ৩৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, হলোকস্টের আদলে কঠোর আইন প্রণয়নের মাধ্যমে যারা জাতির পিতা কিংবা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কথা বলবে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আর যারা শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের প্রয়োজনে দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে। জঙ্গীবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, পাকিস্তানের পুরনো প্রেম খালেদা জিয়া ভুলতে পারেন না। দেশে ওনার শান্তি নেই, শান্তি ওনার পেয়ারে পাকিস্তানে। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে হানিফ বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জেনেশুনেই মাহফুজ আনাম ডেইলি স্টারে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় একটি অশুভ মহলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি যুক্ত হয়েছিলেন। সুশীল সমাজের প্রতি প্রশ্ন- মিথ্যা সংবাদ ছাপানোর পরে শেখ হাসিনাকে দীর্ঘ ১১টি মাস জেল খাটতে হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যাতে এ ধরনের ভুল করতে না পারে সেজন্য বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত। সরকারী দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ধ্বংস ও সরকারকে অকার্যকর করতেই ৯২ দিন ধরে নির্বিচারে মানুষ চালিয়েছেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। বিএনপি এমন একটি দল যার ঘোষণাপত্র নেই, তিন পাতার গঠনতন্ত্র। জন্মলগ্ন থেকেই এ দলটি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। সাবেকমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, একজন মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ, সরকারী কর্মকর্তা ভুল করলে জেলে যেতে হয়। আর ডেইলি স্টার সম্পাদক রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করলেন, আমাদের ন্যাংটা করা হলো- তার কিছু হবে না, এটা হতে পারে না। এমন আইন থাকতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ ছাপানোর দায় স্বীকার করেছেন মাহফুজ আনাম। কিন্তু বিবিসি সম্পাদকের মতো সাহস দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেননি। তথ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব, হলুদ সাংবাদিকতা থেকে নাগরিকদের রক্ষার জন্য নাগরিক সুরক্ষা আইন করা হোক।
×